ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট কোনটি? চামারা কাপুগেদারার আউট নাকি আবুল হাসানের রানআউট? এখন এই ময়না তদন্ত করতেই হবে দুরন্ত রাজশাহীকে। কারণ একেবারে হাতের মুঠোয় থাকা ম্যাচ ফসকে গেছে তাদের। ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের কাছে ফিরতি ম্যাচে আবারও হেরেছে তারা।
শেষ পাঁচ ওভারে রাজশাহীর জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল মাত্র ৩৩ রান! সেখান থেকে তারা পুরো ২০ ওভার খেলেও ম্যাচটি হেরে যায় ১৩ রানে! ১৬.৫ ওভারে উইকেটে সেট হওয়া ব্যাটসম্যান কাপুগেদারার মিডউইকেটে ক্যাচ (৩১) এবং ১৯.১ ওভারে আবুলের রানআউট দুটিকে বলা যেতে পারে রাজশাহীর হারের মূল কারণ। গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে ঢাকাকে ১৩৭ রানে বেঁধে ফেলে যে প্রশংসা কুড়িয়েছিল রাজশাহী, ব্যাটিংয়ে সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি। ওপেনিংয়ে তামিম ইকবালের ঝড়ো ব্যাটিং রাজশাহীর আশা জাগিয়েছিল। মাশরাফির দ্বিতীয় ওভারে পর পর চারটি চার মেরেছেন তিনি। কিন্তু পরের ওভারে থোমাসের বলে ১৮ বলে করা ৩৩ রানের ইনিংসটি যবনিকা ঘটায় তার। তামিমের আউটের পর পরই শুরু হয় রাজশাহীর লড়াই। সায়মন ক্যাটিচ, মুনাভিরা, আরভিন, জহুরুলরা বিদায় নেন একে একে। তবে তখনো রাজশাহীর প্রদীপ ধরে রেখেছিলেন কাপুগেদারা। শেষ লড়াইটাও তার ব্যাট থেকে আশা করছিল রাজশাহী, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর হয়নি। ২৯ বলে ৩১ করা এই শ্রীলংকান মাত্র দুটি চার মেরেছেন। তবুও জয়ের খুব কাছে ছিল গতবারের সেমিফাইনালিস্টরা। জিততে হলে শেষ ওভারে দরকার ছিল ১৬ রান; কিন্তু আবুলের রানআউটে সব নষ্ট হয়ে যায়।
কাল ম্যাচের শুরুতে ঢাকার জন্য বড় ধাক্কা ছিল সাকিব আল হাসানের ইনজুরি। হ্যামাস্ট্রিংয়ে টান পড়ায় গত বৃহস্পতিবার অনুশীলনেই নামতে পারেননি তিনি। ব্যথা নিয়ে কাল ম্যাচও খেলেননি তিনি। তার অনুপস্থিতিতে দল শুরুতে বড় পার্টনারশীপের অভাবে ভুগেছে। মোহাম্মদ আশরাফুল ২ রানের মধ্যে বিদায় এবং বাকি চার ব্যাটসম্যান ফিরে গেছেন ৭৯ রানে। তবুও দলকে ১৩৭ রানে নিয়ে যাওয়ার পিছনে সবচেয়ে বড় অবদান ওয়াইজ শাহ'র। ৪০ বলে ৪৩ রান করা এই ব্যাটসম্যান শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ঢাকাকে সম্মানজনক স্কোরে নিয়ে গেছেন। তবে এদেরকে ছাপিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন আলফানসো থমাস। রাজশাহীর দুই ওপেনার তামিম ও চার্লস কভেন্ট্রিকে ফিরিয়ে দিয়ে দারুণ একটা ধাক্কা দিয়েছেন এই পেসার। তাই ম্যাচ রেফারির জন্যও ম্যাচ সেরাকে বেছে নিতে কষ্ট হয়নি।
এই জয়ে ঢাকা ৬ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে। কিন্তু ঠিক উল্টো চরিত্র রাজশাহীর পয়েন্ট তালিকা। ৬ ম্যাচে মাত্র দুই জয়, সংগ্রহ ৪! পয়েন্ট টেবিলে তাদের যা অবস্থা তাতে শেষ চারের জায়গা নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হচ্ছে তাদের।
ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস-২০ ওভারে ১৩৭/৫ (সৌম্য ৩০, ওয়াইজ শা অপ: ৪৩, এনামুল ২৫, কোব ১৪, স্টিভেন ১০, তাইজুল ২/২৪, নাঈম ইসলাম জুনিয়র ২/৩৭)।
দুরন্ত রাজশাহী-২০ ওভারে ১২৪/৯ (তামিম ৩৩, কাপুগেদারা ৩১, মুনাভিরা ১৫, আরভিন ১৫, থোমাস ২/১৫, মোশাররফ ২/১৭, সাকলাইন ২/১৭, লিডল ২/২৭)।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: আলফানসো থমাস (ঢাকা)।
ফল: ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস জয়ী ১৩ রানে।