তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ের অগ্রগতির অন্যতম
একটি ক্ষেত্র হলো ফ্রিল্যান্সিং আউটসোর্সিং। তরুণ প্রজন্মের বড় একটি
অংশ এখন নিজেদের পেশা হিসেবে বেছে নিতে শুরু করেছে ফ্রিল্যান্সিংকে।
যে কারণে ধীরে ধীরে এই খাত থেকে আমাদের বৈদেশিক আয়ও তুলনামূলকভাবে বেড়ে চলেছে। দেশের অর্থনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে নিতে শুরু করেছে এই আউটসোর্সিং। আউটসোর্সিং কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) গত কয়েক বছর ধরেই বর্ষসেরা আউটসোর্সিং অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে আসছে। চলতি বছরে এই পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্য থেকে বিভিন্ন ক্যাটাগরির দশজনের কথা তুলে ধরেছেন
তরিকুর রহমান সজীব
সুলতানা পারভিন
চট্টগ্রামের সুলতানা পারভিন পড়ালেখা করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে। পত্র-পত্রিকার লেখা পড়েই ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে আগ্রহ জাগে। এমন সময় চট্টগ্রামে ফ্রিল্যান্সিং আউটসোর্সিং নিয়ে দুই দিনের একটি কর্মশালাতে যোগ দেন পারভিন। সেখান থেকেই ফ্রিল্যান্সার হয়ে ওঠার অনুপ্রেরণা লাভ করেন তিনি। এরপর এসইও শিখতে ভর্তি হয়ে যান দুই মাসের একটি কোর্সে। কোর্স চলাকালীন ওডেস্ক থেকে প্রথম কাজও পেয়ে যান। তারপর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। এখন ফুলটাইমার হিসেবেই করে যাচ্ছেন ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ। এসইও দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে ক্রিয়েটিভ রাইটিং এবং ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। তাতে সাফল্যও মিলছে। পারভিন নিজে যেমন ফ্রিল্যান্সিং করে স্বাবলম্বী হয়েছেন, তেমনি অন্যরাও যেন ফ্রিল্যান্সিংয়ে এগিয়ে আসেন, তার জন্য নানা ধরনের প্রচারণামূলক কর্মকাণ্ডেও জড়িত রেখেছেন নিজেকে। বিশেষ করে নারীদের জন্য ফ্রিল্যান্সিংকে অনেক বেশি উপযোগী মনে করেন তিনি। ফ্রিল্যান্সিংয়ে ভালো করতে চাইলে কোনো নির্দিষ্ট একটি কাজের ক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়ানোর সাথে সাথে ইংরেজিতে দক্ষতার ওপর জোর দেওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য তার।
আব্দুল্লাহ আল মোহাম্মদ
শিক্ষাজীবন শেষ করেছেন রাজশাহীতে। উচ্চমাধ্যমিকের পর প্রকৌশল ডিগ্রি নিয়েছেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) থেকে। এরপর ঢাকায় একটি ডাচ-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত সফটওয়্যার ফার্মে কাজ করেছেন প্রায় ৪ বছর। সেখানে তার অনেক সহকর্মীই ফ্রিল্যান্সিং করতেন। তাদের দেখে উত্সাহিত হয়ে ছুটির দিনগুলোতে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করতে থাকেন আব্দুল্লাহ। ভালো করায় ধীরে ধীরে তার কাজের অর্ডার বাড়তে থাকে। একটা সময় এসে ফুলটাইম ফ্রিল্যান্সার হয়ে ওঠার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। বাড়ির প্রতিও টান ছিল শুরু থেকেই। সবমিলিয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নেন রাজশাহীতে ফিরে ফুলটাইম ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করার। এরপর থেকে রাজশাহীতেই রয়েছেন আব্দুল্লাহ আল মোহাম্মদ। মূলত ওয়েব অ্যাপস ডেভেলপমেন্টের কাজ করেন আব্দুল্লাহ। ফুলটাইম ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি চিন্তা রয়েছে নিজের একটি সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ফার্ম গড়ে তোলার। এখনো খুব ছোট পরিসরে এক বন্ধুকে সাথে নিয়ে শুরু করেছেন এর গোড়াপত্তন। ব্যক্তিস্বাধীনতা উপভোগের সুযোগ অনেক বেশি থাকায় ফ্রিল্যান্সিংকেই নিজের জন্য অনেক বেশি আদর্শ মনে করেন এই ফ্রিল্যান্সার।
