মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান থেকে শুরু করে নাসির হোসেন, মুমিনুল হক; জাতীয় দলের সিনিয়র-জুনিয়র, যেদিকেই চোখ বোলান না কেন, একটা মিল অবশ্যই খুঁজে পাবেন—এরা সবাই সাবেক অনূর্ধ্ব-১৯ তারকা!
হ্যা, গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রধান চালিকাশক্তি হয়ে আছে এই বয়সভিত্তিক দল, বিশেষ করে অনূর্ধ্ব-১৯ দল থেকে আসা তারকারা। আর এই তারকাদের নজর কাড়ার আসর, নিজেদের চেনার আসর মূলত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ শুধু বাংলাদেশকে নয়, পৃথিবীর সব জাতীয় দলকেই উপহার দিয়ে আসছে পরবর্তীকালের ডাকসাইটে সব তারকা—ব্রায়ান লারা, গ্রায়েম স্মিথ, ইনজামাম-উল হক, যুবরাজ সিং থেকে শুরু করে অ্যাঞ্জোলো ম্যাথুস কিংবা রোহিত শর্মা!
আরেকটি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ যখন দুয়ারে দাঁড়িয়ে তখন বাংলাদেশ আরেকবার নিশ্চয়ই রোমাঞ্চিত হতে পারে, এবার কাকে কাকে পাবে, এই ভেবে। বিশ্বকাপ শেষ পর্যন্ত কোন কোন তারকাকে উপহার দেবে, সেটা সময় বলবে। তবে গত শনিবার ঘোষিত ২০১৪ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সূচী ও গ্রুপিং দেখে বাংলাদেশের সেই যুব দলের খেলোয়াড় বা কর্মকর্তারা আশাবাদী—এবার অন্তত দলীয় বিচারে নিজেদের সেরা ফলটা নিয়ে আসা সম্ভব সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে।
কি সেই সেরা ফলাফল? কমপক্ষে সেরা চারে প্রবেশ করা!
শনিবার ঘোষিত গ্রুপিং অনুযায়ী বাংলাদেশকে প্রথম রাউন্ডে খেলতে হবে অস্ট্রেলিয়া, আফগানিস্তান ও নামিবিয়ার বিপক্ষে। বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ১৪ ফেব্রুয়ারি, আফগানিস্তানের বিপক্ষে।
যুব বিশ্বকাপ পর্যায়ে বাংলাদেশ সবসময়ই বেশ শক্তিশালী দল। ২০০৬ সাল থেকে এক /দুই বার আশাহত করা ছাড়া বাংলাদেশ মোটামুটি ভালো ফলাফল নিয়েই ফিরেছে এই টুর্নামেন্ট থেকে। এর মধ্যে মুশফিকদের দলটিকে নিয়ে সারা বিশ্বেই একটা 'হাইপ' তৈরি হয়েছিল; যদিও তারাই তেমন কোনো সাফল্য নিয়ে ফিরতে পারেননি। সাফল্যের বিবেচনায় এখনও সেরা হয়ে আছে ২০০৬ সালের সেই মূল টুর্নামেন্টে পঞ্চম হওয়ার রেকর্ড।
এই পুরো ব্যাপারটি শুরু থেকে কাছ থেকে দেখে চলা নূরুল আবেদীন ফাহিম বলছেন, এবার সেই সাফল্যটাকে টপকালেই তারা মনে করবেন ভালো ফল এসেছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের বর্তমান গেম ডেভেলপমেন্টের ডেপুটি ম্যানেজার ফাহিম বলছেন, 'এবার যে গ্রুপ দেখছি, তাতে গ্রুপপর্ব তো আমাদের পার হতেই হবে। এটাকে লক্ষ্য বলা চলে না। আমি বলবো, নকআউট পর্ব থেকেই আসল চ্যালেঞ্জটা শুরু হবে। আমরা এই দলটাকে একসাথে নিয়ে যতদিন ধরে কাজ করছি, তাতে ২০০৬ সালের ফলাফলটাকে টপকাতে পারলে তবেই আমি ভালো ফলাফল বলবো।'
বোঝা যাচ্ছে, দেশের অভিজ্ঞ এই কোচের এবার অনেক প্রত্যাশা এই যুব ক্রিকেটারদের নিয়ে।
খেলোয়াড়দেরও নিজেদের নিয়ে প্রত্যাশা নিতান্ত কম নয়। অন্তত বর্তমান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান মোসাদ্দেক হোসেন তাই মনে করছেন। যদিও সাধারণ একটা ধারণা হল, বর্তমানে যুব দলে আগের মতো প্রতিভাধর খেলোয়াড় নেই। কিন্তু মোসাদ্দেক বলছেন, 'আমাদের এই দলটা খুবই প্রতিভাবান খেলোয়াড়ে বোঝাই। আপনি দেখবেন, এই দলের খেলোয়াড়রাই একসময় জাতীয় দল ডমিনেট করবে। আমরা এবার বিশ্বকাপে ভালো ফলাফলের লক্ষ্য নিয়েই যাবো। ঠিক কী ফল আসবে, তা তো বলা যায় না। তবে আমাদের লক্ষ্য থাকবে, কমপক্ষে সেমিফাইনাল।'
মোসাদ্দেক এই লক্ষ্য ঠিক করাটা বাস্তবানুগ বলেও মনে করছেন। তার যুক্তি, 'খেলাটা আরব আমিরাতে। এখানে আমাদের স্পিনারদের এবং ব্যাটসম্যানদের খুবই ভালো করার কথা। ফলে ভালো ফল আমরা আশা করতেই পারি।'
ভালো ফল ফাহিমও আশা করছেন। তবে ফাহিমের কাছে ফলটাই শেষ কথা নয়। এই দলটার কাছ থেকে তার আশা একটু অন্যরকম, 'আমরা এই দলটাকে টানা আবাসিক ক্যাম্পে রেখে, বিদেশি কোচ এবং সর্বাধুনিক ট্রেনিং সুবিধা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। অবশ্যই একটা লক্ষ্য বিশ্বকাপে ভালো কিছু ফল পাওয়া। তবে বড় লক্ষ্য হল, এখান থেকে কিছু কমপ্লিট ক্রিকেটার বের করে আনা। মানে এই ছেলেরা অন্তত যেন সর্বোচ্চ লেভেলে গিয়ে ফিটনেস, ফিল্ডিং বা বেসিক নিয়ে সমস্যায় না পড়ে। আশা করি, বিশ্বকাপে ভালো ফলের পাশাপাশি নিজেদের এই যোগ্যতাটাও তারা প্রমাণ করতে পারবে।'
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. নাসিম বলেছেন, 'বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হওয়া সুখবর না হলেও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে নির্বাচন করতে হচ্ছে'। আপনিও কি তাই মনে করেন?