সংকট নিরসনের প্রচেষ্টা হিসেবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ 'ছাড়ের' প্রতিশ্রুতি দিলেও রাজধানী কিয়েভে সহিংসতা অব্যাহত আছে। শুক্রবার রাতভর সেখানে সংঘর্ষ হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের দেয়া আগুনে পুড়েছে সিটি সেন্টার। পুলিশের প্রতি পাথর ও পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে। পুলিশও কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে পাল্টা জবাব দিয়েছে।
শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ইয়ানুকোভিচ বিক্ষোভ বিরোধী আইন পরিবর্তন ও মন্ত্রিসভায় রদবদলের অঙ্গীকার করেন। কিন্তু বিরোধী দল প্রেসিডেন্টের এই অঙ্গীকারকে ভাঁওতাবাজি বলে আখ্যায়িত করেছে। বিরোধী নেতা ভিতালি ক্লিটসচেকো তার সমর্থকদের প্রেসিডেন্ট ইয়ানুকোভিচ পদত্যাগ না করা পর্যন্ত বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে অভিযোগ রয়েছে বিরোধীদের মধ্যে আন্দোলন নিয়ে বিভক্তি রয়েছে। তাদের একটি গ্রুপ সরকারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কথা বললেও অপর পক্ষের বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগ রয়েছে।
শুক্রবার রাস্তায় ব্যারিকেড দেয়াসহ বিক্ষোভকারীরা সরকারের একটি মন্ত্রণালয় ভবন দখল করে নেয়। সরকার-বিরোধীদের ডাকে প্রায় এক হাজার বিক্ষোভকারী সকালের দিকে কিয়েভের ইনডিপেন্ডেন্স স্কয়ার থেকে অগ্রসর হয়ে প্রেসিডেন্টের প্রশাসনিক ভবনের কাছে রাস্তায় ব্যারিকেড দিতে শুরু করে। মুখোশ পরা বিক্ষোভকারীদের কারো কারো হাতে ছিল পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া ঢাল। বিক্ষোভকারীদের অনেককেই বরফ ভরা বালুর বস্তা, গাড়ির টায়ার দিয়ে রাস্তা অবরোধ করতে দেখা যায়। বিক্ষোভকারীদের একটি দল কোনো বাধা-বিপত্তি ছাড়াই নিয়ন্ত্রণে নেয় কৃষি মন্ত্রণালয়ের মূল ভবন। মন্ত্রণালয়ের কর্মীদেরকে তাদের জিনিসপত্র নিয়ে যেতে দেয়া হলেও কাজ করতে দেয়া হয়নি। পরে শুক্রবার রাতে বিক্ষোভকারীরা কিয়েভের হুরুসেভস্কি সড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে।
সরকার দাবি করেছে, শুক্রবার বিক্ষোভকারীরা বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তাকে আটকে করে রাখে। অন্যদিকে, বিক্ষোভকারীরা দাবি করেছে, পুলিশ বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রচুর মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে। উল্লেখ্য, গত নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট ইয়ানুকোভিচ ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি অর্থনৈতিক প্রস্তাব উপেক্ষা করার পর তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। রাজপথে আন্দোলন-বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করে সরকারের একটি আইন পাস করাকে কেন্দ্র করে চলতি সপ্তাহে আবারো সহিংস বিক্ষোভ শুরু হয়।