তারকাদের ব্যক্তি জীবনের গল্প জানতে পাঠকদের আগ্রহ অনেক বেশি থাকে। তাই আমাদের বিশেষ এই আয়োজনে তুলে ধরা হলো দেশীয় শোবিজ অঙ্গনের জনপ্রিয় তারকা জুটিদের ভালোবাসা গল্প। জানাচ্ছেন
খালেদ আহমেদ
মোশাররফ করিম ও জুঁই করিম
আমাদের বিয়ে হয়েছে ২০০৪ সালের ৭ অক্টোবর। মূলত পরিবারের সম্মতিতে ভালোবেসেই আমরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলাম। জীবনের প্রথম দিন থেকে যে ভালোবাসা ছিল তা আজও আমাদের মাঝে অটুট আছে। বরং আমরা মনে করি আমাদের ভালোবাসা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জুঁই করিম বলেন, 'আমাকে ভালোবাসার কথা মোশাররফ করিমই আগে জানান।' বিয়ের চার বছর আগে থেকে তাদের দুজনের মধ্যে প্রেমের শুরু। একে অপরকে জানা এবং দুজনের মধ্যে বোঝাপড়াটা বেশ ভালো হয়, তখনই দুজন পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে করেন। জুঁইয়ের ভাষ্যে, 'মালিবাগের চৌধুরী পাড়ায় মোশাররফের এক বন্ধুর একটি কোচিং সেন্টার ছিল। সেখানেই মূলত তার সাথে আমার পরিচয়। এরপর ধীরে ধীরে একটা সময় তিনি আমাকে জানালেন যে, আমাকে তার ভালো লাগে। সেই ভালোলাগা থেকে পরে ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি হয়। আল্লাহর রহমতে আমরা বেশ সুখে আছি। আমাদের একমাত্র সন্তান রোবেন রায়ান করিম। ওকে নিয়েই আমাদের সুখের সংসার।' এবার বলার পালা মোশাররফ করিমের। তার ভাষ্যে, 'জুঁই আমার জীবনে এসেছিল বলেই আজ আমার জীবনটা এত সুন্দর, গুছানো। সে আমার জীবনে না এলে আমার জীবনটা এত গুছানো হতো না। এখন আমি ভীষণ ব্যস্ত। কিন্তু এই ব্যস্ততাকেই সে মেনে নিয়ে আমার সংসারটাকে আগলে রেখেছে। আমার পুরো পরিবারের সব দায়িত্ব আমার হয়ে সে প্রতিনিয়ত পালন করছে। সত্যিই আমি আজ ভীষণ সুখী একজন মানুষ। আল্লাহ যেন আমাদের আজীবন এমন সুখে রাখেন সবার কাছে এই দোয়া চাই আমি।'
হিল্লোল ও নওশীন
হিল্লোল ও নওশীন দু'জনই ভালোবেসে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। তবে নিজেদের মধ্যকার বিয়ের খবরটি নিজে থেকে কাউকে বিশদভাবে জানান দেননি তারা দু'জন। একটু একটু করে মিডিয়ার সবাই থেকে শুরু করে এখন তাদের ভক্তদর্শকরাও জানেন যে তারা দু'জন একে অপরকে ভালোবেসে বিয়ে করেছেন। এর আগে দুজনেরই বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু মনের মিল হয়নি বলে দুজনেই আগের বিয়ে থেকে অব্যাহতি নেন। এখন তারা বেশ সুখে আছেন শান্তিতে আছেন। নওশীনের আগের সন্তান এহান তার সাথেই আছেন। এহানকে বেশ ভালোভাবেই মেনে নিয়েছেন হিল্লোল। হিল্লোলের ভাষ্যে, 'নওশীন আমাকে পুরোপুরি বুঝতে পারে। যে কারণে মূলত তাকে বিয়ে করা। আমি মনে করি একজন পূর্ণাঙ্গ নারী নওশীন। আমার আগের