পোশাক কারখানার স্টাফবাস ও নছিমনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই মোট ৬ জন নিহত ও নারী-পুরুষ এবং শিশুসহ ১৩ জন গুরুতর আহত হয়েছে।
গতকাল সোমবার বেলা দুইটার দিকে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চন্ডীপাশা ইউনিয়নের বাঁশহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বাসের ধাক্কায় নছিমনটি দুই ভাগ হয়ে নান্দাইল-কেন্দুয়া সড়ক থেকে ৩০ গজ দূরে ছিটকে পড়ে। নিহতরা সবাই নছিমনের যাত্রী বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় স্থানীয় লোকজন। নিহত যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে তাঁরা হচ্ছেনঃ সাহারা খাতুন (৪৫), রেনু আরা (৩৫), আফরোজা (৪০), পারুল বেগম (৩২) ও নছিমন চালক আজিজুল ইসলাম সাধু (২৮)। গুরুতর আহত ছয়জনকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হতাহতরা সকলেই কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার কোদালিয়া গ্রামের বাসিন্দা বলে তাদের স্বজনরা জানিয়েছেন।
দুর্ঘটনার শিকার নসিমনটির পেছনে থাকা আর এক নছিমনের যাত্রী মালেকা খাতুন (৪৫) জানান, প্রায় ৫০ জনের একটি দল তিনটি নছিমনে চড়ে নেত্রকোনার মদনপুরে অবস্থিত হযরত শাহ সুলতানের (রঃ) মাজারে যাচ্ছিলেন। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বাস দ্রুত বেগে নছিমন বহরের প্রথমটিতে আঘাত করে। এতে নছিমনটি দুইভাগ হয়ে সড়ক থেকে ছিটকে পড়ে। স্থানীয় লোকজন জানায়, ঘাতক বাসটি বাঁশহাটিতে অবস্থিত 'টার্গেট নিট' নামে একটি সুয়েটার কারখানার। চালকের অনুপস্থিতিতে সহকারী বাসটি চালাচ্ছিলেন বলে জানা যায়। প্রত্যক্ষদর্শী হেলালউদ্দিন (২৫),দুলাল মিয়া (২৮) বলেন, জমিতে কাজ করার সময় বিকট শব্দ শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে এসে আহতদের উদ্ধার করি। পরে দুর্ঘটনাস্থলে ছুটে এসে উদ্ধার কাজে অংশ নেয় বাঁশহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে আসার পর কান্নার রোল পড়ে যায়। চিকিত্সকের ছুটাছুটি আহতদের চিত্কারে হাসপাতালে স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত হলে নান্দাইল মডেল থানা থেকে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহত যাত্রীদের মৃতদেহ হাসপাতালের বারান্দায় রাখা হয়। নান্দাইল উপজেলা হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবুল কাশেম জানান, গুরুতর আহত ছয়জনকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে যাদের চিকিত্সা দেয়া হয়েছে বাদল মিয়া (২৩), লতিফ (৪৫), কবিতা (৪০), স্বপ্না (২০), হেলেনা (৪৫), ইয়াছিন (৯), তাছিন (২), শান্ত (৬), সুফিয়া (৩৫), রহিমা (৫৫), তাজিন (৩), নার্গিসসহ (৩০) কয়েকজনকে।
গতরাতে নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) খন্দকার জাকির হোসেন জানান, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় পাকুন্দিয়া উপজেলার শৈলজানি গ্রামের বাদল মিয়ার ছেলে পাপ্পু মিয়া (১৬) নামে আরো একজন মারা গেছে।