সিদ্ধিরগঞ্জ ডিপিডিসির নেটওয়ার্ক অপারেশন ও কাস্টমার সার্ভিসের অফিসে ব্যাপক দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, নতুন বিদ্যুত্ (লাইন) সংযোগ দিতে ঘুষ বাণিজ্য ও গ্রাহকদের ভূতুড়ে বিল প্রদানসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এখানকার কতিপয় প্রকৌশলী, অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অত্যাচারে দিন দিন বিদ্যুত্ গ্রাহকরা ফুঁসে উঠছে। বিদ্যুত্ গ্রাহকরা মিটার রিডারদের নিয়োগকৃত বহিরাগতদের (গেটিজ) কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। জানা যায়, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানীর (ডিপিডিসি) নেটওয়ার্ক অপারেশন ও কাস্টমার সার্ভিসের সিদ্ধিরগঞ্জ অফিসের অধীনে মোট বিদ্যুত্ গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ২৮ হাজার। মিটার রিডার সংখ্যা ২৬ জন। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সম্পূর্ণ এলাকা, ডেমরা ও ফতুল্লার কিছু এলাকা ডিপিডিসি সিদ্ধিরগঞ্জ অফিসের অধীনে। অথচ এ অফিসে অব্যবস্থাপনা ও ঘুষ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনই নতুন গ্রাহক বিদ্যুত্ সংযোগ নিচ্ছে। নতুন বিদ্যুত্ সংযোগ নিতে গিয়ে লোকজন নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, এ অফিসে বিদ্যুত্ সংযোগ নিতে একজনকে ১০/১২ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হচ্ছে। নতুন সংযোগ নিতে আসা লোকজন জানায়, এ অফিসে ঘুষ ছাড়া বিদ্যুত্ সংযোগ নেয়া যায় না। নতুন বিদ্যুত্ সংযোগ নিতে গিয়ে কমপক্ষে ৫/৬টি টেবিলে উেকাচ (ঘুষ) দিতে হয়। এভাবে নতুন বিদ্যুত্ সংযোগ নিতে গিয়ে গ্রাহকদেরকে ১০/১২ হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে। অথচ অফিস সূত্রে জানা যায়, নতুন বিদ্যুত্ সংযোগ নিতে শুধুমাত্র দুই কিলোওয়াটের ডিমান্ড নোটের ১৩৮০ টাকা, প্রাথমিক জমা ১৪০ টাকা ও একটি নতুন মিটার ক্রয় ছাড়া অন্যখাতে কোন টাকা-পয়সার প্রয়োজন হয় না। খবর নিয়ে জানা যায়, মিটার রিডাররা গ্রাহকদের কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে ২/৩ জন করে বহিরাগত (গেটিজ) নিয়োগ দিয়েছে।
এদের দিয়েই মিটার রিডাররা বাড়ি বাড়ি মিটার রিডিং সংগ্রহ করেন এবং বিদ্যুত্ বিলের কপি পৌঁছে দিচ্ছেন। মিটার রিডাররাই বহিরাগতদের দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে নানাভাবে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। বহিরাগতরা একই সাথে বিদ্যুত্ গ্রাহকদের কাছ থেকে বেশি বিল করার হুমকি দিয়ে টাকা-পয়সা আদায় করছেন। যারা এ কাজে রাজি হচ্ছেন না তাদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয় ভূতুড়ে বিল। এ অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগও রয়েছে। কোন কোন কর্মকর্তাকে অবৈধ কার্যক্রম করার উদ্দেশ্যে বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্তও অফিস করতে দেখা গেছে। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন- হালের এক শীর্ষ কর্মকর্তার যোগদান করার পর ঘুষ বাণিজ্য আরও বেড়ে গেছে। এলাকায় ৪৪০ ভোল্টের জরাজীর্ণ খুঁটি কিংবা তার পরিবর্তন করতেও সহকারী ম্যানেজারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ঘুষ দিতে হচ্ছে। সিদ্ধিরগঞ্জ অফিসের ব্যবস্থাপক (টেকনিক্যাল) প্রকৌশলী তৌফিজউদ্দিন জানান, সরকার নির্ধারিত ফি ছাড়া অন্য কোন টাকা-পয়সা নেয়া হয় না। তিনি এ অফিসে অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা অস্বীকার করে জানান, এখানে বহিরাগত লোক নেই। কোন গ্রাহকের নামে ভূতুড়ে বিলও করা হয় না।