'সোয়াট'। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একটি টিম। যার বিস্তৃত নাম 'স্পেশাল উইপন্স অ্যান্ড ট্যাকিটক্স্'। আমেরিকার সোয়াট টিমের আদলে তৈরি। তাদেরই অর্থায়নে, তাদেরই ট্রেনিংয়ে এবং তাদেরই সব অস্ত্র ও যন্ত্রে সজ্জিত এই টিম।
টিমের যাত্রা শুরু ২০০৮ সালে। তাদের কাজের ধরন পুরোপুরি উদ্ধার-কেন্দ্রিক। সোয়াট টিমের মোট সদস্য ৪০। কিন্তু যাত্রা শুরুর পর থেকে চলছে ট্রেনিং আর ট্রেনিং। সাফল্য বলতে এখন পর্যন্ত কোন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেফতারে যেতে পারেনি এই টিম। সোয়াট কর্মকর্তাদের কথায়ঃ নেই কোন সাফল্য। পহেলা বৈশাখ, ২১ ফেব্রুয়ারি, স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার নামে এই টিমকে দিয়ে রাজধানীতে শো-ডাউন করা হয়। সর্বশেষ এ টিমকে র্যাপলিং (আকাশ থেকে দড়ি ধরে নিচে নামা) প্রশিক্ষণের দেয়া হয়েছে। আর প্রশিক্ষণের মহড়া হয়েছে গতকাল মঙ্গলবার সিলেটের জালালা-বাদ সেনানিবাসে। হেলিকপ্টার থেকে নেমে আসার মহড়ায় অংশ নেন দুইজন নারীসহ ১২ জন পুলিশ সদস্য। গত দুই সপ্তাহ ধরে সেনানিবাসের স্কুল অব ইনফ্যান্ট্রি অ্যান্ড ট্যাকিটসে প্রশিক্ষণ নেন পুলিশের এই সদস্যরা।
সোয়াট টিমের প্রধান এডিসি ডিবি আশিকুর রহমান জানান, ৫ জন সহকারী কমিশনার, পাঁচজন সাব-ইন্সপেক্টর ও ১০ জন কনস্টেবল এ প্রশিক্ষণে অংশ নেন। র্যাপলিং প্রশিক্ষণের ব্যাপারে তিনি বলেন, সোয়াট সদস্যদের দক্ষতা আরও এক ধাপ বৃদ্ধি পেল। প্রশিক্ষণের পর প্রশিক্ষণ, কিন্তু সফলতা কী এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এক অর্থে কোন সফলতা নেই। সোয়াট টিমের অপর একজন সদস্য সাফল্য সম্পর্কে বলেন, একের পর এক প্রশিক্ষণ নিয়ে আমরা দক্ষ হচ্ছি। সুযোগ আসলে তা ব্যবহার করা হবে। তবে সোয়াটের যাত্রা শুরুর পর থেকে ফেনসিডিল, গাঁজা উদ্ধার, গাড়ি চোর ধরার কাজেই সোয়াট ব্যবহার করা হচ্ছে। ডিবির আরেকটি সূত্র জানায়, সম্প্রতি এক ব্যক্তির কাছ থেকে পাওনা ৫ লাখ টাকা আদায় করতে সোয়াট টিমকে ব্যবহার করা হয়। পাওনা টাকা উদ্ধার করতে অভিযুক্ত ঐ ব্যক্তিকে বাড়ি থেকে জোর করে উঠিয়ে নেয়া হয় ডিবি কার্যালয়ে। পরে পাওনা টাকা পরিশোধ করার পরই ঐ ব্যক্তিকে ছেড়ে দেয় সোয়াট টিম। এরকম আরো অনেক ব্যক্তিগত অভিযোগ সমাধান করতে এখন সোয়াট টিমকে ব্যবহার করা হচ্ছে।
সোয়াটের র্যাপলিং মহড়া দেখার পর ডিএমপি কমিশনার বেনজীর আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ এখন বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এজন্য পুলিশকে সব ধরনের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। আর এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যে কোন পরিস্থিতিতে উদ্ধার কাজের জন্য হেলিকপ্টার থেকে ঘটনাস্থলে নামা এবং আটকেপড়া মানুষকে বের করে আনার পাশাপাশি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো সম্ভব হবে তিনি জানান।