প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া যে বিষধর সাপ বাঁচাতে ঝাঁপি মাথায় নিয়ে চলছেন, সেই নিজের পালিত সাপের ছোবলেই তার একদিন ভয়াবহ পরিণতি হবে। সাপের ঝাঁপি মাথায় নিয়ে যতই চিত্কার করুন, সাপকে বাঁচাতে পারবেন না।
গতকাল শুক্রবার রাতে গণভবনে ছাত্রলীগের ৬৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সৌজন্য সাক্ষাত্ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, একাত্তরের মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর অনেক চেষ্টা চলছে কিন্তু তাদের বাঁচানো যাবে না। কারণ জাতির আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবেই। তাদের বাঁচানোর ক্ষমতা কারোর নেই। তিনি বলেন, কিছু মানুষের সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ধারা পছন্দ হয় না। অসাংবিধানিক ধারা তাদের খুব পছন্দ। কারণ চোরা পথে, সংবিধান লংঘন করে কেউ ক্ষমতায় আসলে তাদের মূল্যায়ন হয়, গাড়িতে পতাকা পায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতাকে কখনোই ব্যবসা হিসেবে দেখে না। এ কারণে আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে দেশের উন্নয়ন হয়। আওয়ামী লীগ সব সময় ক্ষমতাকে জনগণের সেবা করার সুযোগ হিসেবে দেখে। আওয়ামী লীগের এক বছরের বড় ছাত্রলীগ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। আর আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৪৯ সালে। দেশের প্রতিটি অর্জনে ছাত্রলীগ বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছে। মিলিটারি ডিকটেটররা ছাত্র রাজনীতি কলুষিত করেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান দেশে ছাত্র রাজনীতি ধ্বংস করেন। ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে মেধাবি ছাত্রদের বিপথে নিয়ে যান। এইচএম এরশাদও একই পদাঙ্ক অনুসরণ করেন। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতেও কম করেননি। অন্যদিকে আমরা ছাত্রদের হাতে তুলে দিয়েছি কাগজ-কলম ও বই। কারণ শিক্ষিত জাতি ছাড়া কোন দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমরা নিজেদের সন্তানদেরও বলেছি, তোমাদের একটাই সম্পদ দেবো তা হলো শিক্ষা।
ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, লেখাপড়া বিসর্জন দিয়ে সংগঠন করার প্রয়োজন নেই। সোজা পথে দ্রুত বড় লোক হওয়ার চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে হবে। আদর্শ নিয়ে সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। তাহলে পেছনের দিকে তাকাতে হবে না। অর্থ সম্পদের মোহ জাগলে উন্নতি হবে না। মনে রাখতে হবে, জনগণের সেবক আমরা। এই নীতি নিয়ে চলতে হবে। ত্যাগের মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। বিএনপির এই নীতি নেই বলেই তারা ক্ষমতায় আসলে মানুষের জন্য কিছুই করতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেখেছি, ক্রাইসিসের সময় অনেকে সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এর কারণ হলো সম্পদের পিছুটান। যখন সম্পদ বড় হয়ে যায়, তখন আর সাহসী সিদ্ধান্ত নেয়া যায় না।
বর্তমান সরকারের সফলতা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজধানীবাসীকে নববর্ষের উপহার দিলাম হাতিরঝিল। মাধ্যমিক পর্যায়ে বিনামূল্যে পাঠ্যবই ১ জানুয়ারিতেই দিয়েছি। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উচ্চ শিক্ষার জন্য ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছি। দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে একাত্তরের লাখো শহীদের রক্তের ঋণ শোধ করাই আমাদের লক্ষ্য।