উত্সবমুখর পরিবেশে ঈদের দিন নিজেকে রঙিনভাবে সাজিয়ে তুলতে কমবেশি সবার মাঝেই একটা বাড়তি প্রস্তুতি থাকে। তাই এবারের আয়োজনে উঠে এসেছে আনন্দ দিনের সাজের আদ্যোপান্ত। রূপ বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে লিখেছেন খালেদ আহমেদ
এবারের ঈদ বর্ষার সময়ে উদযাপিত হলেও বাস্তবে এখনও প্রকৃতিতে গরমের কোনো কমতি নেই। তাই গরমের সময় আরামদায়ক হয় এমন পোশাক এবং সাজের দিকেই লক্ষ্য রাখতে হবে। অন্যদিকে চলতি বছর এখন অবধি বাজারে যেসব সালোয়ার-কামিজের চল বেশি তার মধ্যে একটু ম্যাট কালারের এবং তুলনামূলক কম কাজের মিড লং কামিজগুলোর চলই বেশি। কাজেই এ জাতীয় সালোয়ার-কামিজের সাথে একটু পেস্টিং বেজ ম্যাট মেকআপ করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। যারা এবারের ঈদের জন্য একাধিক সালোয়ার-কামিজ কিনেছেন বা কিনছেন তারা সকালের উষ্ণ আবহাওয়ায় পরবার জন্য অবশ্যই প্রাধান্য দেবেন সুতি বা সুতিজাতীয় কাপড়ের সালোয়ার-কামিজকে। অন্যদিকে যারা ঈদের দিন সকাল কিংবা দুপুরে বাইরে বেশি ঘোরাঘুরি করেন, তারাও সালোয়ার-কামিজ কেনার সময় সুতির সালোয়ার-কামিজের দিকে মনোযোগ দেবেন। সুতির সালোয়ার-কামিজের সাথে যেকোনো মার্জিত সাজই সহজে মানিয়ে যায়। তবে সকালের ট্র্যাডিশনাল পোশাকের সাথে সাজটাও হতে হবে ট্র্যাডিশনাল ও হালকা। মনে রাখবেন, সারাদিনের ব্যস্ততায় মেকআপের ধরন বেশ ক’বার পাল্টানো সম্ভব হলেও মেকআপের বেজটি তৈরি করে নিতে হবে সকালবেলাতেই। এ জন্য সকালে মুখ ভালো করে ধুয়ে টোনার লাগাবেন। এরপর ফাউন্ডেশন ও ফেস পাউডার দিয়ে বেজ তৈরি করুন। সাধারণত ট্র্যাডিশনাল পোশাকের সাথে গরমের সকালের সাজ হিসেবে বেজ হালকা হলেই ভালো দেখাবে এবং এতে মুখ ঘেমে কালো দেখাবে না। এ ছাড়া পোশাকের কালারের সাথে ম্যাচ করে মাশকারা ও আইলাইনার লাগাতে পারেন। লক্ষ রাখবেন যেন মাশকারা ও আইলাইনারের রঙ মেকআপের বেজকে ছাড়িয়ে উত্কট রূপ ধারণ না করে। যদি আইশ্যাডো লাগাতে চান তাহলে সেটা হালকা ব্রাউন হলেই ভালো দেখাবে। এ ছাড়া সালোয়ার-কামিজের সাথে সকালের সাজ হিসেবে হালকা লিপস্টিক ও হালকা ব্লাশন থাকলে আপনার মুখাবয়ব অনেক বেশি স্নিগ্ধ ও সুন্দর দেখাবে। আবার গরমের তোয়াক্কা না করে যারা সকাল থেকেই একটু ট্রেন্ডি পোশাক যেমন জিন্সের সাথে শর্ট কামিজ কিংবা ফতুয়া পড়বেন তাদের সাজেও থাকতে হবে একটা ফাঙ্কি লুক। এ ক্ষেত্রে চুল হাইলাইট করা কিংবা মুজ দিয়ে খানিকটা কার্লি ভাব নিয়ে আসা যেতে পারে। একইভাবে মুখের সাজের ক্ষেত্রেও আইশ্যাডো বা লিপস্টিকে একটা হাইলাইটেড দিক বের করা যেতে পারে। ঈদের দিন দুপুরে যদি একটু ম্যাট কালারের কিংবা হালকা কাজের কোনো সালোয়ার-কামিজ পরেন তাহলে মেকআপেও আনতে পারেন হালকা ম্যাট কালারের ছোঁয়া। এ জন্য প্রথমেই সাবান বা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ভালো করে ধুয়ে