ভালোবাসা শুধু প্রিয়তম বা প্রিয়তমার জন্য তা কিন্তু নয়। সুন্দর ব্যক্তিত্বের প্রতিও থাকে ভিন্নরকম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। বিনোদনের স্বপ্নীল ভুবনকে রাঙিয়ে রাখেন যে তারকারা তাদেরও রয়েছে একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধা, বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা। কেননা তারা নিজেদের মেধা, পরিশ্রম আর সৌন্দর্যে মুগ্ধ করেন যেমন দর্শকদের তেমনি পরস্পরকে। এই আয়োজনে জনপ্রিয় তারকাদের সম্পর্কে ভালোলাগা ও ভালোবাসার কথা জানিয়েছেন অন্য তারকারা। অনুলিখন করেছেন অজেয় চৌধুরী
'শাবনূর বন্ধুত্বকে সম্মান দেয়'
—মৌসুমী
দেশীয় চলচ্চিত্রে অন্য অনেক নায়িকার মাঝে শাবনূর আমার একজন প্রিয় অভিনেত্রী। যদিও শাবনূরের প্রথম ছবি ব্যবসায়িক সাফল্য পায়নি। আর আমার ক্ষেত্রে ঘটেছে ভিন্ন ঘটনা। আমার প্রথম ছবি সুপার হিট। আমার চলচ্চিত্রের যাত্রা শুরুর বেশ কিছুদিন পর শাবনূরের সঙ্গে প্রথম দেখা। ইতোমধ্যেই তার ছবি দেখেছি। ভালো লেগেছে। কিন্তু কখনও কথা হয়নি। একদিন এফডিসিতে দেখা হলো, কথা হলো। প্রথম দিনেই কেমন জানি বন্ধুত্ব হয়ে গেল। এরপর থেকে নিয়মিত যোগাযোগ হয়। একটা সময় জীবনের নানা ঘটনা শেয়ার করতাম তার সঙ্গে। কিন্তু শাবনূর সবসময় কেমন চুপচাপ থাকত। মনের কথা সহজে বলতে চাইত না। আমি তো আবার একটু অন্যরকম। যার সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় তার সঙ্গেই সব শেয়ার করি। তাই শাবনূর চলচ্চিত্রের বন্ধু হয়ে গেল। একের পর এক হিট ছবি উপহার দিতে লাগল। সালমান শাহের সঙ্গে জুটি বেঁধে হৈচৈ ফেলে দিল। এ জুটির আমিও একজন ভক্ত। হঠাত্ শাবনূরের জীবনে নেমে এলো অন্ধকার। সালমানের মৃত্যু তাকে অসহায় করে দিল। কিন্তু শাবনূরকে আমি যতটুকু জানতাম তাতে সে ভেঙে পড়ার মতো মেয়ে নয়। এরপরও প্রিয় সালমানের মারা যাওয়াকে শাবনূরে মেনে নিতে পারেনি। তখন অনেকেই শাবনূরের পাশে ছিল না। কিন্তু আমি ছিলাম। তাকে সবকিছুতেই সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি। এ দুর্দিন থেকে এক সময় বের হতে সমর্থ্য হলো শাবনূর। আবারও সাফল্য আসতে থাকল তার হাতে। আমাদের সম্পর্কটাও জোরালো হতে থাকল। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমরা একে অপরকে আমন্ত্রণ জানাই। চলচ্চিত্রে আসার পর বেশিরভাগ জন্মদিনে আমি শাবনূরকে দাওয়াত দিয়েছি। এমনকি যত কাজই থাকত শাবনূর কিন্তু আসত। এই তো কিছুদিন হলো শাবনূর মা হয়েছে তার সন্তানের জন্য আমার অনেক দোয়া রইল।
'সুবর্ণা আপার শৈল্পিক ভাবনা আদর্শ'
—বিপাশা হায়াত
একজন শিল্পীকে অন্যদের সঙ্গে মূল পার্থক্য গড়ে দেয় তার শৈল্পিক ভাবনা। সুবর্ণা মুস্তাফা তেমনি একজন অভিনয়শিল্পী, যাকে অনুজরা আদর্শ হিসেবে মিনে নিতে দ্বিধাবোধ করে না। তার শৈল্পিক ভাবনা সৃষ্টিশীলতা সবসময় অন্যদের অনুপ্রেরণা জোগায়। এক্ষেত্রে তার মার্জিতবোধ আমাকে মুগ্ধ করে। আমি 'বিপাশার অতিথি' নামের একটি অনুষ্ঠানের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলাম। এ অনুষ্ঠানের উপস্থাপিকা হিসেবে শৈল্পিক ভাবনা নিয়ে আমার সঙ্গে দীর্ঘ আলাপচারিতা হয় শিল্পীদের, অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে তিনি অতিথি হয়ে আসেন। অনুষ্ঠানে তার প্রতি আমার মুগ্ধতার কথাও বলেছি। দীর্ঘদিন তিনি মঞ্চে কাজ করেছেন, প্রচুর পড়াশোনা করেছেন, অভিনয় নিয়েই নয় অভিনয়ের বাইরেও তার ভালো জানাশোনা। এগুলোই তাকে অনেক দূরে এগিয়ে নিয়েছে। আমার চোখে, তিনি একজন পূর্ণাঙ্গ অভিনয়শিল্পী।