লাইফটা একটু অগোছানো ছিল। এখন আর সেরকম নেই। আমাকে ঠিক রাখার জন্য অনেক সময়ই নওশীন নিজেও নাটকে কাজ করে না। সংসারের প্রতি তার দায়িত্ব-কর্তব্য আর টান আমাকে ভীষণভাবে মুগ্ধ করে। একজন বাঙালি নারী যেমন হওয়া উচিত নওশীন ঠিক তাই। আমার বউ কিংবা আমার সহধর্মিণী বলে কথাগুলো বলছি না, সত্যিই নওশীন অনেক লক্ষ্মী বউ।' আর নওশীন বলেন, 'কাজের সূত্র ধরেই মূলত হিল্লোলের সাথে আমার পরিচয়। পরিচয় থেকে ভালোলাগা, তারপর ভালোবাসা। মূলত আমাদের উভয় পরিবারের সম্মতিতেই আমাদের বিয়ে হয়েছে গত বছর। কিছু ভেতরগত সমস্যার কারণে বিয়ের খবরটি নির্ধারিত সময়ে আমরা কাউকে তেমন জানাতে পারিনি। সে সময় বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে যদিও আমাদের বিয়ে নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। আমরা তার প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম নিজেদের ভালোর জন্যই। তবে যাই হোক না কেন এখন আমরা অনেক সুখে আছি। ভালো আছি। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন যেন অনেক ভালো থাকতে পারি। হিল্লোল খুব ভালো মনের একজন মানুষ। জীবনসঙ্গী হিসেবে তাকে পেয়ে সত্যিই আমি খুব সুখী। সবার কাছে দোয়া চাই যেন আগামী দিনগুলোতে আমরা ভালো থাকতে পারি সেইসাথে আমি যেন আমৃত্যু হিল্লোলের পাশে থাকতে পারি।'
ইন্তেখাব দিনার ও বিজরী বরকত উল্লাহ
দুই পরিবারের সম্মতিতে এক পহেলা বৈশাখে তারা দুজন ভালোবেসে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর দীর্ঘ সময় কাটলেও এখন পর্যন্ত কোনো কারণে কোনো বিষয় নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়নি। শুধু তাই নয়, কোনো বিষয়ে ভিন্নমতও দেখা যায়নি। বিজরী বলেন, 'সত্যি বলতে কী আমাদের দুজনের মধ্যে বোঝাপড়াটা অনেক ভালো। যে কারণে আমাদের মধ্যে কোনো বিষয়েই এখনও মতের অমিল হয়নি। আমি চেষ্টা করি দিনারের কথা মেনে চলার। আমার কথাও দিনার যথেষ্ট মেনে চলার চেষ্টা করে। আর এ কারণেই হয়তো এখনো আমাদের মাঝে কোনোরকম ঝগড়াঝাটি হয়নি। এদিক দিয়ে আমি সত্যিই খুব ভাগ্যবান। সত্যি বলতে কী মেয়েদের একটা বিষয়ই সবচেয়ে বড় চাওয়ার থাকে, আর তা হলো স্বামী যেন তাকে বুঝতে পারে। দিনার আমাকে বুঝতে পারে। খুব সহজেই আমাকে রিড করতে পারে। এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।' দিনারের ভাষ্যে, 'বিয়ের আগের জীবনটা আমার অনেক এলোমেলো ছিল। ছিল বেশ অগুছানো। আর এখন ভাবাই যায় না। কতটা গুছিয়ে নিয়েছি আমি আমাকে। সময়মতো ঘুমানো। সময়মতো খাওয়াদাওয়া। বিয়ের আগেতো আমি এসব বিষয় নিয়ে ভাবতেই পারিনি যে আমার শৃঙ্খলাবদ্ধ একটা জীবন হবে। সত্যিই এর পুরো কৃতিত্ব নিঃসন্দেহে বিজরীর।'