দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে পর পর দুই ম্যাচে পরাজয়ে দারুণ সমালোচনার মুখে পড়েছেন পাকিস্তানী কোচ ডেভ হোয়াটমোর। দলের এই ব্যর্থতার পুরো দায়ভার ক্রিকেট সংশ্লি¬ষ্ট অনেকেই তার উপর চাপিয়ে দিয়েছেন।
অস্ট্রেলিয়ান সাবেক এই টেস্ট খেলোয়াড় গত বছর মার্চে পাকিস্তানের কোচ হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। দলের কঠিন পরিস্থিতিতে তার ভূমিকা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। হোয়াটমোরের অতীত অভিজ্ঞতা তার এই ভূমিকার সাথে মোটেই মানানসই নয়। অস্ট্রেলিয়ান কোচ হিসেবে তিনি দারুণভাবে সকলের কাছে স্বীকৃত কোচের মর্যাদা পেয়েছিলেন। তার অধীনেই শ্রীলংকা প্রথমবারের মত বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল। বাংলাদেশের কোচ হিসেবেও তিনি শতভাগ সফল ছিলেন। কিন্তু পাকিস্তানের দায়িত্ব নেবার পরে সামপ্রতিক সময়ে দলের পারফরমেন্সে তার ভূমিকা নিয়ে বিশ্বব্যাপী দারুণ সমালোচনার ঝড় উঠেছে। পাকিস্তান দলের এক ঘনিষ্ঠ সূত্রমতে জানা গেছে, 'দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে প্রাপ্ত এক রিপোর্টের ভিত্তিতে জানা গেছে, কেপটাউনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে কিছু কিছু ব্যাটসম্যান এবং বোলারের অমনোযোগী আচরণ সত্ত্বেও হোয়াটমোর তাদের সাথে কোন কথা বলেননি। এমনকি ড্রেসিং রুমেও এ নিয়ে কোন আলোচনা করেননি। সাধারণত দলের বাজে পারফরমেন্সে কোচ দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে এসে খেলোয়াড়দের সাথে কথা বলে তাদের বোঝাতে চেষ্টা করেন দল তার কাছে কি চাইছে।'
শুধুমাত্র হোয়াটমোর নয় বোলিং কোচ মোহাম্মদ আকরাম এবং ফিল্ডিং কোচ জুলিয়ান ফাউন্টেনও খেলোয়াড়দের সাথে যথেষ্ট কঠিন হতে পারেনি বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে হোয়াটমোরের ব্যাপারে চরম হতাশা ব্যক্ত করেছেন পাকিস্তানের সাবেক টেস্ট খেলোয়াড় রশীদ লতিফ, ইনজামাম-উল-হক এবং মহসিন খান। দলীয় সূত্র জানিয়েছে, মূল সমস্যা হচ্ছে টেস্ট এবং টি২০ অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হক এবং মোহাম্মদ হাফিজ কিংবা দলের অন্যান্য সিনিয়র খেলোয়াড়রা দল সম্পর্কে যা চিন্তা করে সেটার বিপক্ষে গিয়ে হোয়াটমোর কোন কিছু বলতে রাজি হন না। এমনকি নির্বাচন ইস্যুতেও তিনি কখনও কিছু বলেননি। কয়েক মাস আগে কয়েকজন খেলোয়াড়ের বাজে পারফরমেন্স হোয়াটমোর পিসিবি'র কাছে রিপোর্ট করার পরে এই নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে পিসিবি থেকে জানানো হয় হোয়াটমোরের সাথে খেলোয়াড়দের কোন সমস্যা নেই। সূত্রটি আরো জানিয়েছে, ২০০৭ সালে হোয়াটমোর যখন প্রথমবারের মত পাকিস্তানের কোচ হিসেবে নিয়োগের জন্য আবেদন করেছিলেন তখন কয়েকজন বোর্ড কর্মকর্তা তখনকার চেয়ারম্যান নাসিম আশরাফকে জানিয়েছিলেন খেলোয়াড়দের সাথে তার সম্পর্ক ভাল থাকে না। তাই তাকে না নেয়াই ভাল।
আর সেই কারণে কিনা দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তিনি খেলোয়াড়দের সাথে বিরোধের কোন সম্পর্কে জড়াতে চাচ্ছেন না বলেই সূত্রটি উল্ল্লেখ করেছে। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছে, শেষ টেস্টসহ ওয়ানডে এবং টি২০তে পাকিস্তান যদি ভাল কিছু দেখাতে না পারে তবে বোর্ড চেয়ারম্যানের সামনে হোয়াটমোরকে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হতে পারে। মহসিন খানের পরিবর্তে দুই বছরের চুক্তিতে গত বছর মার্চে পাকিস্তান দলে যোগ দিয়েছিলেন হোয়াটমোর। তার অধীনেই পাকিস্তান গত এক বছরে শ্রীলংকা, বাংলাদেশ এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে জয়ী হয়েছে। - বাসস