বিশ্ব ইজতেমার নিরাপত্তায় থাকছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ সহস্রাধিক সদস্য
আবুল খায়ের
টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে আগামীকাল শুক্রবার থেকে প্রথম পর্বের তিন দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমা শুরু হচ্ছে। এ ইজতেমার নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে ১০ সহস্রাধিক পুলিশ ও র্যাবসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। চার স্তরের এ নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে ইজতেমা ঢেকে রাখা হবে। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যেন ঘটতে না পারে সে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে। পুলিশ ও র্যাব সদর দপ্তর এবং গেয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা বিশ্ব ইজতেমার প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বের নিরাপত্তা বিষয় বিস্তারিত তথ্য জানান। গত রবিবার টঙ্গী পৌরসভার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে এক প্রস্তুতিমূলক সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দিন খান আলমগীর ইজতেমায় বিশৃঙ্খলা ঘটনোর জন্য যেন কেউ প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। র্যাব-পুলিশ ছাড়া বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা সহস্রাধিক সদস্য সাদা পোশাকে নিয়োজিত থাকবে। প্রতিটি গেটে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা তলস্নাশির দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে। আশে পাশে ও ইজতেমার স্থানে র্যাব-পুলিশের টহলও থাকছে। আকাশ পথে থাকবে র্যাবের হেলিকপ্টার যোগে টহল। র্যাবের মহাপরিচালক মোখলেছুর রহমান বলেন, ইজতেমার নিরাপত্তার পাশাপাশি সুন্দর ও সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে আট শতাধিক র্যাব সদস্যকে নিয়োজিত করা হয়েছে। পর্যবেক্ষণেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতিটি খিপ্তায় সাদা পোশাকে র্যাব সদস্য থকবে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা কিংবা বিশৃঙ্খলা করতে দেয়া হবে না বলে তিনি জানান। দ্বিতীয় পর্বেও র্যাবের পক্ষ থেকে একই ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।
বিদেশী ২৫ হাজারসহ ২০ লক্ষাধিক মুসল্লি এ ইজতেমায় অংশ নেবে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। গাজীপুর পুলিশ সুপার আব্দুল বাতেন বলেন, পুলিশের প্রায় সাড়ে সাত হাজার সদস্য ইজতেমার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছে। আজ বৃহস্পতিবার থেকেই র্যাব ও পুলিশের সদস্যরা স্ব স্ব দায়িত্ব পালন শুরু করবেন বলে তিনি জানান।
প্রথম পর্বে নিরাপদ যাতায়াত ও সুষ্ঠুভাবে যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে আগামী শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রবিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত্ম ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ ব্যবস্থার দায়িত্বে থাকছে ঢাকা মহানগর পুলিশ, ঢাকা ও গাজীপুর জেলা পুলিশ। পুলিশের আইজি হাসান মাহমুদ খন্দকার বলেন, বিশ্ব ইজতেমার দুই পর্বে মুসল্লিদের নিরাপত্তায় রাখা হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ ও র্যাবের কন্ট্রোল রুম থেকে তা পর্যবেড়্গণ করা হবে এবং ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাও ব্যবহার করা হবে বলে তিনি ইত্তেফাককে জানান।
যে সকল স্থানে মুসল্লিগণের যানবাহন পার্কিংয়ের ব্যবস্থা:
ঢাকা মহানগরের জন্য সাধারণ পার্কি-১, নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকার খালি জায়গা, সাধারণ পার্কিং-২, উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টর ও রাজউক কলেজের আশেপাশের খালি জায়গা, সিলেট বিভাগের কার পার্কিং উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে, বরিশাল বিভাগ কার পার্কিং ধৌড় ব্রিজ সংলগ্ন, ঢাকা বিভাগ কার পার্কিং সোনারগাঁও জনপদ সড়কের পূর্ব হতে পশ্চিম প্রান্ত্ম, খুলনা বিভাগ কার পার্কিং উত্তর ১০ ও ১১ নম্বর সেক্টর সড়কের উভয় পাশে, রংপুর বিভাগ প্রত্যাশা হাউজিং এলাকা, চট্টগ্রাম বিভাগ উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের গাউসুল আযম রোড ও গরিবে নেওাজ রোডের উভংয় পাশে, রাজশাহী বিভাগ কামার পাড়া হাউজিং মাঠ ও উত্তর নম্বর সেক্টরের খালি জায়গা। এছাড়া আশুলিয়া কলেজ মাঠ ও হাইস্কুল মাঠ, টঙ্গী কে-টু নেভি সিগারেট ফ্যাক্টরি সংলগ্ন, কাদেরিয়া টেক্সটাইল গেট সংলগ্ন ও মেঘনা টেক্সটাইল মিল ও টঙ্গী সফিউদ্দিন সরকার একাডেমী মাঠ এবং জয়দেবপুর চৌরাসত্মা ট্রাক স্ট্যান্ড, চান্দনান হাই স্কুল মাঠ ও ভাওয়াল বদরে আলম কলেজ মাঠে মুসল্লিদের গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
যেসব স্থানে পার্কিং করা যাবে না:মহাখালি ক্রসিং থেকে টঙ্গী হয়ে গাজীপুর চৌরাসত্মা পর্যন্ত্ম সড়কের উভয় পাশে, আব্দুলপুর থেকে বাইপাইল সড়কের উভয় পাশে এবং প্রগতি সরণীস্থ মধ্য বাড্ডা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সড়কের উভয় পাশে কোনো যানবাহন পার্কিং করা যাবে না বলে পুলিশ কর্তৃপড়্গ জানিয়েছে।