সবাই সব বিষয়ে সমান দক্ষ হয় না। কেউ এক বিষয়ে ভালো, তো অন্য বিষয়ে দুর্বল। এক্ষেত্রে গ্রুপ স্টাডি বা সবাই মিলে পড়াশোনা ম্যাজিকের মতো ফল দেয়। যে বিষয়গুলো একসময় দুর্বোধ্য মনে হতো, আলোচনার মাধ্যমে সেই বিষয়টিই একদম সহজ হয়ে যায়। এই গ্রুপ স্টাডি অন্যরকম মাত্রা যোগ করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সমন্বয়ে এ ক্যাম্পাসে গড়ে উঠেছে স্টাডি সার্কেল।
এ প্রসঙ্গে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুনর রশীদ খান বলেন, 'গ্রুপ স্টাডি অনেকটা টিমওয়ার্কের মতো। কয়েকজন মিলে একসঙ্গে পড়াশোনা করাকেই বলা হয় গ্রুপ স্টাডি। যে যে বিষয়ে ভালো, সে সে বিষয়ে আলোচনা করে। আর এই আলোচনার মাধ্যমে কঠিন বিষয়গুলোও অনেকের কাছে সহজ হয়ে যায়।'
তিনি আরো বলেন, 'পাঠ্যবইয়ের পড়া ছাড়াও নোট তৈরি, অ্যাসাইনমেন্ট প্রস্তুত করা এসব কাজও সবাই মিলে একসঙ্গে করতে পারে। গ্রুপ স্টাডির জন্য সাধারণত ক্যাম্পাস, লাইব্রেরি বা অনেক সময় শ্রেণিকক্ষও বেছে নেয়া যায়।'
গ্রুপ স্টাডির মাধ্যমে নিজেকে বদলে ফেলা যায় উল্লেখ করে প্রফেসর ড. হারুনর রশীদ খান বলেন, 'অনেক ছাত্র আছে পড়াশোনায় দুর্বল। গ্রুপ স্টাডির মাধ্যমে দুর্বল ছাত্ররা ভালো ছাত্রদের সংস্পর্শে এসে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে। পড়াশোনায় মন না থাকলে গ্রুপ স্টাডির মাধ্যমে সবার সান্নিধ্যে এসে পড়ায় মনোযোগও চলে আসে। সবাই মিলে পড়াশোনা করলে সবার মধ্যে আত্মবিশ্বাসও চলে আসে। এই আত্মবিশ্বাস ভালো ফলাফল করতে সাহায্য করে।'
উপাচার্য বলেন, 'বইয়ের কোনো তত্ত্ব বা সূত্র মাথায় ঢুকছে না। ক্লাসে স্যারের লেকচার বুঝতে পারোনি। কিংবা শ্রেণিকক্ষের পেছনের দিকে বসার কারণে স্যারের লেকচার পুরোপুরি শুনতেও পাওনি। ঘাবড়ানোর কিছু থাকে না, যদি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত হয় এমন একটি টিম, যার সদস্যরা সবাই মিলে একসঙ্গে পড়াশোনা করে। ক্লাস শেষে যদি সহপাঠী ও শিক্ষকদের সঙ্গে সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করা যায়, তবে আর সমস্যা থাকে না।'
তিনি আরো বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে রেফারেন্স বইয়ের কোনো সীমারেখা থাকে না। এত বই খুঁজে বের করা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি সময়সাপেক্ষ। অনেক সময় ইন্টারনেটেও সার্চ করতে হয় বাড়তি তথ্যের জন্য। এ ছাড়া অ্যাসাইনমেন্ট বা নোট তৈরি করতে দেশি-বিদেশি পত্র-পত্রিকা, ম্যাগাজিন, গবেষণাপত্র প্রভৃতিও ঘাটতে হয়। একা কারো পক্ষেই একসঙ্গে এত কাজ করা কষ্টকর। এসব কাজ যদি স্টাডি গ্রুপের সদস্যদের মাঝে বণ্টন করে দেয়া যায়, তবে অনেক সহজ হয়ে যায়।'
জানা গেছে, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুনর রশীদ খান। কাজের গতি বাড়াতে তিনি বেস্ট শিক্ষক অ্যাওয়ার্ড, বেস্ট কর্মকর্তা অ্যাওয়ার্ড, বেস্ট কর্মচারি অ্যাওয়ার্ডের প্রচলন করেছেন। এর পাশাপাশি প্রতি ক্লাসে প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় অবস্থান অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে।