বরেন্দ্র অঞ্চলে কৃষি উন্নয়নে অবদান বাড়ছে আদিবাসী নারীর। রাজশাহীর গোদাগাড়ী, তানোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল, গোমস্তাপুর, নঁওগার মহাদেবপুর, নিয়ামতপুর উপজেলাসহ বরেন্দ্র অঞ্চলের বসবাসকারী ৩০ হাজারের বেশি আদিবাসী নারী কৃষিকাজে জড়িত রয়েছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই নারী অন্যের জমিতে কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে। তবে নারী শ্রমিকরা মজুরি বৈষ্যমের শিকার হচ্ছে। আদিবাসী নারী শ্রমিকরা জানান, বংশ পরম্পরায় আদিবাসী নারীরা কৃষিকাজ করে আসছে।
আদিবাসী নারীরা অন্যকোন কাজ করতে না পারায় প্রধান পেশা হিসেবে কৃষিকাজকে বেছে নিয়েছে। দক্ষতার সঙ্গে কাজ করায় কৃষিকাজে নারী শ্রমিকদের চাহিদা রয়েছে। পুরুষদের চেয়েও নারী শ্রমিকরা ভাল কাজ করলেও নারীদেরকে মজুরি প্রদান করা হয় কম। একজন পুরুষ শ্রমিক সমান কাজ করে ২০০ টাকা মজুরি পেলেও নারী শ্রমিকদেরকে দেয়া হয় ১২০ থেকে ১৩০ টাকা করে। গোদাগাড়ী কৃষি কর্মকর্তা ড. সাইফুল আলম বলেন, গোদাগাড়ী উপজেলায় ১০ হাজারের বেশি নারী কৃষি শ্রমিক রয়েছে। গত ৩ বছরে প্রায় ১ হাজার নারী শ্রমিকের প্রশিক্ষণসহ কৃষিবিষয়ক বিভিন্ন কর্মশালায় অংশগ্রহণ করে। কৃষি বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে নারী শ্রমিকরা অন্যের জমিতে কাজ করার পাশাপাশি নিজেরাই দক্ষতার সঙ্গে ফসল চাষ করে সফল হচ্ছে।
সম্মিলিত আদিবাসী নারী জোটের সভাপতি কল্পনা তির্কী বলেন, এ আদিবাসীরা এ অঞ্চলের জঙ্গল সাফ করে সব জমিকে ফসলি জমিতে পরিণত করেছে। ধানসহ ফসল উত্পাদনে আদিবাসী শ্রমিকদের অবদান রয়েছে সবচাইতে বেশি। অথচ এই আদিবাসী শ্রমিকদেরকে বিভিন্নভাবে ঠকানো হয়। তিনি আদিবাসী নারীদের কৃষি শ্রমিক সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃতি প্রদানসহ ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এদিকে আদিবাসী নারীরা দীর্ঘ সময় ধরে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখলেও তাদের উন্নয়ন ঘটেনি।
এ প্রসঙ্গে জাতীয় আদিবাসী পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য বিমল চন্দ্র রাজোয়ার বলেন, আদিবাসীদেরকে সর্বপ্রথম সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে। এছাড়া আদিবাসী নারী শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণসহ তাদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা নিশ্চিত করার দাবি জানান।