রাজধানীসহ সারাদেশে রেজিস্ট্রেশনবিহীন শত শত মোটর সাইকেল চলছে। সাধারণত নম্বর প্লেটে 'অনটেস্ট' বা 'এএফআর' (রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদনকৃত) লেখা এই সব মোটর সাইকেলের চলাচল দিন দিন বেড়েই চলেছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখের সামনে চললেও এগুলো নিয়ন্ত্রণে কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। এমনকি পুলিশসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের লোকজনও নম্বরবিহীন মোটর সাইকেল ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এসব মোটর সাইকেল চালকদের বিরুদ্ধে অভিযোগও কম নয়। তারা সড়ক ছেড়ে অনেক সময় ফুটপাতে উঠে পড়েন। পথচারীরা সরে জায়গা না দিলে বেশির ভাগ সময় তারা খারাপ আচরণ করেন। সড়কে এমন বেপরোয়াভাবে চলেন যে অন্য গাড়ির লুকিং গ্লাস ভাঙ্গাসহ প্রায়ই নানা দুর্ঘটনা ঘটছে।
এ প্রসঙ্গে পুলিশের আইজি হাসান মাহমুদ বলেন, নম্বরবিহীন কোন মোটর সাইকেল রাস্তায় চলাচল করতে পারবে না। এ ব্যাপারে 'জিরো টলারেন্স' নীতি গ্রহণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
এদিকে জানা গেছে, 'অনটেস্ট', 'এএফআর' বা অন্য কোন কিছু লেখা ছাড়াও বিপুলসংখ্যক মোটর সাইকেল রাজধানীতে চলছে বছরের পর বছর। এ ধরনের মোটর সাইকেল ব্যবহারকারীদের মধ্যে পুলিশের সংখ্যাই বেশি। ফলে পুলিশের পক্ষে নম্বরবিহীন মোটর সাইকেল জব্দ করা কিংবা আটক করে মামলা দেয়া 'বেআইনি' বলে মনে করেন পুলিশেরই একজন শীর্ষ কর্মকর্তা। এই কর্মকর্তা বলেন, 'আমি পুলিশের পোশাকে বেআইনি কাজ করছি, সেই আমি কি করে অন্য একজনকে আইনের কথা বলবো?'
শুধু রাজধানী নয়, ঢাকার বাইরেও বিভিন্ন জেলা শহর, উপজেলা ও গ্রামাঞ্চলে নম্বরবিহীন মোটর সাইকেল চলছে অবাধে। বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ জানান, মোটর সাইকেলসহ যে কোন গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করার দিনই নম্বর ব্যবহার শুরুর তারিখ উল্লেখ করে চিঠি দেয়া হয়ে থাকে। ওই তারিখে গেলেই বিআরটিএ থেকে নম্বর প্লেট দেয়া হয়ে থাকে। তাই 'অনটেস্ট' ও 'এএফআর' লিখে মোটর সাইকেল চালানো বেআইনি বলে বিআরটিএ থেকে জানানো হয়।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এ বিষয়ে বলেন, সাধারণত ছিনতাই, হত্যা, ডাকাতি, লুটপাটসহ বিভিন্ন অপরাধে ব্যবহূত হয়ে থাকে নম্বরবিহীন মোটর সাইকেল। কারণ মোটর সাইকেলে নম্বর প্লেট থাকলে পরবর্তীতে ঐ নম্বর অনুযায়ী বিআরটিএ থেকে মালিককে খুঁজে বের করা যায়। তাই অপরাধীরা এমন মোটর সাইকেল নিয়ে অপরাধ করে থাকে।
মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মিলি বিশ্বাস বলেন, রাজধানীতে নম্বরবিহীন মোটর সাইকেলের বিরুদ্ধেও মামলা হচ্ছে। তবে দুইটি ডাম্পিং পয়েন্ট পূর্ণ হওয়ায় নম্বরহীন জব্দকৃত রিকশা ও মোটর সাইকেল রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে জব্দ না করে তাদের সর্বোচ্চ জরিমানার মামলা করা হয়। অবশ্য নম্বরবিহীন মোটর সাইকেল চলাচল একেবারে বন্ধের বিকল্প নেই বলে তিনি মনে করেন।