নিন। তারপর হালকা ফেসপাউডার এবং লাইট কোনো কালারের ব্লাশার দিয়ে চোখে পোশাকের রঙের সাথে মানানসই আইশ্যাডো দিন। এ ছাড়া চোখের উপরের দিকে আইলাইনার এবং নিচের অর্ধেকে কাজল লাগিয়েও সাজে বৈচিত্র্য আনা যেতে পারে। সালোয়ার-কামিজ যদি একটু ট্র্যাডিশনাল হয় তাহলে দুপুরের সাজে লিপস্টিক হতে পারে গোলাপি, বাদামি কিংবা মেরুন রঙের। সারাদিনের সাজে যদি জমকালো ভাবটা মিস করে থাকেন তাহলে সেটা প্রকাশ করুন রাতের সাজে। এ সময়ে আপনার পরনে যদি থাকে ট্রেন্ডি কোনো সালোয়ার-কামিজ কিংবা ভারী কাজের কোনো পোশাক তাহলে সাজের ক্ষেত্রেও সেই আভিজাত্যের ছোঁয়া থাকতে হবে। রাতের মেকআপটি যেন গরমে নষ্ট হয়ে না যায় সেজন্য প্রথমেই মুখে বরফ ঘষে নিতে পারেন। এবার ওয়াটার বেজ ফাউন্ডেশন ব্যবহার করুন। এ ছাড়া সালোয়ার-কামিজের ধরন বুঝে মেট প্যানস্টিকও ব্যবহার করতে পারেন।
হেয়ারোবিক্স ব্রাইডালের বিউটি এক্সপার্ট তানজিমা শারমীন মিউনি বলেন, ‘যেকোনো শাড়ির ক্ষেত্রেই শাড়ির আঁচল কিংবা আঁচলের কাজ একটু বেশি চোখে পড়ে। আর তাই ঈদের দিনের সাজ হতে পারে শাড়ির আঁচলের সঙ্গে মানানসই। এ ক্ষেত্রে শাড়ির বেসিক কালারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যেমন আনুষঙ্গিক সাজ হতে পারে তেমনি সাজটা হতে পারে খানিকটা ‘কন্ট্রাস্ট’। উদাহরণস্বরূপ নীল কিংবা লালের কাছাকাছি রঙের শাড়ির ক্ষেত্রে সাজের বেজটা যদি পিঙ্ক বা মেটালিক ধরনের হয় তাহলে তা দেখতে ভালো লাগবে। বিশেষ করে ইদানীং বিভিন্ন ফেস্টিভ শাড়ির সঙ্গে মেটালিক সাজের চলটাই একটু বেশি। শাড়ির সঙ্গে যেকোনো ধরনের সাজের ক্ষেত্রেই চোখটিকে ফুটিয়ে তোলা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বিশেষ করে শাড়ি যদি হয় পার্টিতে যাওয়ার পোশাক তাহলে চোখটিকে সুন্দর করে সাজিয়ে নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। লক্ষ রাখবেন যেন শাড়ির রঙের সঙ্গে চোখের শ্যাডো মানানসই হয় এবং এটা যেন চোখকে একটা স্নিগ্ধ রূপ দেওয়ার বদলে উত্কট রূপ না দেয়। চোখে আইলাইনার এবং মাশকারার ব্যবহারও হতে হবে পরিমিত। তবে পার্টি সাজে শাড়ির সঙ্গে চোখের সাজ হিসেবে কাজল কিংবা মাশকারা ব্যবহার না করাই ভালো। অন্যদিকে দিনের বেলায় একটু ক্যাজুয়াল লুকের শাড়ির সঙ্গে হালকা করে কাজল দিলে দেখতে মন্দ লাগবে না। যারা ঈদের দিনে দিনের বেলাতেই শাড়ি পরতে চান তারা অবশ্যই এ সময়ে হালকা করে মুখ সাজানোর দিকে লক্ষ রাখবেন। আবার রাতের বেলায় পার্টি আমেজে শাড়ি পরলে সাজের মধ্যেও আনা যেতে পারে খানিকটা ওয়েস্টার্ন লুক। এ ক্ষেত্রে লিপলাইনার ও আইলাইনারের সাহায্যে ঠোঁট ও চোখের আকার ঠিক করে তাতে একটু ডার্ক কালারের লিপস্টিক ও আইশ্যাডো ব্যবহার করা যেতে পারে। যদিও শাড়ির সঙ্গে চোখ সাজানোর ক্ষেত্রে চোখ যতোটা সম্ভব কালো দেখানোই ভালো।