অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির মূল কারণ কুইক রেন্টাল বিদ্যুত্
-------ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন
ইত্তেফাক রিপোর্ট
কুমিল্লার মুরাদনগর থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন বলেছেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দল জয়ী হয়নি। ওই নির্বাচনে সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদী ও স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি পরাজিত হয়েছে। এই বিজয় ধরে রাখার দায়িত্ব আমাদের সবার। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন। একই আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা-৬ আসনের জাতীয় পার্টির (জাপা) এমপি ও দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বিএনপির উদ্দেশে বলেছেন, 'নির্বাচন হয়েছে পাঁচ বছরের জন্য। এখন আবার কিসের নির্বাচন? আমাদেরকে বোমাবাজির ও আন্দোলনের হুমকি দেবেন না। জাপাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়েছেন, ভালো কথা, ভিমরুলের চাকে ঢিল ছুঁড়লে বাঁচবেন, কিন্তু আওয়ামী লীগের চাকে ঢিল মারলে বাঁচতে পারবেন না।'
ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন বলেন, বিএনপি সরকারের আমলে বিদ্যুত্ খাতে কোনো উন্নয়ন হয়নি। তখন এই সংসদেও মোমবাতি জ্বালাতে হয়েছিল। শেখ হাসিনা সেই অন্ধকার থেকে দেশকে আলোতে নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুত্ উত্পাদন কেন্দ্র নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলছেন। কিন্তু অর্থনীতির সর্বক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধির মূল কারণ এই রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুেকন্দ্র। এছাড়া এই খাতে বিগত মহাজোট সরকারের আমলে ৭৫ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে।
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, মোবাইল ও তথ্য-প্রযুক্তি খাতে দেশে নিরব বিপ্লব ঘটে গেছে। বৈদেশিক রিজার্ভের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় এখন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে। বিদেশিরা বলছেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের সম্ভাবনাময় পাঁচটি দেশের একটি। দেশের রপ্তানি আয় বেড়েছে। অর্থনীতির প্রতিটি সূচক উর্ধ্বমুখী। বাংলাদেশের উন্নয়নের এই রহস্য এখন অর্থনীতিবিদদের জন্য গবেষণার বিষয়।
হারুন আরও বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে হলে ২০১৪-১৫ অর্থবছরের মধ্যে জিডিপি ১০ শতাংশ অর্জন করতে হবে।
জাপার ফিরোজ রশীদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধে আমরা অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছি। কাজেই বিএনপিকে বলবো- আমাদের বোমাবাজির ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশকে একটি গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছিল। এটা কোনো রাজনীতি হতে পারে না।
কাজী ফিরোজ বলেন, একজন সংসদ সদস্য হিসেবে আমি জানি না বিরোধী দলের ভূমিকা কি? এতদিন দেখেছি-বিরোধী দল মানে তারা সংসদে আসবেন, হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করবেন, সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নেবেন, এরপর স্পিকারকে গালাগালি করে চলে যাবেন। তারপর আবার ৯০ দিন পর সংসদে আসবেন। ন্যাম ভবনের ফ্ল্যাট, অর্থকড়ি, বিদেশ সফরসহ যত সুযোগ-সুবিধা আছে, সব নেবেন, কিন্তু সংসদে আসবেন না। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়কের কনসেপ্ট জাপা আগেও মানেনি, এখনও মানে না।
রাষ্ট্রপতির ভাষণের ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ বলেন, বিএনপি আন্দোলনের নামে দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করেছিল। তাতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। বিএনপিকে বলবো, পাঁচ বছর পর একাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিন।
ঢাকা-৭ আসনের স্বতন্ত্র সদস্য হাজী মো. সেলিম বলেন, দেশে এখন লোডশেডিং দেখছি না। আগে বিদ্যুত্ গেলে আসতো না। এখন আসে।
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের মৃণাল কান্তি দাস বলেন, খালেদা জিয়া ও তার দুই পুত্রের বিরুদ্ধে থাকা দুই ডজন মামলার অগ্রগতি না থাকায় মানুষ ক্ষুব্ধ।
সংরক্ষিত আসনের সদস্য এডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি বলেন, বিএনপি-জামায়াত দেশে মিথ্যা ও অপ্রচারের রাজনীতি করছে।