জিএম তাসনিম আলম
বুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে পড়ালেখা করেছেন জিএম তাসনিম আলম। মোবাইল অ্যাপস ডেভেলপার হিসেবে চাকরিও শুরু করেন তিনি। তবে অফিসের অনেক সহকর্মীই ফ্রিল্যান্সিং করতেন। তাদের দেখাদেখি ২০১১ সালের মাঝামাঝিতে তাসনিম নিজেও ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেন। কিছুদিনের চেষ্টার পর প্রথম কাজ পান ওডেস্কে। তখন থেকেই কাজ করে যাচ্ছেন। একটা পর্যায়ে ফ্রিল্যান্সিংয়ে ভালো করতে থাকায় চাকরি ছেড়ে দিয়ে ফুলটাইম ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেন। আর এরপর তার চিন্তা মাথায় আসে নিজের উদ্যোগে একটু বড় কিছু করার। সেই চিন্তা থেকেই আরেক বন্ধুকে সাথে নিয়ে ধানমন্ডিতে ছোট পরিসরে শুরু করেছেন নিজেদের একটি কোম্পানি। তাসনিম এবং তার বন্ধু দুজনেই অ্যাপস ডেভেলপমেন্টের কাজ করেন। তবে এসব প্ল্যাটফর্মে আমাদের দেশে কাজ করা একটু কঠিন বলে মনে করেন তিনি। মোবাইল অ্যাপস ডেভেলপ করতে গিয়ে দামি দামি সব ডিভাইস কিনতে হয় যা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য বিনিয়োগে কঠিন হয়ে যায়। আমাদের দেশে ইন্টারনেটের মূল্যটাও শুরুর দিককার উদ্যোক্তাদের জন্য সমস্যা বলেই জানালেন তিনি।
রবিউল ইসলাম
লেখালেখিতে বরাবরই আগ্রহ ছিল রবিউল ইসলামের। তবে স্নাতক পর্যায়ে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) কাটানোর কারণে সেই লেখালেখির অভ্যাসই নিজের উপার্জনের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে রবিউল ইসলামের। কুয়েটের পরিবেশ ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য অত্যন্ত সহায়ক বলে অভিহিত করে রবিউল ইসলাম জানান, সেখানে অন্যান্যদের দেখাদেখি তিনিও শুরু করেন ফ্রিল্যান্সিং। ওডেস্কেই মূলত কাজ শুরু করেন তিনি। আর ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজে বেছে নেন নিজের পছন্দের লেখালেখিকে। মূলত আর্টিকেল রাইটিংয়ের কাজই করে থাকেন তিনি। মাঝে মাঝে এসইও'র কাজ করলেও এখন পুরো মনোযোগটাই দিচ্ছেন আর্টিকেল রাইটিংয়ে। কুয়েট থেকে পড়ালেখা শেষ করে এখন অবশ্য বুয়েটে মাস্টার্স করছেন। তাতে ফ্রিল্যান্সিংটা খানিকটা পার্টটাইম হিসেবেই করে যাচ্ছেন তিনি। তবে পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলে পুরো সময়টাই ফ্রিল্যান্সিংয়ে দিতে চান। ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজে শুরুতেই শিখে আসতে পারলে ভালো বলে মনে করেন তিনি। কেননা, কাজ না শিখে আসলে শুরুতে খুব অল্প দামের কাজ করতে হয়। এখান থেকে বেশি দামের কাজ পেতে অনেক বেশি সময় ও শ্রম দিতে হয়।
নূর মোহাম্মদ
পড়ালেখা করেছেন কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে। তবে আগে থেকেই আগ্রহ ছিল ওয়েব ডিজাইনের বিষয়ে। যে কারণে পড়ালেখা চলাকালীন একটি প্রতিষ্ঠানে ওয়েব ডিজাইনার হিসেবে চাকরিও শুরু করেন নূর মোহাম্মদ। আর চাকরি করতে গিয়েই ফ্রিল্যান্সিংও শুরু করেন তিনি। ফ্রিল্যন্সিংয়ে ভালো করতে থাকায় আর অফিসের চাপ বাড়তে থাকায় একটা পর্যায়ে এসে অফিসকে বিদায় জানান। এরপর ফুলটাইম হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেন তিনি। ওয়েব ডিজাইনের ওপর আলাদা করে কোনো ডিগ্রি নেই তার। নিজের আগ্রহে কিছুটা শেখা হয়েছিল, এরপর চাকরির অভিজ্ঞতা তার জন্য বড় একটি প্রাপ্তি হিসেবে কাজ করেছে। আর অনলাইনে নানা ধরনের টিউটোরিয়াল তো ছিলই। কাজ করেন মূলত ফ্রিল্যান্সার ডটকমে। ইল্যান্সেও কিছু কাজ করে থাকেন। এখন ফুলটাইম হিসেবেই কাজ করে যাচ্ছেন। তবে একা একা কাজ করার চাইতে দল নিয়ে কাজ করার দিকেই আগ্রহ তার। যে কারণে এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের কাজে পারদর্শীদের নিয়ে ১২ জনের একটি দলও গড়েছেন তিনি। ইচ্ছা আছে একটি কোম্পানি হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার। নতুন আগ্রহীদের কাজ শেখানোও চলছে তার। সবমিলিয়ে ফ্রিল্যান্সিংই তার ধ্যানজ্ঞান।
