শিক্ষার্থীদের হামলা ও ভাংচুরের পর নোবিপ্রবি বন্ধ ঘোষণা
১০ ছাত্র বহিষ্কার, ভিসিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
নোয়াখালী প্রতিনিধি
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এপ্লায়েড কেমিস্ট্রি এন্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দুই শিক্ষককে ১৮ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখা ও শিক্ষকদের সাথে অশোভন আচরণের ঘটনায় এ বিভাগের দশ ছাত্রকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার ও দুই ছাত্রকে জরিমানার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল মঙ্গলবার বিকালে প্রশাসনিক ভবনে শিক্ষার্থীরা হামলা ও ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে। একইসাথে মঙ্গলবার রাত ১০টায় সব ছাত্রকে এবং আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার মধ্যে ছাত্রীদের হলত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শিক্ষক সমিতি ভিসি প্রফেসর সাঈদুল হক চৌধুরীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা ও তার পদত্যাগ দাবি করেছে।
গতকাল বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কার ও জরিমানার বিষয়টি জাননো হয়। এতে জানানো হয় যে, সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এপ্লায়েড কেমিস্ট্রি এন্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের নাম ও বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত ডিগ্রির নাম পরিবর্তন করা হবে না। ৩০ জুন এ বিভাগের শিক্ষার্থীদের সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে সকল শিক্ষা ও পরীক্ষা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে বিভাগীয় একাডেমিক কার্যক্রম চালু না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের হল ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দুই বছরের জন্য বহিষ্কৃত ছাত্ররা হলেন মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, আবদুস সোবহান খান, খালেদ মোহাম্মদ সাইফুল্লা। দেড় বছরের জন্য বহিষ্কৃত দেবাশীষ সরকার, এসএম জুলকার নাঈম, মোহাম্মদ ফারুক, আশেকিন দেওয়ান, দোছ মোহাম্মদ। এক বছরের জন্য বহিষ্কৃত সন্দীপ দাস ও দিদারুল আলম এবং এক হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে মীর হোসেন ও হোসনে মোবারককে। বহিষ্কার ও হলত্যাগের নির্দেশের খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে বিকাল সোয়া চারটার দিকে সংশ্লিষ্ট বিভাগের ছাত্ররা প্রশাসনিক ভবনে হামলা চালিয়ে ভিসির অফিসসহ বিভিন্ন কক্ষে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় এবং ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে শ্লোগান দেয়। এ সময় ইটের আঘাতে কাঁচ ভেঙে তিন শিক্ষক আহত হয়েছেন বলে রেজিস্ট্রার প্রফেসর মমিনুল হক নিশ্চিত করেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম জানান, আন্দোলনকারী ছাত্রদের বুঝিয়ে সন্ধ্যার পর পরিস্থিতি শান্ত করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. সফিকুল ইসলাম জানান, শিক্ষকরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা বাস্তবায়ন করা না হলে পাঠদান বর্জন অব্যাহত থাকবে। কারণ শিক্ষকরা ভিসিকে বিশ্বাস করতে পারছেন না। ভিসিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে ও তার পদত্যাগের দাবি করছি।
গত দুই মাস উল্লিখিত বিভাগের শিক্ষার্থীরা তিনদফা দাবি আদায়ে কয়েকবার একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয় এবং হামলা চালায়। এর জের ধরে গত শনিবার দুই শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে শিক্ষার্থীরা।