শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, পরিবেশবান্ধব সবুজ শিল্পায়নের লক্ষ্য অর্জনে নবায়নযোগ্য বিকল্প জ্বালানি উত্পাদনের সক্ষমতা বাড়ানো বর্তমানে সময়ের অনিবার্য দাবিতে পরিণত হয়েছে। তাই এ অবস্থায় বিকল্প জ্বালানির উত্স থেকে বিদ্যুত্ উত্পাদনে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে হবে। আর এটি হবে একটি উত্তম ও লাভজনক বিনিয়োগ। তিনি আরো বলেন, দেশে উত্পাদিত মোট বিদ্যুতের ২৭ শতাংশই নষ্ট হয়ে যায়। সরবরাহ ব্যবস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে এ বিদ্যুত্ নষ্ট হয়। বিদ্যুত্ উত্পাদনে অপচয় বন্ধ করতে হবে। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড (বিএবি) এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এর যৌথ উদ্যোগে বিশ্ব অ্যাক্রেডিটেশন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত 'অ্যাক্রেডিটেশনঃ শক্তির সংস্থানের নিশ্চয়তা' শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। বিএবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দিন আব্দুল্লাহ, ডিসিসিআই'র সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহান, বিএবি'র মহাপরিচালক মো. আবু আবদুল্লাহ প্রমুখ।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গত পাঁচ বছরে বিদ্যুত্ উত্পাদন ৩ হাজার মেগাওয়াট থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করেছে। একই সময়ে মাথাপিছু বিদ্যুত্ উত্পাদন ২২০ কিলোওয়াট থেকে বেড়ে ৩২১ কিলোওয়াট হয়েছে। এরপরও বর্তমানে ১০ হাজার মেগাওয়াট দিয়ে জনগণের বিদ্যুতের চাহিদা পুরোপুরি মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য বিকল্প জ্বালানির উত্স থেকে বিদ্যুত্ উত্পাদন করা দরকার। তিনি বলেন, বিদ্যুত্ শক্তি পরিমাপের জন্য বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিল্প কারখানা, অফিস আদালত, হাসপাতালসহ সকল স্থানে স্মার্ট এনার্জি মিটার ব্যবহার করা প্রয়োজন। এটি ব্যবহার করলে সিস্টেম লস কমে আসবে। অ্যাক্রেডিটেড বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে একদিকে বিদ্যুত্ সাশ্রয় হবে, অন্যদিকে দুর্ঘটনাও এড়ানো সম্ভব হবে।
শিল্প সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দিন আবদুল্লাহ বলেন, মুক্ত বাণিজ্যের এ যুগে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য পণ্যের অ্যাক্রেডিটেশনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডিসিসিআই সভাপতি মোহাম্মাদ শাহজাহান খান বলেন, অ্যাক্রেডিটেশনের অভাবে এতদিন বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলো বিশ্ব বাজারে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং এদের উত্পাদিত পণ্য বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছে। তাই সারা বিশ্বে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত করার জন্য অ্যাক্রেডিটেশনের উদ্যোগকে আরো জোরদার করতে হবে।
বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড (বিএবি)'র মহাপরিচালক মো. আবু আব্দুল্লাহ জানান, এ পর্যন্ত অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড ১৫টি প্রতিষ্ঠানকে অ্যাক্রেডিটেশন সনদ প্রদান করছে এবং বেশ কিছু আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থ, ইলেকট্রনিক্স এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. জাহিদ হাসান মাহমুদ সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।