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঈদের দিনে শাড়ির সঙ্গে মানানসই সাজের ক্ষেত্রে ব্লাউজের ধরনটিও গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ আটপৌরে শাড়ির ক্ষেত্রে সাধারণ ব্লাউজ আর সাধারণ সাজই বেশ মানানসই। তবে ঈদের দিনে পরবার জন্য নির্বাচিত শাড়িটি যদি হয় একটু কালারফুল আর ফাঙ্কি তাহলে এর সঙ্গে স্লিভলেস, ম্যাগি কিংবা রুমাল হাতার ব্লাউজ বেশ মানিয়ে যাবে। এক্ষেত্রে মুখের সাজেও খানিকটা হাইলাইট রাখা যেতে পারে। আবার ফ্লোরাল মোটিভের শাড়ির সঙ্গে কুচি দেওয়া ব্লাউজ বেশ মানিয়ে যায়। অন্যদিকে যারা রাতের পার্টিতে ওয়েস্টার্ন প্যাটার্নে শাড়িকে উপস্থাপন করতে চান তাদের পরনে থাকতে পারে স্লিভলেস লোয়ার কাটের ব্লাউজ। শাড়ির সঙ্গে সম্পূর্ণ একটি সাজে জুতাজোড়ার ভূমিকাও কম নয়। সাধারণত শাড়ির সঙ্গে একটু হিল জাতীয় জুতাই বেশি মানানসই। তবে চাইলে ফাঙ্কি শাড়ির সঙ্গে কিছুটা ফ্ল্যাট জুতাও পরা যেতে পারে। এ ছাড়া শাড়ির মধ্যে যদি বাঙালিয়ানা কিংবা আভিজাত্যের বিষয়টি প্রাধান্য পায় তাহলে চুলে খোঁপা বেঁধে এবং খোঁপায় স্টাইলিশ চুলের কাঁটা ব্যবহার করেও সাজে ভিন্নতা আনা যেতে পারে।’ শাড়ির সাথে যেকোনো ধরনের সাজের ক্ষেত্রেই চোখটিকে ফুটিয়ে তোলা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। লক্ষ রাখবেন যেন শাড়ির রঙের সাথে চোখের শ্যাডো মানানসই হয় এবং এটা যেন চোখকে একটা স্নিগ্ধ রূপ দেওয়ার বদলে উত্কট রূপ না দেয়। চোখে আই লাইনার এবং মাশকারার ব্যবহারও হতে হবে পরিমিত। তবে পার্টি সাজে শাড়ির সাথে চোখের সাজ হিসেবে কাজল কিংবা মাশকারা ব্যবহার না করাই ভালো। অন্যদিকে দিনের বেলায় একটু ক্যাজুয়াল লুকের শাড়ির সাথে হালকা করে কাজল দিলে দেখন মন্দ লাগবে না। যারা ঈদের দিনে দিনের বেলাতেই শাড়ি পড়তে চান তারা অবশ্যই এ সময়ে হালকা করে মুখ সাজানোর দিকে লক্ষ রাখবেন। এজন্য হালকা ব্লাশন আর হালকা বেজ দিয়ে চোখটাকে সুন্দর করে সাজানো আর ঠোঁটে ন্যাচারাল কালারের লিপস্টিক লাগালেই দেখতে বেশ লাগবে। ঈদের দিনে শাড়ির সাথে মানানসই সাজের ক্ষেত্রে ব্লাউজের ধরনটিও গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ আটপৌড়ে শাড়ির ক্ষেত্রে সাধারণ ব্লাউজ আর সাধারণ সাজই বেশ মানানসই। তবে ঈদের দিনে পরবার জন্য নির্বাচিত শাড়িটি যদি হয় একটু কালারফুল আর ফাঙ্কি তাহলে এর সাথে স্লিভলেস, ম্যাগি কিংবা রুাল হাতার ব্লাউজ বেশ মানিয়ে যাবে। এক্ষেত্রে মুখের সাজেও খানিকটা হাইলাইট রাখা যেতে পারে। আবার ফোরাল মোটিফের শাড়ির সাথে কুঁচি দেওয়া ব্লাউজ বেশ মানিয়ে যায়। অন্যদিকে যারা রাতের পার্টিতে ওয়েস্টার্ন প্যাটার্নে শাড়িকে উপস্থাপন করতে চান তাদের পরনে থাকতে পারে স্লিভলেস লোয়ার কাটের ব্লাউজ। শাড়ির সাথে সম্পূর্ণ একটি সাজে জুতাজোড়ার ভূমিকাও কম নয়। সাধারণত শাড়ির সাথে একটু হিল-জাতীয় জুতাই বেশি মানানসই।