ঈদের উত্সবে হাতে তৈরি সেমাই বানাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন রাজশাহী অঞ্চলের গ্রামের গৃহবধূরা। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাজারে হরেক রকম সেমাই পাওয়া যায়; কিন্তু রাজশাহী অঞ্চলের গৃহবধূরা বাজারের সেমাইয়ের সঙ্গে মেয়ের জামাই বাড়িতে চাল ও গমের আটা দিয়ে হাতে তৈরি সেমাই পাঠানোর প্রস্তুতিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তাদের মতে, হাতে তৈরি করা সেমাই মেয়ের জামাইয়ের বাড়িতে না পাঠালে 'জামাই সাজন' তৈরিতে খুঁত থেকে যায়। এছাড়া হাতে তৈরির সেমাই না খেলে ঈদ যেন তাদের মানায় না। আগে গ্রামের ঘরে ঘরে গমের আটা দিয়ে হাতে তৈরি সেমাইয়ের বহুল ব্যবহার হলেও মেশিনে সেমাই তৈরির কদর বেড়েছে। পিতলের তৈরি আঁকা-বাঁকা সেমাই তৈরির মেশিন টেবিল অথবা চেয়ারের সঙ্গে নাট বল্টু দিয়ে আটকে একসঙ্গে ১০/১২ জন গৃহিণী ঘানির মতো ঘুরিয়ে চাল বা গমের আটার সেমাই তৈরি করেন।
এ প্রসঙ্গে মোহনপুর উপজেলার মোব্বতপুর গ্রামের গৃহবধূ নাজমা বলেন, ঈদুল ফিতরের উত্সব হাতে তৈরি সেমাই ছাড়া অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তাই তারা বাজারের সেমাইয়ের পাশাপাশি নিজেদের তৈরি সেমাই দিয়ে ঈদ উপভোগ করেন। তানোর উপজেলার গৃহবধূ আলেকজান বলেন, হাতের তৈরি সেমাই ভেজালমুক্ত। গুড়, দুধ ও নারিকেল দিয়ে হাতে তৈরি সেমাই খেতেও মজা। এছাড়া তারা মেয়ের জামাই বাড়ি সেমাই পাঠান।
এদিকে ঈদ উপলক্ষে রাজশাহীর ৯টি উপজেলার গ্রামীণ হাট-বাজারেও হরেক রকমের সেমাই বিক্রি হচ্ছে। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে বাজারে সেমাইয়ের চাহিদা ততই বাড়ছে। পুঠিয়ার বিসমিল্লাহ স্টোরের মালিক জানে আলম বলেন, আগের চেয়ে বর্তমানে বাজারে সেমাই বিক্রি বেড়েছে। এরমধ্যে খোচা সেমাই, লাচ্ছা সেমাই ও খোরমা সেমাইয়ের চাহিদা বেশি। গতবারের চেয়ে এবার কেজিতে সেমাইয়ের দাম ১০/১৫ টাকা বেশি। দুর্গাপুর পৌর সদরের দোকানী আমজাদ হোসেন বলেন, এখন যারা সেমাই ক্রয় করছেন তারা মেয়ের জামাই বাড়িতে সাজন পাঠানোর জন্য কিনছেন। গোদাগাড়ীর কাঁকনহাটের সেমাই বিক্রেতা আরিফুল ইসলাম বলেন, তিনি মেশিনে তৈরি সেমাইয়ের পাশাপাশি হাতে তৈরি সেমাই বিক্রি করেন।