তখনও নগরীর কর্মব্যস্ততা শুরু হয়নি। কেবল রাস্তায় আসতে শুরু করেছে স্কুল, কলেজ আর অফিসগামী মানুষ। এমন নীরবতাকে ভেঙ্গে ঢাকের বাদ্য শুরু হয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। চারদিক কম্পিত করে ঢাকি জানন দিল আজ বছরের শেষ দিন। বর্ষবরণ করার আগে আবহমানকাল থেকে এইদিনে বাঙালি চৈত্র সংক্রান্তি উত্সব করে। গ্রামে-গঞ্জে এই উত্সব প্রচলিত থাকলেও ঢাকা শহরে এবারই প্রথম জাতীয়ভাবে পালন করা হয়েছে চৈত্র সংক্রান্তি উত্সব।
গতকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দিনব্যাপী আয়োজন করা হয় এই উত্সবের। সকালে নানা রঙের বেলুন উড়িয়ে উত্সব সূচনা করেন রাজনীতিবিদ কবি নূহ উল আলম লেনিন। পরে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ফিরে আসে। জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যদিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। বক্তব্য রাখেন নূহ উল আলম লেনিন, কবি আজিজুর রহমান আজিজ, উত্সব কমিটির আহ্বায়ক ড. আবুল আজাদ, কবি ড. মুহাম্মদ সামাদ, শিল্পী বুলবুল মহলানবীশ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক মুস্তাফা নূরউল ইসলাম। অসুস্থতার জন্য তিনি উপস্থিত হতে না পারলেও উত্সবের সাফল্য কামনা করে তিনি পাঠান শুভেচ্ছা বাণী। বক্তারা জনশূন্য অনুষ্ঠানের কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, প্রথমবার আমরা বীজ পুঁতেছি। এই বীজ একদিন লোকসমাগমে মহিরুহে পরিণত হবে, একদিন এই অনুষ্ঠানে এত লোক হবে এই স্থানে জায়গা সঙ্কুলান হবে না। তারা ১৯৬৮ সালে প্রতিবাদের নিমিত্তে শুরু হওয়া বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের কথা উল্লেখ করে বলেন, উত্সবগুলো সার্বজনীন হওয়ায় আমাদের জীবনে ভিন্ন এক মাত্রা যোগ করে। দিনদিন আকর্ষণ বাড়ে, নতুন প্রজন্মের সাথে আমাদের শিকরের পরিচয় করিয়ে দেয়। পরে কবিতা আবৃত্তির মধ্যদিয়ে সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। লোকজ সাংস্কৃতির নানা অনুসঙ্গ যেমন বানর নাচ, লোকসঙ্গীত, জাদু প্রদর্শনী থাকে এই অংশে। বেলা গড়ানোর সাথে সাথে অনুষ্ঠানে লোকসমাগম বাড়তে থাকে। উল্লেখ্য, সাউথ এসিয়ান মিউজিক ইনস্টিটিউট, মুক্তিযুদ্ধ একাডেমি, রাইটার্স ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, শরীফ ফাউন্ডেশনও ইউনিভার্সাল থিয়েটার সম্মিলিতভাবে এই উত্সব আয়োজন করে।