ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) এক নেতার কটু মন্তব্যে কান্নায় ভেঙে পড়লেন ভারতের প্রখ্যাত টেনিস তারকা সানিয়া মির্জা। ভারতের নতুন রাজ্য তেলেঙ্গানার সরকার মঙ্গলবার এই টেনিস তারকাকে রাজ্যটির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডার হিসেবে ঘোষণা করে। কিন্তু বিজেপি নেতা কে লক্ষণ সানিয়াকে 'পাকিস্তানের বউমা' বলে বিদ্রুপ করে বলেন, তিনি তেলেঙ্গানার মুখচ্ছবি হতে পারেন না।
এরপরই বিষয়টি নিয়ে ভারতজুড়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। মুখ খোলেন সানিয়াও। ভারতের এনডিটিভির সঙ্গে এক সাক্ষাত্কারে সানিয়া বলেন, একের পর এক নিজের 'ভারতীয়তা'র পরীক্ষা দেয়া চরম কষ্টদায়ক। কান্নায় ভেঙে পড়ে তিনি বলেন, 'আমি এখনো ভারতীয়। চিরকাল তাই থাকব'।
তর্কের শুরু: গত মঙ্গলবার তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও সানিয়াকে হায়দরাবাদের কন্যা হিসেবে উল্লেখ করে তাকে তেলেঙ্গানার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডার ঘোষণা করার পর ক্ষিপ্ত হন রাজ্যটির বিজেপি নেতারা। বিজেপি নেতা লক্ষণ দাবি করেন, সানিয়া মহারাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাই সানিয়া আসলে 'বহিরাগত'। তিনি পাকিস্তানের ক্রিকেটার শোয়েব মালিককে বিয়ে করেছেন। তাই তার ভালোবাসা পাকিস্তানের প্রতি। তিনি পাকিস্তানের 'পুত্রবধু'। তাই তিনি কখনই ভারতের কোনও রাজ্যের মুখচ্ছবি হতে পারেন না।
এরপরেই বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়। তবে চতুর্মুখী সমালোচনার কারণে ব্যাকফুটে চলে যায় বিজেপি। কারণ, সানিয়াকে আক্রমণ করে দলীয় কয়েকজন গোঁড়া নেতা-কর্মী ছাড়া তেমন কারো সমর্থন পায়নি বিজেপি।
সানিয়ার জবাব: ভারতে বিজেপি ক্ষমতায় বলে নিজের বিরুদ্ধে করা অপমান মুখ বুজে সহ্য করতে রাজি ছিলেন না সানিয়া। তিনি ওই বিজেপি নেতার মন্তব্যের কঠোর প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, 'আমার পরিবার প্রায় এক শতাব্দী ধরে হায়দরাবাদের বাসিন্দা। আমাকে বহিরাগত বললে আমি তার বিরোধিতা করব। এইসব ছোটখাট বিষয় নিয়ে আমাকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করায় আমি সত্যিই দুঃখিত। আমার স্বামী শোয়েব মালিক পাকিস্তানি। কিন্তু আমি একজন ভারতীয়, জীবনের শেষদিন পর্যন্ত তাই থাকব। আমার জন্মের সময় আমার মায়ের অসুস্থতার কারণে তাকে মুম্বাইয়ের স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জন্মের পর ৩ সপ্তাহ আমার মা হাসপাতালে ছিলেন। এরপর থেকে এখনো পর্যন্ত আমি হায়দরাবাদের বাসিন্দা। সুতরাং কোন বিবেচনায় আমাকে মহারাষ্ট্রের মেয়ে বলা হচ্ছে তা বোধগম্য নয়।