গেমসের দুনিয়াতে অ্যাংরি বার্ডস বিশাল পরিসরজুড়ে রয়েছে। ফিনিশ কম্পিউটার গেমস ডেভেলপার রোভিও মোবাইল অ্যাংরি বার্ডস গেমের উদ্ভাবক। অ্যাংরি বার্ডস গেমসের আইডিয়া প্রথম মাথায় আসে রেভিওর সিনিয়র গেমস ডিজাইনার জাক্কো লিসালোর মাথায়। পপ ক্যাপ এবং অ্যাংরিবার্ডস গেমের জনপ্রিয়তার পেছনে রয়েছে এই কোম্পানিটি। জ্যাকো জ্যাসনকে নিয়ে লিখেছেন প্রাঞ্জল সেলিম
সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে গেমটি নির্মাণ করা হলেও বর্তমানে এই গেমের পেছনে কাজ করছে প্রায় চারশত কর্মী। এ গেমের বেশির ভাগ অংশই বিনামূল্যে খেলা সম্ভব কিন্তু বেশি লেভেল আপ হয়ে গেলে তখন আর বিনামূল্যে খেলা যায় না, কোম্পানির কাছ থেকে কিনে নিতে হয়। আমেরিকার বিভিন্ন দোকানগুলোতে এ গেম পাওয়া যায়। পপক্যাপ গেমসের ফ্ল্যাগশিপ নামের গেমটি মার্কেটে আসার সাথে সাথে ৫০ মিলিয়নের মতো বিক্রি হয়ে যায়। প্রায় সকল মেজর প্ল্যাটফর্মেই গেমটি রয়েছে। এ গেমটি ওয়েবে পাওয়া যায়, পিসি, প্লে স্টেশন, এক্স বক্স. গেম বয় এমনকি মোবাইল ফোনগুলোতেও পাওয়া যায়। মোবাইলে খেলার জন্য এগুলোতে জাভা সাপোর্টের ব্যবস্থাও আছে। ২০১০ সালে এই গেমের মোবাইল সংস্করণ বের করা হয়। বর্তমানের মোবাইল ফোনগুলোর অ্যান্ড্রয়েট সিস্টেমে চলার মতো করে তৈরি করা হয়েছে এই গেমটি। ২০০০ সাল থেকে ২০০৭ সাল
এ সময়ের মধ্যে সত্যিকারের হিট গেমসের তালিকায় ছিল গেমটি। তিন বন্ধু জন, ব্রেইন এবং জ্যাসন মিলিতভাবে ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন এই গেমস কোম্পানি। শুধু তাই নয়, সেই সময় থেকেই সফলতার সাথে সুনাম অর্জন করে যাচ্ছে এ কোম্পানিটি। প্রথমে তারা অনলাইন গেমিং সাইট তৈরি করার পরিকল্পনা করেছিল, পরবর্তীতে সে ধারণা থেকে সরে গিয়ে গেম মার্কেট দখল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর এ সিদ্ধান্ত যে ভালো ছিল না তা কিছুদিনের মধ্যেই প্রমাণ হয়ে যায়। মার্কেটে আসা তাদের প্রথম গেমটি ছিল, বিজিওয়েল্ড। সত্যিকার অর্থে হিটিং গেমের তালিকায় আসে গেমটি। এরপর কম্পিউটার গেমের তালিকায় যোগ করে আরও একটি গেম 'ওয়ার্ল্ভ্র অব ফেইম'। গেমটি প্রথম ২০০২ সালে বাজারে আসে। এরপর ২০০৫ সাল নাগাদ তাদের এ কোম্পানি আরও বড় হয়। বিভিন্ন প্রোডাক্টে গেমগুলোকে নিয়ে আসা হয়। গেমস ডেভোলপিংয়ে বেশ ভালোই নাম করেন এ কোম্পানির নির্মাতা 'জ্যাক্কো'। এরপর এ কোম্পানি থেকে আরও আসে 'ফিডিং ফ্রাঞ্জি' নামের গেম, যা ইন্টারনেট গেমের জগতকে আরও সমৃদ্ধ করে তোলে। জনপ্রিয়তার কারণে এ গেমের ২য় ভার্সন নিয়ে আসা হয় আমেরিকার গেম মার্কেটে। সেটাও বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে। সেই সাথে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে একজন সফল বিজনেস ডেভেলপার। ২০০৬ সালের ২২ আগস্ট। ভালভ সফটওয়্যার নামে একটি সাইট খোলা হয়। এই সাইটটি শুধুমাত্র পপক্যাপ গেমসের জন্যই বানানো। সে বছর শেষদিকে পপক্যাপ গেমসের অনলাইন স্ট্রিম নামানো হয় এবং সব গেমস এতে আপ করে দেওয়া হয়। সবাই অনলাইনে গেমের অর্ডার দিতে পারে এবং কিছু লেভেল পর্যন্ত খেলতে পারে। বর্তমানে অনলাইন এবং অফলাইনে খেলা যায় এমন অসংখ্য গেম তৈরি করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে অ্যাংরি বার্ডস অনেক বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আর সেই প্রতিযোগিতার মুখে এসে পপক্যাপ গেমসও তাদের গেমটি আপডেট করেছে।
এখন পর্যন্ত অ্যাংরি বার্ডস গেমসের প্রায় ১২ মিলিয়নেরও বেশি কপি বিক্রি হয়েছে। ২০১০ সালের পর থেকে অ্যাংরি বার্ডসের ভক্তরা গেমটি খেলার পেছনে প্রতিদিন কম্পিউটারে প্রায় ১০০ মিলিয়ন মিনিট সময় ব্যয় করে। অ্যাংরি বার্ডসের ভক্তের তালিকায় আছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, ফুটবলার পল গ্যাসকোয়েন, সংগীতশিল্পী কাইলি মিনোগের মতো মানুষও। এই গেম বিভিন্ন রঙের পাখির কার্যকারিতা বিভিন্ন রকম। স্ক্রিনে স্পর্শ করলে নীল রঙের পাখিটি তিনটি ছোট পাখিতে পরিণত হয়, হলুদ পাখিটির গতি বেড়ে যায়, সাদা পাখির ডিম আর কালো পাখিটি নিজেই বিস্ফোরিত হয়।
২০০৯ সালে বিশ্বজুড়ে তখন সোয়াইন ফ্লুর প্রকোপ চলছিল, যার ভাইরাস ছড়ায় শূকর থেকে। ওই সময়ের পত্রপত্রিকায় এ-সংক্রান্ত খবর পড়ে রোভিও অ্যাংরি বার্ডসের শত্রু হিসেবে শূকরকে নির্বাচন করে।