We use cookies to tailor your experience, measure site performance and present relevant advertisements. By clicking the 'ok' button, you agree that cookies can be placed in accordance with our
Privacy Policy.
সিলেট বিভাগ : শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজে অর্থনীতি, ব্যবস্থাপনায় কোন শিক্ষক নেই, জকিগঞ্জ সরকারি কলেজে বাংলা, হিসাব বিজ্ঞান, পদার্থ, রসায়ন ও জীববিজ্ঞানে কোন শিক্ষক নেই
নিজামুল হক
রাজধানীর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ। কলেজে পদার্থ, রসায়ন, উদ্ভিদবিদ্যা, প্রাণীবিদ্যা ও গণিত এই পাঁচ বিষয়ে ৩ জন করে শিক্ষকের স্থায়ী পদ ১৫টি। এর বাইরে বাংলা ও ইংরেজিতে ২টি করে মোট ৪টি। সেই হিসাবে কলেজে শিক্ষক থাকার কথা ১৯ জন। কিন্তু্তু কলেজটিতে শিক্ষক রয়েছেন পদের দ্বিগুণ, ৩৮ জন। শুধু উচ্চ মাধ্যমিক বিজ্ঞান বিষয় পড়ানো হয় এই কলেজে। শিক্ষার্থী ২৪শ।
কলেজটি ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে টেকনিক্যাল হাইস্কুল নামে যাত্রা শুরু করে। ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে ইন্টারমেডিয়েট টেকনিক্যাল কলেজ হিসেবে পুনঃনামকরণ হয়। ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে সরকারি বিজ্ঞান কলেজ হিসেবে কার্যক্রম শুরু করে। ২০০৯ সাল থেকে এই কলেজে বিজ্ঞান বিভাগের পাশাপাশি ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগটিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে ২০১৩ সনে তা আবার বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কলেজের উপাধ্যক্ষ উম্মে হাবিবা বলেন, শিক্ষকের পদ কম থাকায় বিপাকে আছি। এ কারণে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে শিক্ষক নিয়েছি। প্রতি বর্ষে ৮টি সেকশন হিসাবে দুই বর্ষে সেকশন ৮টি। কিন্তু ১৯ জন শিক্ষক দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আমরা শিক্ষকদের সংযুক্তি নিয়ে এনেছি। আবার কিছু শিক্ষক স্বেচ্ছায় সংযুক্তি নিয়ে এসেছেন।
বিজ্ঞান কলেজে শিক্ষক সংখ্যা দ্বিগুণ, অথচ সিলেট বিভাগের চিত্র ঠিক উল্টো। হবিগঞ্জ মহিলা কলেজে শিক্ষকের পদ ২২টি। শিক্ষক আছেন মাত্র ১২ জন। এক বছর ধরে রসায়নে কোন শিক্ষক নেই। উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রি মিলে এই কলেজটিতে আড়াইহাজারের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। কলেজের উপাধ্যক্ষ মো. নাজমুল হক জানান, শিক্ষক কম থাকায় বিপাকে রয়েছি, কীভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চালাবো?
শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজে শিক্ষকের পদ ৪৬টি। শিক্ষক আছেন ২৩ জন। অর্থনীতি, ব্যবস্থাপনায় একজন শিক্ষকও নেই। ইংরেজিতে ৩টি পদ থাকলেও শিক্ষক আছেন একজন। উপাধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ বলেন, শিক্ষকরা সংযুক্তি নিয়ে বড় কলেজে চলে যাচ্ছেন। এই সংযুক্তিই আমাদের সর্বনাশ নিয়ে এসেছে।
সুনামগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে ১৬ জন শিক্ষক থাকার কথা, আছেন ১২ জন। সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে ১০টি, মৌলভী বাজার সরকারি কলেজে ১৪টি শিক্ষকের পদ শূন্য আছে।
বৃন্দাবন সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষসহ শিক্ষকের পদ ৬৭টি। ১৩ হাজার শিক্ষার্থীর এই ক্যাম্পাসে পদের চেয়ে শিক্ষক কম রয়েছে ১২ জন। কলেজটিতে ১৪টি বিষয়ে অনার্স, ৫টি বিষয়ে মাস্টার্স পড়ানো হয়। অধ্যক্ষ অধ্যাপক বিজিত কুমার ভট্টাচার্য বলেন, শিক্ষার্থী বাড়ছে এ কারণে এ কলেজে শিক্ষকের পদ আরো বাড়ানো দরকার।
জকিগঞ্জ সরকারি কলেজ। কলেজটিতে বাংলায় একজন শিক্ষক ছিলেন। পাশাপাশি তিনি অধ্যক্ষের দায়িত্বেও ছিলেন। গতমাসে তিনিও তদ্বিরের জোরে ঢাকার উত্তরার একটি কলেজে বদলি হয়েছেন। এখন ওই কলেজে বাংলায় কোন শিক্ষক নেই। তাহলে বাংলায় কে পড়াবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বদলি হয়ে আসা শিক্ষক মাহবুবুল হক বলেন, এখন কলেজের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিবেন। শুধু বাংলা নয়, হিসাব বিজ্ঞান, পদার্থ, রসায়ন ও জীববিজ্ঞানে একজন শিক্ষকও নেই। কলেজটিতে ১১ জন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও আছেন ৬ জন।
কলেজের এক শিক্ষক জানান, এভাবে শিক্ষক না থাকায় বাণিজ্যের শিক্ষকদের পড়াতে হচ্ছে বিজ্ঞান আবার বিজ্ঞানের শিক্ষকদের পড়াতে হচ্ছে বাণিজ্য। শিক্ষার মান নিম্নগামী।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, শুধু শিক্ষা মন্ত্রণালয় নয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্তারা তদ্বির নিয়ে আসেন। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের একটি চক্র আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে বড় কলেজগুলোতে বদলি ও সংযুক্তি করিয়ে দেয়ার প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত বলে একাধিক কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন।
সিলেট বিভাগে ১৬৮টি সরকারি-বেসরকারি কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ ৩টি, ডিগ্রি (পাস) কলেজ ৪টি, ডিগ্রি (অনার্স) কলেজ ৫টি, মাস্টার্স কলেজ ২টি। বাকিগুলো বেসরকারি উদ্যোগে পরিচালিত।
শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদকে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা স্বীকার করে এর দায়-দায়িত্ব নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। আপনি কি তার দাবিকে যৌক্তিক মনে করেন?