আর মাত্র দুই দিন। পর্দা উঠবে বিশ্বকাপের। প্রথম ম্যাচেই সাও পাওলোতে ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে মুখোমুখি হবে স্বাগতিক ব্রাজিল। বিশ্বকাপ যখন এতোটাই শিয়রে দাঁড়িয়ে, তখনও দলটির স্ট্রাইকার ফ্রেড বলছেন তার দল এখনো শতভাগ প্রস্তুত নয়!
ব্রাজিল শতভাগ প্রস্তুত না; এমন একটা ধারণা ছড়িয়ে পড়ার কারণ হল, সার্বিয়ার বিপক্ষে তাদের সর্বশেষ ম্যাচের পারফরম্যান্স। ফ্রেডও মানছেন, এই পারফরম্যান্সের ফলেই তাদের মনে হচ্ছে, আরও প্রস্তুত হয়ে উঠতে হবে। কিন্তু সময় যে বেশি নেই হাতে। তবে এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ারও কিছু নেই বলেও বলছেন এই তারকা স্ট্রাইকার, 'আমরা আমাদের সমর্থকদের সঙ্গে প্রতারণা করবো না। সত্যি বলতে আমরা এখনো শতভাগ ফিট নই। তবে প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হওয়ার মতো আমরা যথেষ্ট ভাল অবস্থায় আছি। একবার শুরু হয়ে গেলে, পুরো টুর্নামেন্টেই আমরা উন্নতির পথ ধরে হাঁটবো।'
নিজেদের মাঠে বিশ্বকাপ। সঙ্গে থাকছে ফেভারিটের তকমা। লুইস ফিলিপ স্কোলারির শিষ্যদের প্রত্যাশার চাপ থাকাটাই স্বাভাবিক। এরমধ্যে গত শুক্রবার সার্বিয়ার বিপক্ষে তাদের প্রস্তুতি ম্যাচটাও তেমন ভাল হয়নি। ফ্রেডের একমাত্র গোলে ১-০ গোলের কষ্টের জয় পেয়েছে তারা। এই জয়ে সন্তুষ্ট হতে পারেনি ব্রাজিলের ভক্তরা। তবে বিশ্বকাপের আগে ছোটখাটো এসব সমস্যাগুলো ব্রাজিল কাটিয়ে উঠতে পারবে জানালেন ফ্রেড, 'তারা (সার্বিয়া) গত দু'টি সপ্তা অনেক ভাল সময় পার করেছে। তাদের প্রস্তুতিও অনেক ভাল ছিল। তাছাড়া ম্যাচটিতে আমাদেরও কিছু ভুল ছিল। এটা ভাল যে, ভুলগুলো আগেই ধরা পড়েছে। শুধরে ধরে নেয়ার সময় পাচ্ছি আমরা।'
ফ্রেডের মতোই ব্রাজিলের শুধরে ওঠাটা সময়ের ব্যাপার মাত্র বলে মনে করেন দলটির কিংবদন্তি স্ট্রাইকার রোনালদো। তিনি বলছেন, এই বিশ্বকাপ হবে মাঠে ও খেলোয়াড়দের নিজেদের তুলে ধরার এক দারুণ সুযোগ। আর এই সুযোগ কাজে লাগাতে নেইমার তৈরি বলে মনে করছেন বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ এই গোলদাতা, 'তরুণ নেইমার অসাধারণ ভাল খেলোয়াড়। প্রথম বিশ্বকাপে আমি যেমন ছিলাম, নেইমারকে দেখতে অনেকটা সে রকমই মনে হয়। যদিও আমি নিজেকে এখনো তরুণ ভাবি। পার্থক্য শুধু এখন আর খেলি না।' শান্ত প্রকৃতির নেইমার সব ধরনের চাপ সামলাতে পারবেন বলে জানালেন বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি গোলের মালিক রোনালদো, 'আমি নিশ্চিত যে, সে অনেক শান্ত প্রকৃতির। চাপটাও সে ভাল করেই সামলাতে পারবে। এরই মধ্যে নেইমার বেশ ক'বার নিজের পরিচয় দিয়েছে। তাকে নিয়ে আমাদের উচ্চাশা রয়েছে। সে এবারের বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় হবে এবং ব্রাজিল হবে চ্যাম্পিয়ন।'
আর সবকিছু মিলিয়ে এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে এসে অসাধারণ একটা বিশ্বকাপ উপহার দেয়ার ব্যাপারে আশাবাদী ব্রাজিলের বর্তমান দলের আরেক তারকা মার্সেলো। তিনি মনে করছেন, এবার তাদের বিশ্বকাপে ভালো করার বড় কারণ হবেন দেশের লাখো লাখো ফুটবল ভক্ত, 'কনফেডারেশন্সকাপে যখন ভক্তরা আমাদের জাতীয় সংঙ্গীত গাচ্ছিল, তখন আমাদের কাছে গোল উদযাপনের মতো অনুভূতি হচ্ছিল। তাদের সমর্থন দারুণভাবে উজ্জীবিত করেছিল আমাদের। বিশ্বকাপেও আমরা তাদের কাছে এমনটাই প্রত্যাশা করছি।'