মিউজিক
ফিফা বিশ্বকাপ মানেই হলো লিওনেল মেসি, নেইমার, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মতো বিশ্বসেরা ফুটবলারদের লড়াই। তাদের মাঝে জেনিফার লোপেজের কথা এলে অনেকেই অবাক হতে পারেন। আবার অনেকে বুঝে যাবেন, ফিফা বিশ্বকাপের গান গেয়ে মাতাতে যাচ্ছেন জেনিফার। তার সাথে থাকছেন আরেক জনপ্রিয় গায়ক পিটবুল। আর এ নিয়ে লিখেছেন প্রাঞ্জল সেলিম
গত ২০১০ সালের বিশ্বকাপ বেজেছিল 'ওয়াকা ওয়াকা' সুরে! বিশ্বকাপজ্বরে পুড়েতে থাকা গোটা দুনিয়া তখন কাঁপল শাকিরার গানে। ছেলেবুড়ো সবাই মাতোয়ারা ছিল কলম্বিয়ান সংগীতশিল্পীর সুরের জাদুতে! 'ওয়াকা ওয়াকা'র আবেদন এতটাই গভীর ছিল যে বিশ্বকাপ শেষেও তার রেশ রয়ে গেল। এই গান ইউটিউবেই দেখেছিল ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ। ফুটবলপ্রেমীদের জন্য সুখবর, ব্রাজিল বিশ্বকাপে আনন্দের ঢেউ তুলতে এবারও থাকছে ২০১৪ বিশ্বকাপের থিম সং। ব্রাজিল বিশ্বকাপের থিম সংও নাকি একই রকম ঝড় তুলবে, ফিফা মহাসচিব জেরম ভালকের বিশ্বাস অন্তত তেমনই। কারণ এবার মাঠে মেসি, নেইমারদের সাথে থাকছেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী জেনিফার লোপেজ ও পিটবুল। এই নামগুলো স্বাভাবিকভাবেই প্রত্যাশার পারদ বাড়িয়ে দেবে অনেকখানিই। মার্কিন অভিনেত্রী-সংগীতশিল্পী জেনিফার লোপেজের সাথে থাকছেন আরও একজন সহশিল্পী। থাকছেন ব্রাজিলের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ক্লদিয়া লেইতে। আর গানটির ফিচার করবেন জনপ্রিয় কিউবান-আমেরিকান র্যাপ সংগীতশিল্পী পিটবুল। সম্প্রতি রিও ডি জেনিরোর মারাকানা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়েছে থিম সংয়ের মূল বার্তা। ইংরেজিতে মূল বার্তা 'উই আর ওয়ান', পর্তুগিজ ভাষায় 'ওলে ওলা'। দুটির অর্থ একই—'আমরা সবাই এক'। এ নিয়ে পিটবুলের ভাষ্য, 'আমরা এখানে সব বাধা ভেঙে দেবো। দেখিয়ে দেবো ফুটবল আর গান, আমরা এক।' এ প্রসঙ্গে লোপেজ বলেন, 'বেড়ে উঠেছি ফুটবল পাগল বাড়িতে। পিটবুল ও ক্লদিয়া লেইতের সঙ্গে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পারফর্ম করব ভেবে ভীষণ রোমাঞ্চিত আমি। বৈশ্বিক ঐক্য, প্রতিযোগিতা ও খেলার জন্য এটি এক দারুণ উদযাপন।' আর লেইতের মন্তব্য, 'সংগীত আমার প্যাশন। ফুটবল ব্রাজিলিয়ানদের প্যাশন। এটা আমাদের ব্রাজিলিয়ানদের জন্য বিশেষ এক মুহূর্ত। আমরা জানি, কীভাবে উদযাপন করতে হয়।' এই ত্রয়ীর পরিবেশনায় ব্রাজিল বিশ্বকাপের থিম সংয়ের রেকর্ডিং এরই মধ্যে শেষ। গানটি রেকর্ড করেছে সনি মিউজিক এন্টারটেইনমেন্ট। অ্যারেনা ডি সাও পাওলোতে বিশ্বকাপের পর্দা উন্মোচনের দিন গানের তালে পারফর্ম করবেন তিন তারকাই।
ফুটবল বিশ্বকাপ মানেই মহা আনন্দযজ্ঞ। আনন্দের ষোলোকলা পূর্ণ করতে প্রতিবারই বিশ্বকাপ ফুটবল উপলক্ষে ফিফা তৈরি করে থিম সং। বিশ্বকাপ উপলক্ষে সংগীত তৈরির রীতি প্রথম চালু হয় ১৯৬২ সালে, চিলি-বিশ্বকাপ থেকে।
জেনে নেওয়া যাক জেলো সম্পর্কে কিছু কথা
জেনিফার লিন লোপেজ একজন আমেরিকান অভিনেত্রী, সংগীতশিল্পী, ব্যবসায়িক উদ্যোক্তা ও প্রযোজক। তিনি ১৯৮৬ সালে 'মাই লিটল গার্ল' নামক ছবির ছোট্ট একটি চরিত্রের মাধ্যমে বিনোদন জগতে প্রবেশ করেন, যদিও তার অভিভাবকের মতে চরিত্রটি হিসপানিক হিসেবে অবাস্তব ছিল। ১৯৯১ সালে 'ওহ লিভিং কালার' নামক অনুষ্ঠানে নাচের মাধ্যমে তিনি বিনোদন জগতে নিয়মিত হন। ১৯৯৭ সালে 'সেলেনা' নামক চলচ্চিত্রে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি মূল ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। তার পরের বছর 'আউট অব সাইট' চলচ্চিত্রে অভিনয় করে লোপেজ লাতিন আমেরিকার প্রথম অভিনেত্রী হিসেবে দশ লক্ষ ডলার পারিশ্রমিক পান। ১৯৯৯ সালে তার প্রথম গানের অ্যালবাম 'অন দ্য সিক্স' বের হওয়ার পর তিনি সংগীতজগতে সার্থকভাবে পদার্পণ করেন।