বায়ার্ন মিউনিখ তাদের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফি ধরে রাখার ব্যাপারে আরো খানিকটা এগিয়ে গেল। গত বুধবার রাতে ইংলিশ ক্লাব আর্সেনালের মাঠে স্বাগতিকদের বিরুদ্ধে ২-০ গোলে জিতে কার্যত শেষ আটে ওঠা নিশ্চিত প্রায় করে রাখলো কোচ পেপ গার্দিওলার অধীনে থাকা জার্মান চ্যাম্পিয়নরা। আর্সেনালকে অবশ্য শেষ ৩৩ মিনিট ১০ জন নিয়ে খেলতে হয়েছিল। তবে গেল মৌসুমের মতো এবারও বায়ার্ন মিউনিখের কাছে হেরেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্ব থেকে বিদায়ের পথে হাঁটছে আর্সেনাল।
বুধবার রাতে শেষ ষোলোর অন্য ম্যাচে এসি মিলানের মাঠে দিয়েগো কস্তার একমাত্র গোলে জিতেছে আতলেতিকো মাদ্রিদ।
আর্সেনাল নিজেদের মাঠ এমিরেটস স্টেডিয়ামে প্রতিপক্ষের শ্রেয়তর ফুটবলের পাশাপাশি সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে না পারার মাশুল দেয়। এমনিতে অবশ্য খেলাটি নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল গার্দিওয়ার শিষ্যরাই। গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর টনি ক্রুস ও টমাস মুলারের গোলে অনায়াস জয় নিয়েই ফেরে ব্যাভারিয়ানরা। ক্রুস ৫৪ ও মুলার ৮৮ মিনিটে গোল দুটি করেন।
অথচ মেসুত ওজিল খেলার নবম মিনিটে পেনাল্টি নিয়েও তা থেকে গোল করতে ব্যর্থ হয়ে খেলার সেরা সুযোগটি হারান। এ গোলটি পেলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এ লড়াইটিতে ভিন্ন চিত্রও দেখা যেতে পারতো।
জেরোমে বোয়েটাং ওজিলকে ফাউল করায় পেনাল্টির নির্দেশ দেন রেফারি নিকোলা রিজ্জোলি। কিন্তু ওজিলের শট ঠেকিয়ে দেন তারই ছোট বেলার বন্ধু গোলরক্ষক ম্যানুয়েল ন্যুয়ের। মড়ার উপর খাড়ার ঘায়ের মতো বিরতির আগে জার্মান দলটির আরিয়েন রবেনকে ফাউল করে লালকার্ড দেখেন আর্সেনাল গোলরক্ষক উজচিয়েখ সেজনি। তবে এ পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন বায়ার্নের ডেভিড আলাবাও; বল লাগে গোলপোস্টে।
দ্বিতীয়ার্ধে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপাধারীদের কৌশলের পাশাপাশি সংখ্যাধিক্যের কারণে পেরে উঠেনি দশজনে নেমে আসা আর্সেনাল। ৯০ মিনিটের পরিসংখ্যানও তাই জানান দেয়। জার্মান জায়ান্টদের ফুটবলাররা নিজেদের মধ্যে ৮৬৩ বার বল দেয়া নেয়া করেছে। এর মধ্যে ৯৫ ভাগই ছিল সফল। তার ওপর আবার ৭৮.৮ শতাংশ সময়ই বল দখলে রেখেছিল অতিথি ফুটবলাররা। আর্সেনালের পাসের সংখ্যা হলো ২২২টি। এর মধ্যে সফল পাসের পরিমাণ ছিল ৭১.২ শতাংশ। দ্বিতীয়ার্ধের খেলায় স্বাগতিকদের কেবল ১২ শতাংশ সময় বল নিয়ন্ত্রণে ছিল।
বার্সেলোনা খ্যাত গার্দিওলা এ মৌসুমেই ব্যাভারিয়ান দলটির দায়িত্ব নিলেও, বায়ার্ন অনেক দিন ধরেই দুর্ধর্ষ ফুটবল খেলছে। বিবিসি অনলাইন জানাচ্ছে ২০১২ সালের আগস্ট থেকে বায়ার্ন মিউনিখ বুন্দেশলিগায় ৫৫ ম্যাচ খেলে ৪৮টি জিতেছে। হেরেছে কেবল একবার। এ খেলাগুলোয় গোল করেছে ১৫৫ বার। তাদের ইউরোপীয় ফর্মও একই রকম। একই সময়ে ২০ খেলায় ১৬টিতে জয় আদায়ের পাশাপাশি গেল মে মাসে ইংল্যান্ডের ওয়েম্বলিতে বুন্দেশলিগারই ক্লাব বরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ তুলে নেয়।
এ রাতের খেলায় বিরতির পর পরই ২০ গজ দূর থেকে নেয়া চমত্কার শটে বায়ার্নকে এগিয়ে দেন পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা ক্রুস। মুলারের জয় নিশ্চিত করা গোলটি আসে খেলা শেষ হওয়ার দুই মিনিট আগে।
গতবার দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রথম লেগে ঘরের মাঠে ৩-১ গোলে হারলেও ফিরতি লেগে বায়ার্নের মাঠে ২-০ গোলে জিতেছিল আর্সেনাল। তবে গোল ব্যবধান সমান হওয়ায় প্রতিপক্ষের মাঠে বেশি গোল করার সুবাদে আর্সেনালকে পেছনে ফেলে কোয়ার্টার-ফাইনালে যেতে সমস্যা হয়নি বায়ার্নের। এবার তার চাইতে ভাল কিছু করতে হলে বায়ার্নের মাঠে অসাধ্য সাধন করতে হবে কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গারের দলকে।