দেখতে দেখতেই এসে পড়েছে ভালোবাসা দিবস। ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখের এই দিনটিকে পুরো বিশ্বের মানুষ ভালোবাসা প্রকাশের জন্য যখন ব্যস্ত তখন আমাদের জন্য বোনাস হিসেবে আছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। এই দিনে একে অপরকে দেওয়া উপহারে যুক্ত হয় বই। বইয়ে লেগে থাকে ভালোবাসার ছোঁয়া কেননা ভালোবাসার সূত্রপাঠ যে এই বই থেকেই। আসুন জেনে আসি তরুণদের কাছে উপহার হিসেবে বইয়ের চাহিদা কেমন। লিখেছেন রিয়াদ খন্দকার
ঝুমুর ও তিথি দুজনেই এলএলবি পড়ছেন, একটি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে এসেছেন বই মেলায়। তাদের পড়াশোনা চলে ইংরেজিতেই তবে তাই বলে বাংলা বই পড়ার আগ্রহটা এতটুকুও কমেনি থাকবে না কেন তাদের পছন্দ কবিতা আর প্রবন্ধ। ঝুমুর কিনবে প্রবন্ধের বই। 'তিথি কী কিনবেন?' 'আমি জীবনানন্দ'। জানিয়ে দেন তিথি। 'ভালোবাসা দিবস সামনে। এই দিনে সবচেয়ে ভালো উপহার কী হতে পারে?' 'অবশ্যই বই। যেকোনো সময়ই বই সেরা উপহার।' বলে মানুষের ভিড়ে হারিয়ে যান বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া এই দুই তরুণী। এখন শীত তেমন একটা নেই। বইমেলায় তো একেবারেই নেই, বই আর বইপ্রেমিকের উষ্ণতা এই এলাকা থেকে শীতকে বহু আগেই বিদায় জানিয়েছে। প্রতিদিন আসছে নতুন নতুন বই, প্রতিদিনই মেলায় যাচ্ছে মানুষ। কেনাকাটা চলছে। ধীরে ধীরে জমে উঠছে মেলা। এবার চোখে পরে আরও দুই জন কলেজপড়ুয়া অনিক আর নিধি। দুজনেরই পছন্দ অ্যাডভেঞ্চার। বাংলা-ইংরেজি দুই ভাষাতেই পড়তে পছন্দ করেন। নিধি বলেন, 'আজ খুব একটা কেনাকাটা করব না, বই দেখব, ক্যাটালগ সংগ্রহ করব। তারপর একদিন তালিকা ধরে কিনে নেব।' 'বই কিনতেই হবে কেন?' 'বইয়ের কোনো বিকল্প নেই।' 'এটা তো শুনে শুনে বলা। বলতে হয় বলে বলা। বইয়ের বিকল্প থাকবে না কেন? আপনার হাতের ওই সেলফোনটাই তো বিকল্প।' 'উঁহু।' নিধি মাথা নাড়েন এদিক-ওদিক। 'প্রযুক্তি নতুন নতুন অনেক কিছু দিচ্ছে ঠিকই, কিন্তু বইয়ের বিকল্প নেই। খেতে বসলেও অনেকের হাতে থাকে বই। কোনো উপহারের কথা ভাবলে বইয়ের কথাই মাথায় আসে সবার আগে।' এমনই ভালোবাসায় সিক্ত তারুণ্যের মেলা বসেছে এবারের বই মেলায়। তাদের সাথে কথাবার্তায় সহজেই অনুমেয় ইন্টারনেটের এই যুগেও বইয়ের প্রতি এখনও রয়েছে তারুণ্যে অদম্য মমতা। ভালোবাসা দিবসে পছন্দের মানুষটির জন্য একটি বই শুধু উপহার হিসেবেই নয়, হতে পারে নিজেদের বুঝাপড়া বৃদ্ধির একটি অনন্য মাধ্যম। কেননা এতে নিজেদের রুচি সম্পর্কে একে অন্যের জানা হয়। বলা হয়ে থাকে বই মানুষের সবচাইতে ভালো বন্ধু এবং কাউকে দেওয়ার জন্য সবচাইতে ভালো উপহার। তার তাই এইবারের ভালোবাসা দিবসে আপনার ভালোবাসার মানুষটিকে উপহার দিতে পারেন তার পছন্দের কোনো বই। বইয়ের প্রথম পাতায় ভালোবাসা প্রকাশ করে কয়েকটি কথাও লিখে দিতে পারেন তাকে। নতুন বইয়ের গন্ধ বরাবরই ভালোবাসাকে করে আরও সতেজ এবং থাকে আপন করে নেওয়ার অন্যরকম অনুভূতি। একটা সময় ছিল বিয়ে, জন্মদিন বা এই জাতীয় অনুষ্ঠানের দাওয়াতে উপহার হিসেবে বই দেয়া হতো। সেই পুরোনো গল্পকে রঙিন করতে তরুণদের হাত ধরে এবারের ভালোবাসা দিবসে উপহার হিসেবে বই হোক প্রধান উত্স।
সমম্বয়
আশিস সৈকত
শিল্প নির্দেশনা
মোর্শেদ নাসের
বিশেষ সহযোগিতায়
খালেদ আহমেদ
আয়োজন সহযোগিতায়
মুহম্মদ কবীর, প্রাঞ্জল সেলিম, রিয়াদ খন্দকার, দীপঙ্কর দীপু
গ্রাফিক্স ডিজাইন
মোস্তাফিজুর রহমান
গ্রাফিক্স সহযোগিতায়
দিলীপ কুমার হালদার