ফেইসবুক খুলে রাহী থমকে গেলো। চেয়ে থাকলো বহুক্ষণ। আনমনে। আপন মনে। চেয়েই থাকলো। অনেকটা ক্ষন, ভাবনায় ডুবে গিয়েছিল অথচ খুজে বের করতে পারেনি কি ভাবছিল। খুজে ফিরেছে কিছু কিন্তু খুজে পায়নি কিছুই। বিশাল এক সমুদ্রে যেন ডুব দিয়েছে সে। স্তম্ভিত। ডুব সাতারে যেমন ডুবে থাকা যায় কিন্তু দেখা যায় না, বোঝা যায় না কিছুই, কান বন্ধ শব্দহীন এক পৃথিবী যেমন তেমনি রাহীও ডুবে ছিলো কয়েকটি মুহূর্তে হারানো কোন এক জগতে। শির শিরে একটা বাতাস শুধু সেদিন থেকে এসে ছুয়ে গেল তাকে, তবে তাও ক্ষণিকের জন্যই।
সময়ে হয়তোবা দেহের চামড়া আজ এতটাই পুরু করেছে যে, তাতে যা হয়েছে তা এই যে, আজ আর কষ্টগুলো তাকে আকড়ে ধরতে পারলো না, সামান্য আচড়ও হয়তো না। শুধু একটা হাওয়া, একটা দীর্ঘশ্বাস বা একটা ছোট্ট আহ্। ব্যাস এই। হায়রে সময়। সময়ের ক্ষমতা কি অসাধারণ। টেমস নদীর পাড়ে দাড়ানো সেই এক যুবক।
ঝকঝকে আলোর মাঝে ঝির ঝির করা কোন এক সকালের ছবি। কী অসাধারণ দৃশ্য। বাদাম রংয়ের শার্ট পড়ে চুপচাপ দাড়িয়ে আছে সে।
রাহীর বড় মন চাইলো ছবির নিচের কমেন্ট এর জায়গায় লিখতে কিছু। একবার মনে এলো লিখতে,
হাসি নেই মুখে কেন রাজকুমার। বিষণ্ন বদন, তুমি কি ভাবছো আমার কথা। রাহী রাহী কোন প্রতিধ্বনি কি ছিল ঐ নদীর জলে।
এটুকু লিখেই পরক্ষণে মুছেও দিল। কি দরকার, সে তো এখন ‘কোথাকারকে’। তারপর দীর্ঘ শ্বাস ফেলে আপন মনেই বসে থাকলো কিছুক্ষণ। একসময় নিজেরই অজান্তে আবার লিখলোও, আমিও ছিলাম ঐ নদী তীরে, একদা, একাকী, অনেকগুলো বছর আগে, বিষণ্ন সকাল বা নিরব সন্ধ্যা আমারও কেটেছে ওখানে দাড়িয়ে। ওখানে দাড়িয়ে আমিও ভেবেছি তোমার কথা, বহুবার, বহু বছর আগে। প্রিয় নামে ডেকে উঠেছি হঠাত্ হঠাত্ই। আশ্চর্য্য সেই বাতাসেই তুমি ঘুরে বেড়িয়েছো যা আমি ছুয়ে রেখে এসেছি। আচ্ছা বল তো, ঐ পা যখন ছুয়েছিল সেই সব জায়গাগুলোতে যা ছিল আমারও পদচারনায় মুখর তুমি কি হঠাত্ হঠাত্ কেপে কেপে উঠেছিলে, হঠাত্ই মনে পড়ে গিয়েছিল কি এই আমাকে। বহু বছর আগের সেই আমাকে। হটাত্ই কি অবাক হয়েছিলে ভেবে আজ এত বছর পর কেন আমাকে পড়ছে মনে!
