ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের বিশ্ব ক্রিকেটকে নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পরিকল্পনা জানাজানি হবার পর ক্রিকেট বিশ্বে তোলপাড় চলছে। 'তিন কুতুবে'র অযৌক্তিক প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)সহ বিশ্বের কয়েকটি দেশের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এই যখন অবস্থা তখন যাদের নিয়ে ক্রিকেট সেই ক্রিকেটাররা কিভাবে এই ভাবনা থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রাখতে পারেন। গতকাল মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে এই নিয়ে কথা বলতে হল বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের।
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান চলমান পরিস্থিতি নিয়ে কোন কিছু না ভাবলেও তিন ধরনের ক্রিকেট খেলার প্রতিই নিজের মত দিয়েছেন, 'আমি ব্যক্তিগতভাবে এসব নিয়ে ভাবছি না। খেলোয়াড় হিসেবে আমি তিন ফর্মেটেই খেলতে চাই।'
তিন কুতুব ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ডের এই প্রস্তাব পাস হলে টেস্ট ক্রিকেট দু'ভাগে ভাগ হয়ে যাবে। এই প্রস্তাব অনুযায়ী আইসিসি র্যাংকিংয়ের শীর্ষ আটটি দেশ এফটিপি বাদ দিয়ে পরস্পরের বিপক্ষে সমঝোতার ভিত্তিতে টেস্ট খেলতে পারবে; বাকিরা ২০১৫ সাল থেকে আর টেস্ট খেলতে পারবে না। বাকি দেশগুলো আফগানিস্তান-আয়ারল্যান্ডদের সঙ্গে গিয়ে ইন্টার কন্টিনেন্টাল কাপে চারদিনের ম্যাচ খেলবে। চার বছর পর, ২০১৯ সালে ওই টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন তখনকার আট নম্বর দেশের বিপক্ষে একটা হোম ও অ্যাওয়ে সিরিজ খেলতে পারবে। তাতে জিততে পারলে ভালো, নইলে আরো চার বছরের বিরতি। ফলে এর মধ্য দিয়ে হুমকির মুখেই পড়বে বাংলাদেশের টেস্ট ভবিষ্যত্।
এই অবস্থায় বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের জন্য এই সিরিজটা এক রকম প্রেরণা হতে পারে। কেননা, এই সিরিজে ভাল খেলে তারা নিজেদের পারফরম্যান্স দেখাতে পারে। এই প্রসঙ্গে সাকিব আল হাসান বলেন, 'এটা যার যার ব্যাপার। একেকজন একেকভাবে দেখেন; একেকজন একেকভাবে এর থেকে প্রেরণা পান। কেউ এটাকেও প্রেরণা হিসেবে নিতে পারেন।'
শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড আইসিসি'র প্রস্তাবের সরাসরি বিরোধিতা করলেও এই নিয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি লংকান অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, 'এটা সম্পূর্ণই আইসিসির সিদ্ধান্ত। তারা এটা নিয়ে কাজ করছে। এখানে আমাদের খেলোয়াড়দের বলার কিছু নেই।'
আইসিসি পুনর্গঠন প্রস্তাব প্রসঙ্গে সরাসরি কিছু না বললেও এ বিষয়ে নিজের হতাশার কথা জানিয়ে জার্গেনসেন বলেন, 'টেস্ট ক্রিকেটে গত ১২ মাসে নিজেদের অর্জন নিয়ে আমরা গর্বিত। এই সময়ে আমরা নিজেদের রেকর্ড তিনবার ভেঙ্গেছি। ছেলেরা ভীষণ হতাশ। বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেটে ভালো করছে, একটু একটু করে উন্নতি করেছে। এই ধরনের ক্রিকেটে ভালো করতে হলে বেসিক ভালো থাকা প্রয়োজন।'
এহসান মানির সমালোচনা
আইসিসি'র পুনর্গঠন প্রস্তাবের কঠোর বিরোধিতা জানালেন ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির সাবেক সভাপতি এহসান মানি। তিন 'কুতুব' ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের আনা প্রস্তাবের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, 'এর ফলে আইসিসি'র শাসন ব্যবস্থা ধ্বংসের মুখে পড়বে। দুর্নীতি বাড়বে এবং স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা বাড়বে।