ভোলার বোরহানউদ্দিনে মাছের ঘেরে অজ্ঞাত রোগে মরে যাচ্ছে মাছ। শূন্য হয়ে পড়েছে মাছের খামার। মাত্র ৫-৭ দিনের ব্যবধানে এ ঘটনা ঘটেছে। লাখ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে লোকসানে মাছ চাষিরা সব হারিয়ে দিশেহারা। আর এমন খবরে চারদিকে যখন চাষিদের মধ্যে হাহাকার তখন স্থানীয় মত্স্য অফিস নির্বাকার। পরামর্শের জন্য অফিসে গিয়েও তাদের পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ মাছ চাষিদের।
জানা যায়, উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের দেড় শতাধিক ঘেরে গত এক সপ্তাহ ধরে অজ্ঞাত রোগে রুই-কাতল, পাঙ্গাসসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মরে সাফ হয়ে যাচ্ছে। একাধিক বার মত্স্য অফিসে গিয়ে কাউকে না পেয়ে অসহায় হয়ে ফিরে আসতে হয়েছে ঘের মালিকদের। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তারা। কুতুবা ইউপির ৪ নং ওয়ার্ডের যাদব চন্দ্র দে জানান, ঘেরে গিয়ে দেখা রুই-কাতল,পাঙ্গাসসহ প্রায় সব প্রজাতির মাছ মরে ভেসে উঠেছে। তিনি জানান, প্রথমে মাছগুলো ভেসে উঠে অনেক সময় ধরে ছটফট করে তলিয়ে গিয়ে ৪-৫ ঘন্টা পরে মরে ভেসে উঠছে। তবে এর মধ্যে পাঙ্গাস মাছে মড়কের সংখ্যা বেশি। একই দৃশ্য দেখা গেছে একই ওয়ার্ডের জাহের মাতব্বর, বাদল চন্দ্র দে, বাচ্চু তালুকদার, জাহাঙ্গীর মাতব্বর, জাফর মাতব্বর, রাজ্জাক ফকিরের ঘেরে। শতাধিক ঘেড়ের মধ্যে কুতুবা ইউনিয়নেই অর্ধ শতাধিক মাছের ঘেড়ের মাছ মরে গেছে। তারাও জানালেন প্রায় একই কথা।
সকলেই কৃষি ব্যাংক থেকে লাখ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ঘেরে মাছ চাষ করে সবকিছু হারিয়ে আজ সর্বশান্ত। ঘের মালিক জাহের মাতব্বর জানান, যেদিন থেকে মাছ মরা শুরু হয়েছে তার পর থেকে, দোকানদারের কথা মতো ঔষধ দিয়েছি । কিন্তু শেষ পর্যন্ত একটি মাছও বাঁচানো গেলো না। তার দুইটি ঘেরে ২ লক্ষাধিক টাকার সব মাছ মরে গেছে। ঘের মালিক জাহাঙ্গীর মাতব্বর জানান, প্রথমে ভেবেছি ফুলকা পচা রোগে হয়তো মাছগুলো মরছে। পরে যখন মাছ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ফুলকা ও সারা শরীর দেখেছি রোগের কোন লক্ষণই দেখা যায়নি। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পানিতেও কোন বিষক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান, গত ৫০ বছরে কোন রোগ ছাড়া এভাবে মাছ মরে যাওয়ার মত এমন ঘটনা ঘটতে তারা কখনো দেখেননি। ঘের মালিকরা জানান, বাজার থেকে যে সকল ঔষধ এনে ঘেরে দিচ্ছি তাতে বিন্দু মাত্র কাজ হচ্ছে না। আসলে বাজারে যে ঔষধগুলো বিক্রি করা হচ্ছে তা আসল না নকল তাও চেনার কোন উপায় নেই। মত্স অফিস থেকে এর কোন খোঁজ-খবর নেয়ার মত কাউকে খুঁজেও পাওয়া যায় না।