সায়মা মুহিব
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মেয়ে সায়মা মুহিব। থাকেন ঢাকাতেই। রাজধানীর সিটি কলেজ থেকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তার ফ্রিল্যান্সিংয়ের যাত্রার শুরু মূলত বিয়ের পর। তার স্বামী একজন ফুলটাইম ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করেন। তার কাছ থেকেই বলা যায় সায়মার ফ্রিল্যান্সিংয়ে হাতেখড়ি। এসইও এক্সপার্ট স্বামীর কাছেই শিখেছেন এসইওর কাজ। আর সাথে সাথে ইউটিউবের টিউটোরিয়ালও ছিল তার ভরসা। এখন অবশ্য ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্টের কাজও শিখছেন। ওডেস্কে কাজ করেন সায়মা। ফুলটাইম একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে দিনে প্রায় ১৫-১৬ ঘণ্টা কাজ করেন তিনি। আর ফ্রিল্যান্সিংয়ে সাফল্যের মূলমন্ত্র হিসেবেও মনে করেন—কঠোর পরিশ্রম। শুরুর দিকে কাজ পাওয়া একটু কঠিন হলেও ধৈর্য হারালে চলবে না। আর নিজ নিজ কাজের ক্ষেত্রে দক্ষতা তো থাকতেই হবে। ব্যক্তি উদ্যোগে বেশ কয়েকজনকে ফ্রিল্যান্সিংয়ের মৌলিক বিষয়গুলো শিখিয়েও চলেছেন সায়মা নিজের সীমাবদ্ধতার মধ্যেও। বিশেষ করে ঘরে বসেই করা যায় বলে মেয়েদের জন্য এটি পেশা হিসেবে আদর্শ হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
মাহফুজা সেলিম
ময়মনসিংহের মেয়ে মাহফুজা সেলিম ঢাকায় থাকেন বোনের কাছে। ময়মনসিংহ থেকে অনার্স করে এখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ঢাকার একটি কলেজে মাস্টার্স করছেন। গ্রাফিক্স ডিজাইনের প্রতি তার আগ্রহ ছিল শুরু থেকেই। তার বোনও তাকে সব কাজেই উত্সাহ প্রদান করতেন। নিজের আগ্রহ আর বোনের অনুপ্রেরণায় ২০১০ সালে তিনি গ্রাফিক্স ডিজাইনের ওর একটি কোর্স করেন। শুরুতে ইচ্ছা ছিল গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবেই ক্যারিয়ার গড়ে তোলার। ওই সময়েই এক বন্ধুর কাছে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানতে পারেন। ফ্রিল্যান্সার সেই বন্ধুর কাছেই প্রাথমিক পাঠ মাহফুজার। ২০১১ সালের জানুয়ারিতেই ওডেস্কে একটি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করেন ফ্রিল্যান্সিংয়ে। শুরুতে কাজ পেতে দেরি হলেও দমে যাননি তিনি। মূলত বাচ্চাদের বইয়ের ইলাস্ট্রেশনের কাজ বেশি করে থাকেন তিনি। তিনি মনে করেন, আমাদের দেশে এখনও অনেক ক্ষেত্রেই মেয়েদের বাইরে বেরিয়ে কাজ করাটা সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং হতে পারে তাদের জন্য আদর্শ একটি পেশা। তবে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষতা অর্জন করে তবেই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে হবে বলে পরামর্শ দেন তিনি।
আব্দুর রাজ্জাক
২০০২ সাল থেকে গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ করছেন আব্দুর রাজ্জাক। একটা সময়ে বড় একটি প্রতিষ্ঠানের চিফ ডিজাইনার হিসেবেও কর্মরত ছিলেন তিনি। এসময় ঢাকায় এসে দিনব্যাপী একটি ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন তিনি। সেই সেমিনার থেকেই আগ্রহের সূত্রপাত। এরপর ওডেস্ক, ইল্যান্স প্রভৃতি সাইট ভিজিট করতে থাকেন তিনি। ২০১১ সালে এনভার্টোতে যোগ দেন তিনি। শুরুতে কাজের ধরণ বুঝতে একটু সময় লাগলেও পরে আর সমস্যা হয়নি। ধীরে ধীরে পুরো সময়ই তিনি ব্যয় করতে থাকেন ফ্রিল্যান্সিংয়ে। ২০১২ সালে ফিরে যান নিজ শহর বগুড়ায়। সেখানে একা