রক্ষণাত্মক ব্যাটিং, আক্রমণাত্মক অধিনায়কত্ব, প্রধান নির্বাচককে জোকার বলা, আইসিএলে যোগ দেয়া; এসব কথা ভুলে গিয়ে শুধু ব্যাটসম্যান মারভান আতাপাত্তুর কথা মনে করলেও মানতে হবে যে শ্রীলঙ্কার সর্বকালের সেরাদের ছোট্ট তালিকাতেও তার নাম থাকার কথা বা থাকা সম্ভব ছিল। ক্যারিয়ারে ৬টি ডাবল সেঞ্চুরি যখন করেছেন, তখনও কুমার সাঙ্গাকারা বা মাহেলা জয়াবর্ধনেরা আজকের এই রূপে আসেননি; তখন পর্যন্ত আতাপাত্তুই ছিলেন সবার আগে। এই ৬টি ডাবল সেঞ্চুরির একটি ছিল এই বাংলাদেশের বিপক্ষেই। বাংলাদেশের সেই ঘোর দুর্দিনে, ২০০১ সালের কলম্বো টেস্টে ২০১ রানের ইনিংস খেলে স্বেচ্ছা অবসরে গিয়েছিলেন!
এতোকাল পর সেই বাংলাদেশের বিপক্ষে সেই জাতীয় দলের সঙ্গী হয়ে এসেছেন সেই মারভান আতাপাত্তু। তবে মুখে বলুন আর নাই বলুন, এবার সহকারী কোচ হিসেবে এসে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স দেখে নিশ্চয়ই বিস্মিত হয়েছেন। সেই বাংলাদেশ এখন টেস্টে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তোলে, সেই বাংলাদেশ এখন 'এক নম্বর' শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিততে জিততে ভাগ্যের কারণে হেরে যায়! গতকাল সংবাদ সম্মেলনে আতাপাত্তু অবশ্য বললেন, বাংলাদেশের পারফরম্যান্সে তিনি বিস্মিত হননি। কারণ, বাংলাদেশ যে এমন কঠিন লড়াই করবে, এটা নাকি তারা জানতেন। আরও কে.
কৌতূলউদ্দীপক ব্যাপার হল, আতাপাত্তুই রায় দিয়ে দিচ্ছেন, আগামীকালকের ম্যাচে আগের দিনের চেয়েও ভয়ঙ্কার চেহারায় মাঠে নামতে পারে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের পারফরম্যান্সে বিস্মিত না হলেও দুই ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে টানটান লড়াই থেকে ঠিকই রোমাঞ্চিত আতাপাত্তু। সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করলেন, শেষ পর্যন্ত জয় পাওয়াটা সৌভাগ্যের ব্যাপারই হয়েছে, 'দেখুন, আমরা জানতাম, বাংলাদেশ খুবই কঠিন প্রতিপক্ষ; বিশেষ করে এই ছোট ফরম্যাটে। তারা অসাধারণ খেলেছে। আসলে একটা দুটো ওভার কী করে টি-টোয়েন্টির চেহারাটা বদলে দিতে পারে, তার সেরা বিজ্ঞাপন হতে পারে গতকালকের (বুধবারের) ম্যাচটি। শেষ পর্যন্ত জয়ী ড্রেসিংরুমে থাকায় নিজেকে ভাগ্যবানই মনে হচ্ছে। সামনে বিশ্বকাপ; আশা করছি, এমন অনেক ম্যাচ দেখতে পাবো।'
ব্যাটিং বিশেষজ্ঞ হিসেবেই দলের সঙ্গে থাকা আতাপাত্তু নিশ্চিত যে, একালের 'জয়াসুরিয়া' কুশল যে শুরু এনে দিয়েছিলেন, তাতে স্কোরটা আরও বড় হতে পারতো শ্রীলঙ্কার। সেটা যে হয়নি, এ জন্য নিজেদের ব্যাটসম্যানদের দায় না দিয়ে পরিষ্কার বাংলাদেশি বোলার ও ফিল্ডারদের কৃতিত্ব দিচ্ছেন। বাংলাদেশি ফিল্ডাররা যেভাবে খেলা নিয়ন্ত্রণ করেছেন, সেটাই ম্যাচে বড় ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন।
একইসঙ্গে আতাপাত্তু অনুমান করছেন যে, আজকের ম্যাচে আরও ভয়ঙ্কর চেহারায় দেখা যেতে পারে বাংলাদেশকে, 'তারা পারে। ভয়ানকভাবে আগামীকাল (আজ) ফিরে আসতে পারে। এই ফরম্যাটে বাংলাদেশ খুব ভয়ানক দল। সেভাবেই আমরা তাদের প্রাপ্য সমীহ করে খেলতে নামবো। তারা তো এই কন্ডিশন আমাদের চেয়ে ভালো বোঝে। ফলে একটা জয়ে তৃপ্ত না হয়ে নিজেদের সেরা খেলাটা খেলতে নামবো আমরা।'