সময়ের সাথে সাথে মানুষ যতই ইন্টারনেট-নির্ভর হয়ে উঠছে, ততই ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভাইরাস, ম্যালওয়্যার, স্পাইওয়্যার এবং অন্যান্য ক্ষতিকর উপাদান ছড়ানোর হারও বেড়ে চলেছে। এসব আক্রমণ থেকে সরকারি বা নিরাপত্তা সংস্থাগুলোও বাদ পড়ছে না। তবে এসব আক্রমণ ঠেকাতে সাইবার নিরাপত্তার সাথে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোও নতুন নতুন প্রতিরোধ তৈরি করছে। সেগুলোকে আবার বিফল করতে সাইবার অপরাধীরা হাজির হচ্ছে নতুন নতুন রূপে। সম্প্রতি প্রযুক্তি বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান অ্যান্টিভাইরাস নির্মাতা ক্যাসপারস্কি ল্যাব জানিয়েছে, বিশ্বখ্যাত দুই সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান এবং ওয়াশিংটন পোস্টের নামে বিভিন্ন লিংক তৈরি করে ম্যালওয়্যার ছড়ানোর কাজটি করে যাচ্ছে সাইবার অপরাধীরা। আর এসব ম্যালওয়্যারের মূল লক্ষ্য হলো সরকারি সংস্থা, বেসরকারি ইকুইটি ফার্ম এবং হাই-প্রোফাইল অ্যাক্টিভিস্ট। এই ম্যালওয়্যারকে সময়ের অন্যতম ক্ষতিকর একটি উপাদান হিসেবেই অভিহিত করেছে ক্যাসপারস্কি। এর নাম দেওয়া হয়েছে 'দ্য মাস্ক' বা 'ক্যারেটো'। একেবারে সাম্প্রতিক সময়ে দ্য মাস্ক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা গেলেও ক্যাসপারস্কি জানাচ্ছে, ২০০৭ সাল থেকেই সম্ভবত এই ম্যালওয়্যারটি ব্যবহূত হয়ে আসছে। শক্তিশালী এই ম্যালওয়্যারটি বিভিন্ন দেশের দূতাবাস, কূটনৈতিক কার্যালয়, তেল ও গ্যাস কোম্পানি, গবেষণা সংস্থার মতো সব প্রতিষ্ঠানেও আক্রমণ চালিয়ে আসছে। ইউটিউব বা এমন অনেক জনপ্রিয় সেবার নামে নিজেদের ক্ষতিকর সাবডোমেইন তৈরি করার সাথে সাথে দ্য মাস্ক সবচেয়ে বেশি লিংক জেনারেট করে থাকে গার্ডিয়ান এবং ওয়াশিংটন পোস্টের নামে। একবার পিসিতে ঢুকে যেতে পারলেই এই ম্যালওয়্যারটি ওই সিস্টেমে রক্ষিত এনক্রিপশন কি, ভিপিএন কনফিগারেশন, এসএসএইচ কি, আরডিপি ফাইলের মতো সব সংবেদনশীল তথ্য হাতিয়ে নিতে থাকে। আশংকার কথা হলো, ক্যাসপারস্কি জানিয়েছে এই ম্যালওয়্যারটি এমন আরও বেশকিছু প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার কাজ করে থাকে যার হদিস ক্যাসপারস্কির গবেষকরা করতে পারেননি। ক্যাসপারস্কি'র এই না পারাটাই বুঝিয়ে দেয় কতটা শক্তিশালী এই ম্যালওয়্যার। ক্যাসপারস্কি এই ম্যালওয়্যারে ক্ষতিগ্রস্তদের একটি তালিকাও প্রকাশ করেছে। এতে সহস্রাধিক আইপি'র ৩৮০ ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানের নামের কথা জানানো হয়েছে।