অবকাঠামোগত সমস্যা, আইনের জটিলতা এবং দুর্বল তদারকির পাশাপাশি সুষ্ঠু নীতিমালার অভাব সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) বিনিয়োগ না বাড়ার কারণ বলে মনে করছেন শিল্প উদ্যোক্তারা। গতকাল শনিবার দুপুরে ঢাকা চেম্বার আয়োজিত এক গোল টেবিল বৈঠকে শিল্প উদ্যোক্তারা বলেছেন, প্রকল্পভিত্তিক কার্যকর পরিকল্পনা না থাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অংশীদারিত্বের নিশ্চয়তা কম। তাই শিগগিরই পিপিপি নীতিমালা পাস হওয়া প্রয়োজন।
গতকাল ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) মিলনায়তনে 'পিপিপি ইন বাংলাদেশ' বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ডিসিসিআই সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব আবুল কালাম আজাদ, ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম এবং পিপিপির প্রধান নির্বাহী সায়ীদ এ এইচ উদ্দীনসহ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ।
ডিসিসিআই সভাপতি মো. শাহজাহান খান বলেন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে পিপিপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তবে এই খাতের উন্নয়নের জন্য আগে সংসদে পিপিপি আইন পাস হওয়া দরকার। এছাড়া বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ, বিনিয়োগের নিশ্চয়তা ও বিনিয়োগ জটিলতা দূর করার পরামর্শ দেন তিনি।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পিপিপির প্রসারতা থাকলেও নানা কারণে বাংলাদেশে এতে বিনিয়োগ বাড়ছে না। বিভিন্ন ঝুঁকির কথা চিন্তা করে পিপিপিতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, সরকার এই খাতে ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগে আগ্রহী করার প্রচেষ্টা করলেও প্রজেক্ট ভিত্তিক কার্যকর পরিকল্পনা ও বিশ্বাসের অভাবের কারণে উভয়ের মধ্যে দূরত্ব থেকেই যাচ্ছে। স্থানীয় পর্যায়ে ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের নিশ্চয়তা কম থাকায় বিনিয়োগ বাড়ছে না বলেও তারা উল্লেখ করেন। সেই সঙ্গে কর প্রদান জটিলতা ও প্রকল্প প্রক্রিয়াগত সময় বেশি হওয়ার কারণে আরও সমস্যা হচ্ছে বলে মনে করেন তারা।
ব্যবসায়ীদের এসব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, পিপিপিতে বিনিয়োগ বাড়াতে ব্যবসায়ীদের সরকার সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠা করছে সরকার। যেখানে ব্যবসায়ীরা শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন। দেশের বেসরকারি খাতের উন্নতি হলে বিদেশিরা এখানে বিনিয়োগে আরও আগ্রহী হবেন। তিনি বলেন, পিপিপি বাস্তবায়নের জন্য সরকার চেষ্টা করছে। তবে এখনও বিশ্বাসের অভাব রয়েছে। একদিনে এই বিশ্বাসের জায়গার পরিবর্তন হবে না। তবে খুব শিগগির অবস্থার পরিবর্তন হবে।