তিন মেয়র প্রার্থীর মতই তাদের সহধর্মিণীরা স্বামীদের ভোটের জন্য ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন। তিনজনই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভোটারদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন। মেয়র প্রার্থী হিসাবে স্বামীরা তাদের চোখে কেমন এবং নির্বাচনী প্রচারণায় কি ভূমিকাই বা রাখছেন তারা—আলাপচারিতায় সে কথাই তুলে ধরেছেন তিনজনঃ
জেবুন্নেছা আফরোজ ঃ সদ্য বিদায়ী সিটি মেয়র শওকত হোসেন হিরনের স্ত্রী জেবুন্নেছা আফরোজ অনেক আগে থেকেই এখানকার সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। স্বামী শওকত হোসেন হিরন মেয়র থাকাকালীন অবস্থায় তিনি সদর গার্লস স্কুলে সাবেক ছাত্রীদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানসহ নানান ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। বর্তমানে স্বামীর জন্য ভোট চাইতে ভোটারদের কাছে তিনি তার সেই পুরনো সমাজসেবক পরিচয়েই হাজির হচ্ছেন। জেবুন্নেছা আফরোজ ইত্তেফাককে জানান, তার স্বামী হিরন মেয়র থাকাকালীন অবস্থায় বরিশাল শহরে যে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হয়েছে তা ৩৭ বছরে কেউ করতে পারেনি। জেবুন্নেছা আফরোজের মতই শওকত হোসেন হিরন অল্প সময়ে মানুষকে আপন করে নিতে পারেন। এ কারণেই নগরবাসীর মনে ঠাঁই করে নিয়েছেন তার স্বামী শওকত হোসেন হিরন। জেবুন্নেছা আফরোজ বলেন, শুধু নারী ভোটার নয় পুরুষ ভোটারদের কাছেও তিনি একইভাবে ভোট চাইছেন। নারী ও পুরুষ ভোটারের কাছে সমান জনপ্রিয় শওকত হোসেন হিরন। স্বামী হিরনের বিজয়ের ব্যাপারে অনেকটা নিশ্চিত জেবুন্নেছা আফরোজ। তিনি ইত্তেফাককে জানান, তার স্বামী শওকত হোসেন হিরনকে ভোট না দিলে নগরবাসী ভুল করবে। বিজয়ী হলে হিরন এই নগরীকে আরো আধুনিক করে গড়ে তুলতে পারবেন—স্বামীর ওপর এমনই বিশ্বাস রয়েছে জেবুন্নেছার। একইভাবে ভোটারদের প্রতিও তার অগাধ বিশ্বাস রয়েছে যে তারাও শওকত হোসেন হিরনের টেলিভিশন প্রতীকে আগামী ১৫ জুন ভোট প্রদান করবেন।
অধ্যাপক হোসনেয়ারা কামাল ঃ
মেয়র প্রার্থী আহসান হাবীব কামালের স্ত্রী অধ্যাপক হোসনেয়ারা কামাল প্রতিদিন মজিবর রহমান সরোয়ারের স্ত্রী মহিলা দলনেত্রী নাসিমা সরোয়ারকে সাথে নিয়ে নগরীর বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ করছেন। তিনি জানান, তার স্বামী ইতিপূর্বে বরিশাল পৌরসভার ওয়ার্ড কমিশনার, পৌর মেয়র, পৌর প্রশাসক ও সর্বশেষ মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন। স্বামী আহসান হাবিব কামালের আমলেই পৌরসভা থেকে সিটি কর্পোরেশনে রূপ নেয় বরিশাল নগরী। শুরুতে নবগঠিত সিটি কর্পোরেশনের জন্য তেমন বাজেট থাকত না। তবে পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন পরিচালনা করে নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করার মতো যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা রয়েছে হোসনেয়ারার স্বামীর। এমনটা তিনি নিজে যেমন মনে করছেন তেমনি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে তাদের সে কথা বোঝানোর চেষ্টা করছেন। হোসনেয়ারা বেগম ইত্তেফাককে জানান—বর্তমান সরকারের ব্যর্থতার কারণে এবং বরিশালের জাতীয়তাবাদী দলের সমর্থকদের সহযোগিতায় তার স্বামী বিজয়ী হবেন।
লাইজু খান:স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদুল হক খান মামুনের স্ত্রী লাইজু খান প্রতিদিন ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথেই স্বামীর জন্য বেরিয়ে পড়েন গণসংযোগে। পাড়া-মহল্লার অলি-গলিতে ভোটারদের বাসা-বাড়ি থেকে শুরু করে সর্বত্র চষে বেড়ানোর পর বাসায় ফিরে সংসারের ধকল সামলাতে হয় এই গৃহিণীকে। তিনি বললেন, তার স্বামী মাহমুদুল হক খান মামুন সত্, শিক্ষিত এবং যোগ্য প্রার্থী। অপর দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মত কোন দুর্নীতির অভিযোগ নেই মাহমুদুল হক খানের বিরুদ্ধে। সত্ লোক হিসাবে মামুনকে নগরবাসী তাদের মেয়র নির্বাচিত করবেন এমনটাই মনে করছেন মামুনের স্ত্রী লাইজু খান।