পিটার ফুলটনের জোড়া সেঞ্চুরিতে অকল্যান্ড টেস্ট জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। গত রোববার সিরিজ নির্ধারণী শেষ টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে জয়ের জন্য তাদের দরকার ৬ উইকেট, আর দ্বিতীয় ইনিংসে ৯০ রান তুলতেই চার উইকেট হারিয়ে ফেলা ইংল্যান্ডকে ম্যাচ জিততে আরো ৩৯১ রান করতে হবে ।
গত সোমবার ম্যাচের তৃতীয় নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৩ উইকেটে ৩৫ রান তুলে দিন শেষ করেছিল নিউজিল্যান্ড। ওপেনার ফুলটন ১৪ ও মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান ডিন ব্রাউনলি ১৩ রানে তৃতীয় দিন শেষ করেন। চতুর্থ দিন সকালে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ব্রাউনলি ব্যক্তিগত ২৮ রানে ফিরে গেলেও ফুলটন ও অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ব্যাটে ভর করে শুরুর বিপর্যয় কাটিয়ে বড় সংগ্রহের দিকে ছুটতে থাকে ব্ল্যাকক্যাপসরা। ৯১ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাওয়া ফুলটন বিরতির পর পরই এই টেস্টে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটি তুলে নেন। অপর প্রান্তে ম্যাককালাম ছিলেন নিজের সহজাত আক্রমণাত্মক ভঙ্গিমায়। পাঁচটি চার এবং তিনটি ছয়ে ৫৩ বলে ৬৭ রান করেন কিউই অধিনায়ক। সেঞ্চুরির পর অবশ্য বেশী দূর যাওয়া হয়নি ফুলটনের। ব্যক্তিগত ১১০ রানে স্টিফেন ফিনের শিকারে পরিণত হন তিনি।
চলতি টেস্টের প্রথম ইনিংসেও সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। ২০০৬ সালে অভিষেক হবার পর এখন পর্যন্ত ১৩টি টেস্ট খেলেছেন তিনি। আগের বার টেস্টে কোন সেঞ্চুরির দেখা না পেলেও, অকল্যান্ড টেস্টেই টানা দ্বিতীয়বারের মত তিন অংকে পা দিলেন ৩৪ বছর বয়সী এই খেলোয়াড়। তার বিদায়ের পরেই ২৪১ রানে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে নিউজিল্যান্ড। ইংল্যান্ডের পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন স্টুয়ার্ট ব্রড ও মন্টি প্যানেসার।
জয়ের জন্য ৪৮১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দলীয় ২ রানেই প্রথম উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। টিম সাউদির বলে ওপেনার নিক কম্পটন ২ রান করে সাজঘরে ফেরেন। এরপর দলকে সামনের দিকে টেনে নিয়ে যেতে থাকেন অধিনায়ক অ্যালিষ্টার কুক ও জনাথন ট্রট। কিন্তু এই জুটির মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়ান পেসার নিল ওয়াগনার। ট্রটকে ব্যক্তিগত ৩৭ রানে থামিয়ে দিয়ে দলকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন তিনি।
ওয়াগনারের বিদায়ের পর ইয়ান বেলকে নিয়ে আবারো ইনিংসে মেরামতে মনোযোগী হন কুক। কিন্তু ইংলিশ দলপতিকে ব্যক্তিগত ৪৩ রানে থামিয়ে দিয়ে ম্যাচের রাশ কিউইদের পক্ষে টেনে ধরেন অফ স্পিনার কেন উইলিয়ামসন। কুকের পরে উইলিয়ামসন তুলে নেন নাইট ওয়াচম্যান স্টিভেন ফিনকেও। ফলে ছয় উইকেট হাতে নিয়ে জিততে হলে শেষ দিনে ইংল্যান্ডকে করতে হবে আরো ৩৯১ রান। উল্লেখ্য,সিরিজের প্রথম দুটি টেস্ট ড্র হওয়ায় এই টেস্টটিই হয়ে উঠেছে সিরিজ নির্ধারণী।
স্কোর কার্ড :
নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস : ৪৪৩/১০, ১৫২.৩ ওভার (পিটার ফুলটন ১৩৬, কেন উইলিয়ামসন ৯১, স্টিভেন ফিন ৬/১২৫)।
ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস : (২০৪/১০, ৮৯.২ ওভার, ম্যাট প্রিয়র ৭৩, জো রুট ৪৫, টেন্ট বোল্ট ৬/৬৮)।
নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস
পিটার ফুলটন ক রুট ব ফিন ১১০
হামিশ রাদারফোর্ড ক বেল ব ব্রড ০
কেন উইলিয়ামসন ব এন্ডারসন ১
রস টেইলর এলবিডব্লিউ ব ব্রড ৩
ডিন ব্রাউনলি ক বেল ব প্যানেসার ২৮
ব্রেন্ডন ম্যাককালাম অপরাজিত ৬৭
বি জে ওয়াটলিং ক কম্পটন ব প্যানেসার ১৮
অতিরিক্ত (বা-৪, লে বা-১০) ১৪
মোট (৬ উইকেট, ডিক্লে. ৫৭.২ ওভার) ২৪১
উইকেট পতন : ১/৪ (রাদারফোর্ড), ২/৫ (উইলিয়ামসন), ৩/৮ (টেইলর), ৪/৮২ (ব্রাউনলি), ৫/১৯৯ (ফুলটন), ৬/২৪১ (ওয়াটলিং)।
বোলিং : জেমস এন্ডারসন ১৭-৬-৫৯-১, স্টুয়াট ব্রড ১৭-৫-৫৪-২, স্টিভেন ফিন ১৩-১-৫৭-১, মন্টি
প্যানেসার ৯.২-৪-৫৩-২, জনাথন ট্রট ১-০-৪-০।
ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংস
অ্যালিষ্টার কুক ক ব্রাউনলি ব উইলিয়ামসন ৪৩
নিক কম্পটন ক ওয়াটলিং ব সাউদি ২
জনাথন ট্রট ক ওয়াটলিং ব ওয়াগনার ৩৭
ইয়ান বেল অপরাজিত ৮
স্টিভেন ফিন ক সাউদি ব উইলিয়ামন ০
অতিরিক্ত ০
মোট (৪ উইকেট, ৫২.১ ওভার) ৯০
উইকেট পতন : ১/২ (কম্পটন), ২/৬০ (ট্রট), ৩/৯০ (কুক), ৪/৯০ (ফিন)।
বোলিং : টেন্ট বোল্ট ১১-৫-২০-০, টিম সাউদি ১০-৩-২৪-১, ব্রুস মার্টিন ১৭-৬-৩৫-০, নিল ওয়াগনার ৮-৬-৬-১, কেন উইলিয়ামসন ৬.১-৪-৫-২। -বাসস