স্বামী-স্ত্রীর কর্মক্ষেত্র এক অফিসে হলে তারচেয়ে আনন্দের সংবাদ আর কী হতে পারে! প্রতিদিন একসঙ্গে রেডি হয়ে অফিসে যাওয়া, একসঙ্গে লাঞ্চ করা ও একসঙ্গে অফিস শেষে ঘুরতে যাওয়া কিংবা শপিংটাও সেরে ফেলা যায় খুব সহজেই। তবে স্বামী-স্ত্রীর একসঙ্গে কাজের যেমন সুবিধা আছে, তেমনি আছে নানা অসুবিধাও। কীভাবে তা সামলাবেন, তার পরামর্শ নিয়ে এবারের আয়োজন। জানাচ্ছেন খালেদ আহমেদ
একটি টিভি চ্যানেলে একসঙ্গে কাজ করত দীপন ও সীমা। একসঙ্গে কাজ করতে করতেই একে অপরকে পছন্দ করে বিয়ে করে দু'জনে। বিয়ের পর সীমা চাকরি চেঞ্জ করবে বলে ভাবলেও দীপনের কথাতে সেই চিন্তা বাদ দিল সে। প্রিয় মানুষটির সঙ্গে এতটা সময় একসঙ্গে থাকার আনন্দই অন্যরকম। প্রথম দিকে বিষয়টি দু'জনেই এনজয় করছিল। একসঙ্গে অফিসে যাওয়া, লাঞ্চ ব্রেকে একসঙ্গে ক্যাফেটেরিয়ায় বা কোনো কোনো দিন কাছের কোনো রেস্তোরাঁয় গিয়ে খাওয়া, এসএমএস-এ মজার কিছু বলা অথবা করিডোরে ছোটখাটো আড্ডা—এই সবকিছুর মধ্যে দিয়ে দু'জনে যেন আরও কাছাকাছি চলে এসেছিল। কিন্তু কিছুদিন পর থেকেই সীমা লক্ষ করছিল যে, ওর প্রতি কলিগদের ব্যবহারে যেন সামান্য পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে বিয়ের পর পরই ওর একটা প্রমোশন হওয়ার পর থেকেই। অফিসে যেহেতু দীপন ওর বস, তাই সীমা কানাঘুষা শুনতে পাচ্ছিল যে, কলিগরা মনে করেন, বসকে বিয়ে করার জন্যই সীমার এত তাড়াতাড়ি এই উন্নতি। অফিসে অকারণে এই গসিপের জন্যে দীপনও যেন কিছুটা বিব্রত ও বিরক্ত। এর ফলে এখন অফিসে সামান্য কথা বলতেও দু'জনে যেন আর স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। অফিসে তৈরি হওয়া এমন অস্বস্তিকর পরিস্থিতির জন্য সীমার প্রতি মুহূর্তে মনে হয়, এবার ও চাকরিটা ছেড়ে দেবে। যেসব স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে একই অফিসে চাকরি করেন, অনেক সময়ই তাদের এই বাড়তি চাপ, অকারণ গসিপ সহ্য করতে হয়। কিন্তু চাকরি ছেড়ে দেওয়াটা কখনও সঠিক সিদ্ধান্ত হতে পারে না। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার কয়েকটি পরামর্শ নিচে দেওয়া হলো—
পার্সোনাল আর প্রফেশনাল লাইফ সম্পূর্ণ আলাদা রাখুন। বাড়িতে স্বামী-স্ত্রী কিন্তু অফিসে আপনারা কলিগ। এই কথাটি সব সময় মাথায় রাখার চেষ্টা করুন।
যতটা সম্ভব অফিসে নিজেদের মধ্যে একটা ফর্মাল রিলেশনশিপ বজায় রাখাই শ্রেয়।
অফিসে ব্যক্তিগত কারণে একে অপরের সঙ্গে সময় না কাটানোই ভালো।
অফিসের কাজে যাতে কোনো মতেই ব্যক্তিগত সম্পর্কের ছায়া না পড়ে। বিয়ে হয়েছে মানেই যে, নিজের আলাদা কোনো সার্কেল থাকবে না, তা নয়।
মাঝেমধ্যে আলাদা আলাদা অফিস যাতায়াত করুন।
অফিসের কোনো কথা কখনও বাসা পর্যন্ত টেনে নিয়ে আসবেন না।
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বোঝাপড়া যদি ভালো থাকে এবং একে অপরের বন্ধু হয়ে উঠতে পারেন, তবে ছোটখাটো সমস্যা কখনও আপনাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করবে না।
মডেল তানভীর ও আনিকা ছবি দীপঙ্কর দীপু