একা কাজ করে সামাল দিতে পারছিলেন না বলে এ বছরের শুরুতে সাথে আরেকজনকে যুক্ত করে নেন। গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের যারা ফ্রিল্যান্সিং করতে চান, তাদের জন্য আব্দুর রাজ্জাকের পরামর্শ, গ্রাফিক্সে পারদর্শী হওয়ার সাথে সাথে ইংরেজিতে দক্ষতা বাড়াতে হবে। নইলে বায়ারদের সাথে যোগাযোগে সমস্যা হয়। নিজে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন বলে শুরুতে বেশ সমস্যা হতো বলে জানান তিনি। তবে ধীরে ধীরে এগুলো কাটিয়ে উঠেছেন আব্দুর রাজ্জাক। আর সে কারণেই তিনি এখন দেশসেরা ফ্রিল্যান্সারদের একজন।
আনিসুল ইসলাম
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) থেকে ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক করেছেন আনিসুল ইসলাম। তিনি জানালেন, কুয়েটে ফ্রিল্যান্সিংয়ে প্রবণতা বেশি। কুয়েটের অবস্থান শহর থেকে খানিকটা দূরে হওয়ায় সেখানে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার বাইরে অন্যান্য কাজে যুক্ত হওয়ার সুযোগ কম। প্রযুক্তির এই যুগে তাই কুয়েটের শিক্ষার্থীরা শুরু থেকেই ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করে থাকেন। সেভাবেই সিনিয়র শিক্ষার্থীদের সহায়তায় দ্বিতীয় বর্ষ থেকেই ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ শুরু করেন আনিসুল। এসইও দিয়েই শুরু করেন তিনি। বড় ভাইদের কাছে এবং অনলাইন টিউটোরিয়ালের মাধ্যমেই তার কাজ শেখা। তবে এসব বিষয়ে বাংলা ভাষায় ভালো কনটেন্ট থাকলে তা আগ্রহীদের জন্য অনেক বেশি কাজের হতো বলে মনে করেন তিনি। সেই অভাব পূরণে নিজে অবশ্য কাজ করছেন। এসইও, অ্যাফিলিয়েটেড মার্কেটিংসহ অনলাইন মার্কেটিংয়ের বাংলা কনটেন্ট তৈরির কাজে হাত দিয়েছেন আনিসুল। যে কয়েকজন মিলে একসাতে কাজ করতেন, তাদের নিয়েই গত বছরের শেষের দিকে ফরচুন টেক নামে কোম্পানি হিসেবে কাজ করছেন এখন। নতুনদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ধৈর্য ধরে এগিয়ে যেতে পারলেই মিলবে সাফল্য।
জুয়েল রানা
পাবনার ছেলে জুয়েল রানার লেখাপড়া ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। ২০০৬ সালে পড়ালেখা শেষ করে চাকরি শুরু করেন। ২০০৯ সাল থেকে শুরু করেন ফ্রিল্যান্সিং। এখন কাজ করছেন ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে। চাকরিও করেছেন সফটওয়্যার ডেভেলপার হিসেবে। ফলে নিজের পড়ালেখা আর বাস্তব কাজের অভিজ্ঞতার পুরোটাই এখন কাজে লাগছে ফ্রিল্যান্সিং করতে গিয়ে। ফ্রিল্যান্সিং শুরুর ছয় মাসের মধ্যেই চলে যান বাড়িতে। সেখানেই এখন নিজের পুরোটা সময় দিচ্ছেন ফ্রিল্যান্সিংয়ে। সেখানে আগ্রহীদের ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে ধারণাও দিচ্ছেন তিনি। তবে বাড়িতে যাওয়ার পর প্রথম দিকে কষ্ট করতে হয়েছে। ইন্টারনেটের সংযোগ ধীরগতি হওয়ায় কাজ করতে অসুবিধা হতো তার। আর সবচেয়ে বড় সমস্যা হতো আশপাশের মানুষদের নিয়ে। ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে তাদের ধারণা পরিষ্কার না হওয়ায় প্রচুর কথা শুনতে হয়েছে বলে জানান জুয়েল রানা। এখন অবশ্য আগ্রহীরা ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানতে আসে তার কাছেই। ভবিষ্যতে তার ইচ্ছা এলাকায় একটি টিম করে কাজ করার। তবে বর্তমানে যে ধরনের ইন্টারনেটের গতি পান এলাকায়, তাতে এই বাস্তবতা অনেক দূরের বলে মনে হয় জুয়েল রানার।
নারায়ণগঞ্জে ৭ খুনের ঘটনায় র্যাবের মহাপরিচালক মোখলেছুর রহমান বলেছেন, 'র্যাবের কেউ জড়িত থাকলে তাকে রক্ষার চেষ্টা করব না, বিভাগীয় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেয়া হবে।' তিনি কি এ প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারবেন?