গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীর বিভিন্ন স্থানে উদ্বেগজনক হারে চাঁদাবাজি বেড়েই চলেছে। ফুটপাতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে শীর্ষ পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা পর্যন্ত চাঁদাবাজদের কবল থেকে রেহাই পাচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্টেশন রোডের এক ফুটপাতের ব্যবসায়ী ছাড়াও টঙ্গী বাজার, চেরাগ, হোসেন মার্কেটের আরও তিন ব্যবসায়ী জানান, তাদের প্রতিদিন স্থানীয় নেতা কর্মীদেরকে দোকান প্রতি টাকা দিতে হয়। ঈদের কারণে দৈনিক চাঁদার হারও বাড়িয়ে দিয়েছে তারা। এছাড়া বারো হাজার টাকা দিয়ে শুধু রমজান মাসের জন্য ৪৫ ইঞ্চি ফুটপাতের পজেশন কিনতে হচ্ছে। এর পর আবার সন্ত্রাসী দিয়ে ঈদের সময় ঈদ কার্ড দিয়ে তাদের কাছ থেকে অধিকহারে টাকা আদায় করা হচ্ছে। এতে করে অতি কষ্টে তারা যা আয় করেন চাঁদা দেয়ার পর সামান্য উদ্বৃত্ত যা থাকে তা দিয়ে তাদের সংসার চলে না। সরেজমিনে দেখা যায়, টঙ্গীর বিভিন্ন মার্কেট, স্টেশন রোড, চেরাগ আলী মার্কেট, কলেজ গেট মার্কেট, হোসেন মার্কেট, এরশাদ নগর বাস্তুহারাসহ এলাকার বেশিরভাগ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের বরাবরে ইফতারের কার্ড দিয়ে সন্ত্রাসীরা চাঁদা দেয়ার নির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করে দিয়েছে। নগদ টাকার পাশাপাশি চাঁদা হিসেবে জামা-কাপড়ও দাবি করছে।
কার্ডের নিচে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী পরিচয় দিয়ে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। এব্যাপারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান (মতি) জানান, এরা সবাই সন্ত্রাসী, আওয়ামী লীগের কোন অঙ্গ সংগঠনের সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই। কাঁচাবাজার, পরিবহন, মাছ বাজার, মার্কেট সর্বত্র চলছে তাদের নীরব চাঁদাবাজি।
এদিকে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, পুলিশের শীর্ষ পর্যায় থেকে চাঁদাবাজি প্রতিরোধে প্রতিটি জেলায় বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করার কথা বলা হলেও টঙ্গীতে এর প্রতিফলন নেই।
মৌসুমি চাঁদাবাজরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট অঙ্কের চাঁদা দাবি করে সালাম পৌঁছে দিচ্ছে স্থানীয় শীর্ষ সন্ত্রাসীদের দিয়ে। এতে করে ব্যবসায়ীরা প্রাণের ভয়ে তাদের দাবিকৃত চাঁদা পৌঁছে দিচ্ছে চাঁদাবাজদের হাতে। হাজী বিপণী বিতানের এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চাঁদা না দিলে চাঁদাবাজরা হত্যা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করার মত ঘটনা ঘটাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এবিষয়ে টঙ্গী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, চাঁদাবাজি ঠেকাতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তালিকাভুক্ত চাঁদাবাজদের ধরার চেষ্টা চলছে। চাঁদাবাজির সঙ্গে কারো জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।