অপরিকল্পিতভাবে খাল-বিল ভরাট, দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত্ খাল পুনঃখনন না করা এবং সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবে চাঁদপুর জেলায় ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২টি বৃহত্ সেচ প্রকল্প নির্মাণ করা সত্ত্বেও এ জেলার ৮টি উপজেলাতেই প্রতি বছর একমাত্র বোরো ধান উত্পাদন করার জন্য দুই সহস্রাধিক গভীর, অগভীর নলকূপ ও পাওয়ার পাম্প ব্যবহার করতে হচ্ছে।
অথচ চাঁদপুর জেলার চারদিকেই রয়েছে পদ্মা, মেঘনা, ডাকাতিয়া ও ধনাগোদা নদী। আর এ সমস্ত নদীর সাথে প্রতিটি উপজেলা সংযোগ খাল রয়েছে। এ সমস্ত খালগুলো প্রতি বছর সুষ্ঠুভাবে রক্ষণাবেক্ষণ এবং পুনঃ খননের আওতায় এনে খনন করা হলে নদী হতে খালে স্বাভাবিক পানি প্রবাহটা চলতে পারত।
প্রকাশ, খাদ্য ঘাটতি এলাকা হিসেবে পরিচিত। এ "চাঁদপুর সেচ প্রকল্প" এবং "মতলব ধনাগোদা সেচ প্রকল্প" দু'টির আওতায় গত আড়াই যুগ যাবত্ যথাক্রমে ৬৪ হাজার ও ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ করা হচ্ছে বলে কাগজে-কলমে রিপোর্ট দেয়া হয়। কিন্তু এর অভ্যন্তরীণ খালগুলোতে নিয়মতান্ত্রিকভাবে স্বাভাবিক পানির গতি প্রবাহিত থাকার কথা থাকলেও প্রকল্প দু'টি চালু হবার পর আজ পর্যন্ত তা হচ্ছে না। ফলে দেখা যায় কোনো এলাকায় পানির জন্য কৃষক হাহাকার করছে আবার কোনো এলাকায় পানিতে ফসলাদি ভেসে যাচ্ছে।
হাজীগঞ্জ বাজারের পূর্ব পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বোয়ালজুড়ি খাল, এটি ডাকাতিয়া নদী হতে শুরু হয়ে হাজীগঞ্জ, কচুয়া ও মতলব দক্ষিণ উপজেলায় মিলিত হয়েছে। এ খালটির দু'পাশে ৩০/৩৫ হাজার হেক্টর জমি রয়েছে। এ খালটিতে ১টি স্লুইস গেট নির্মাণ করে এবং সুষ্ঠু পরিকল্পনা মাফিক খালটির দু'পাড় বাঁধাই ও প্রয়োজনীয় খনন করা হলে এ খালটি চাষাবাদে জেলার একটি মডেল হতে পারত। কৃষকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান '৭৮ সালে এ খালটি এলাকার লোকজনকে নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে পুনঃখনন করেন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডকে এখানে একটি স্লুইস গেট নির্মাণের নির্দেশ দেন। তার সেই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ১টি স্লুইস গেট নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ অবিজ্ঞানসম্মত ও ত্রুটিপূর্ণ হবার দরুন গত ৩৪ বছরেও তা কোন কাজেই আসেনি। একই অবস্থা বিরাজ করছে বলাখাল সেচ প্রকল্পেও।