ইউক্রেন সংকট নিয়ে ওবামা ও পুতিনের ৯০ মিনিট ফোনালাপ
তবুও যুদ্ধের আশঙ্কা ইউক্রেনের
ইত্তেফাক ডেস্ক
ইউক্রেনে সৈন্য পাঠিয়ে রাশিয়া আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। একইসঙ্গে তিনি সামরিক আগ্রাসন অব্যাহত থাকলে রাশিয়া রাজনৈতিকভাবে একঘরে হয়ে যেতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। জবাবে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, রাশিয়া তার দেশের স্বার্থ রক্ষার অধিকার রাখে। ইউক্রেনের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী ইয়াতসেনউক পুতিনের এই বক্তব্যকে যুদ্ধের ঘোষণা বলে উল্লেখ করেছেন এবং যুদ্ধের আশঙ্কা করে সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিচ্ছেন। খবর এএফপি ও রয়টার্সের।
ইউক্রেন সংকট নিয়ে শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও ভ্লাদিমির পুতিন টেলিফোনে ৯০ মিনিট আলাপ করেন। এ সময় ওবামা ইউক্রেনের স্বায়ত্ত্বশাসিত উপদ্বীপ ক্রিমিয়া থেকে সৈন্য সরিয়ে নিতে পুতিনকে আহবান জানান। জবাবে পুতিন বলেন, মস্কো তার স্বার্থ ও ইউক্রেনে রুশভাষীদের সুরক্ষার অধিকার রাখে। এর আগে পুতিনকে ক্রিমিয়ায় সৈন্য পাঠানোর অনুমতি দেয় দেশটির উচ্চকক্ষ। ইউক্রেন জানিয়েছে, দেশটিতে সেনা পাঠানোর বিষয়ে রুশ পার্লামেন্ট অনুমতি দেওয়ার পর ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।
ইউক্রেনের অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট ওলেক্সান্দার তুর্কিনোভ বলেছেন, পারমাণবিক স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থাপনায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। হোয়াইট হাউস জানায়, ওবামা রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে বলেছেন, ইউক্রেন সরকার ও আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যে সরাসরি সংলাপ হল যেকোন উদ্বেগ মোকাবেলার শান্তিপূর্ণ ও সঠিক পথ। হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ক্রিমিয়া উপদ্বীপে সৈন্য পাঠিয়ে রাশিয়া ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক ঐক্য লঙ্ঘন করেছে বলে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ওবামা। তিনি পুতিনকে বলেন, রাশিয়ার এই পদক্ষেপ জাতিসংঘ সনদ এবং ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার ১৯৯৭ সালের সামরিক ঘাঁটি চুক্তিসহ আন্তর্জাতিক আইনেরও সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আর রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, পূর্ব ইউক্রেন ও ক্রিমিয়ায় সহিংসতা আরো বেশি ছড়িয়ে পড়লে নিজ স্বার্থ এবং রুশ ভাষাভাষীদের রক্ষার জন্য পদক্ষেপ নেয়ার অধিকার রাশিয়ার আছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, তিনি ইতোমধ্যে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের ও কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রী, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান ক্যাথরিন অ্যাস্টোন ও যুক্তরাষ্ট্রে জাপান রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা বলেছেন। জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন অবিলম্বে শান্তি পুন:প্রতিষ্ঠা ও সরাসরি আলোচনার আহবান জানিয়েছেন। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ শনিবার ইউক্রেন সংকট নিয়ে শনিবার এক জরুরি অধিবেশনে বসে। আর এ ব্যাপারে গতকাল ন্যাটোর একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল।