রাস্তায় যানজট। ট্রাফিক পুলিশের ছুটাছুটি। নিরাপত্তারক্ষীদের বাঁশি বেজেই চলেছে। মানুষ আসছে সে াতের মতো। এই হলো ঈদের আগে গভীর রাতে রাজধানীর বিপণিবিতানগুলোর দৃশ্য। ঈদ নিকটে আসার সঙ্গে সঙ্গে ব্যস্ততাও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। রাজধানীর নিউমার্কেট, গাউছিয়া, খিলগাঁও, মৌচাক, মালিবাগ, শান্তিনগর, বেইলি রোড, মিরপুর বেনারসিপল্লী, বসুন্ধরা শপিং মলসহ বিভিন্ন বিপণিবিতানে উত্সবের আমেজ।
ক্রেতারা বলছেন, দিনের বেলা অফিস-আদালত থাকে, তাই রাতই কেনাকাটার জন্য ভালো। অনেকে আবার যানজট থেকে বাঁচতে রাতে বের হন। বিক্রেতারা বলেছেন, যতক্ষণ ক্রেতা আছেন, ততক্ষণ তারা আছেন। ঈদের আগে পর্যন্ত এভাবেই থাকবেন।
রাজধানীবাসীর কেনাকাটার অন্যতম প্রিয় জায়গা নিউমার্কেট ও গাউছিয়া। গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার পরও নিউমার্কেট, গাউছিয়া, নূর ম্যানশন, চাঁদনী চক, ইসমাইল ম্যানশন ও ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটে বহু মানুষের উপস্থিতি দেখা যায়। উচ্চ থেকে নিম্নবিত্ত সবাই কেনাকাটা করছেন কমবেশি। দোকানিরা জানান, ২০ রমজান থেকেই ক্রেতাদের এই ভিড়। চলবে ঈদ পর্যন্ত।
মিরপুর বেনারসিপল্লীও অনেক রাত পর্যন্ত জমজমাট। গোটা পল্লী বর্ণিল আলোকমালায় সেজেছে। ধানমন্ডি থেকে শাড়ি কিনতে এসেছেন রোকেয়া খানম। সঙ্গে স্বামী মো: হানিফ। রাতে বেনারসিপল্লীতে এসেছেন কেন এমন প্রশ্নে রোকেয়া বলেন, সারা দিন রোজা রাখায় ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তাছাড়া রয়েছে যানজট। এসব এড়াতে রাতে চলে এসেছি শাড়ি কিনতে।
মিরপুর বেনারসিপল্লীর জামশেদ আলম নামের এক বিক্রেতা বলেন, সারা দেশ থেকেই ক্রেতা আসছেন এখানে। অন্য সময় রাত আটটা পর্যন্ত বেচাকেনা চলে। তবে এখন রাত ১১টা পার হয়ে যায়। পরিচিত ক্রেতা এলে রাত একটাও বেজে যায়। চাঁদরাতে তিনটা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখা হবে বলে তিনি জানান।
মিরপুর ১০ নম্বর গোল চক্কর থেকে পশ্চিমে যেতে স্টেডিয়ামের বিপরীত পাশের দোকানপাট বেশ রাত পর্যন্ত খোলা থাকছে। রাস্তার দুই পাশে নামিদামি ব্র্যান্ডের পাশাপাশি আছে স্থানীয় কিছু বুটিক ও জামাকাপড়ের দোকান। রাত প্রায় ১১টা পর্যন্ত ফুটপাতও সরগরম। সব মিলে এখানে নানা শ্রেণির ক্রেতার ভিড়। ঈদ সামনে রেখে সারা দিনই চলে বিকিকিনি। তবে জমে ওঠে ইফতারের পর। রাত দশটা-সাড়ে দশটা পর্যন্ত বেশ জমজমাট থাকে। এর পর থেকে ভিড় কমতে থাকে। ১১টা থেকে দোকানগুলো বন্ধ হতে থাকে।
দিনের তুলনায় সন্ধ্যায় মৌচাক, মালিবাগ, শান্তিনগর ও বেইলি রোডে কেনাকাটা বাড়ে বলে জানিয়েছেন দোকানিরা। খিলগাঁও তালতলা সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী জাফর ইমাম বলেন, সন্ধ্যার পর এই মার্কেটে ঈদের বাজার বেশি জমে। তিনি জানান, সারা দিন তার দোকানে যা কেনাবেচা হয়, সন্ধ্যার পর তার চেয়ে বেশি হয়। প্রতিদিন রাত ১১টা পর্যন্ত এই মার্কেটে কেনাবেচা চলে বলে জানান তিনি।
তবে বসুন্ধরা শপিং মলের হাসান আকবর নামের এক দোকানি জানান, এখন তারা রাত একটা-দুইটা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখছেন। তার এখানে দিনেই বেচাকেনা ভালো। তিনি বলেন, রাতে ঘোরাঘুরি বেশি, কেনাকাটা কম।