আমাকে মনে পড়বার কথা নয় কি? ভুলে যাবার কথা কি? ভুলে থাকার কথা অবশ্যই। ভুলে গেছো বলে কি তারপরও দাবী করা যায়!! করতে পার? তোমার ছবিটি দেখে শুধুই আমার মনে হতে লাগলো তুমি কি ভেবেছো আমাকে টেমসের পাড়ে দাড়িয়ে। কেবলই ভাবলাম তুমি কি পাওনি কোন শব্দ শা শা বাতাসে, আমার সেদিনের কোন ডাক নি পোছায়নি তোমাতে। আমিও যে ছিলেম ওখানে, ঐ তীরে, ঐ তটে, ঐ তটিনীতে।
অবারিত এই ভাবনার বাতায়নে যে চরণ পড়েছে সংকোচে ভরে উড়ায়ে নিয়েছে তা আমাকে স্মৃতির সেই তটে যেখানে ছিল এক তরুণ আর তরুণী। সেই কবেকার সেই এক তরুণ আর তরুণী। একটি যুগল, বাধা ছিল কোন এক ডোরে। কোন এক রূপকথায়। কেমন ছিল সে অবগাহন আজ আর মনে নেই বা করতে চাইলাম না মনে কিন্তু হঠাত্ যখন দেখলাম তোমায় দাড়িয়ে আছো টেমসের পাশে চমকে উঠলাম আমি। আ্ত্ত চিত্কার বেরিয়ে এলো, আমিও তো ওখানে ছিলাম দাড়িয়ে। আমিও তো ভেবেছি তোমার কথা সারা বেলা ওখানে দাড়িয়ে। সেই কবে কার দেখা সেই এক ভালবাসার যুবক। যে ভালবাসবে বলে সব কটা গ্রহ তারায় কত কি আতশবাজীর উত্সব শুরু হয়েছিল। হূদয়ের গভীনে ছিল ভ্রমরের গুঞ্জন। না বলা সব কথা সারে গা মা হয়ে বাজলো যেন বীনায়।
তুমি কেন গিয়েছিলে টেমসের পাড়ে। তোমার তো থাকবার কথা কপোতাক্ষের তীরে। তুমি কি ভেবেছিলে দেখবে আমাকে ওখানে গিয়ে। টিকেট কাটতে গিয়েও কি তোমার মনে পড়েনি আমি আর নেই ওখানে। নাকি তুমি আর খবরই পাও না আমার। কোথায় আমি, কেমন আছি আমি। সময় সরিয়ে দিয়েছে আমাদের। আমাকেও, সরে গেছি আমিও টেমসের পাড় থেকে অন্য কোথাও। বহু আগেই আমি ছেড়েছি টেমস, লন্ডন। বহুদূরে অন্য কোথাও আমি এখন। আমরা দুইজন ভিন্ন সময়ের যাত্রী যেন। যাচ্ছি একই জায়গায় তবে ভিন্ন সময়ে। কোন ভাবেই এক সময়ে এক খানে নয়।
যখন আমি ছুটে গেলাম তোমার সাথে দেখা করতে তিতাসের পাড়ে তুমি তখন চলে গেছো মধুসূদনের দেশে। তাই তো শুনলাম গিয়ে। বন হাওয়ায় মৃদু শীতে ওড়না পেচিয়ে দাড়িয়ে রইলাম কতটা সময়। কতটা লম্বা যে ছিল সে প্রহর। অপেক্ষা, যদি তুমি ফেরো। আহ্ যদি তুমি আস, শুনে যদি যাও আমার ডাক নাইবা ফিরবে কেমন করে। আমার ছিল কী ভীষণ অপেক্ষা। আমায় ছুয়ে যে বাতাস তোমায় স্পর্শ করেছে দুরে কোথাও গিয়ে তাতে কি তুমি পাবে না আমার ঘ্রাণ? আমার আটারো বছরের বিনম্র অসহায় চোখের অশ্রুর ছোয়া! তা কি তোমাকে আদ্র করেনি? ভিজায়নি তোমার লোমশ হাতের কিছুটা। বোঝনি কেন কোথাও আছি আমি দাড়ায়ে। তোমার জন্য অশ্রু নিয়ে দুই চোখের পাতা ভিজিয়ে আমিও রয়েছিলাম দাড়িয়ে।
তুমি চলে গেলে।
বহুবার আমি গিয়েছি তারপরও, অযথাই, অযথাই দাড়িয়ে ছিলাম নদী তটে, কুহুতানে, ঝরা পাতায়।
আজ হঠাত্ করে তোমাকে দেখলাম।
বহু বছর পরের তুমি।
বহু বদলে যাওয়া তুমি।
বদলেছো কি আসলেই। ১২ বছর তো কম না। কতকাল, কত বছর পরে দেখলাম তোমার ছবিটা। টেমসের পড়ে দাড়িয়ে রয়েছো, একা একা, বিষন্ন একা তুমি।
কিন্তু তারপরও কি অদ্ভুত সুন্দর তুমি। আজও তেমন সুন্দরই তো আছ। আমার তো তাই মনে হলো।
আবার একই সাথে মনে হলো এই তুমি আর সেই তুমি এক নয়। অন্য একজন। অন্য কেও। বদলে যাওয়া একজন । তোমর গোফগুলো আর নেই। কেটে ফেলেছো? অবাক তো। যখন আমি বলতাম তখন তো বলতে ওগুলো মরদ কা নিশানা। জান গেলেও যাবে না। এখন যে নেই। জান তো আছে। নাকি আছ শুধু দেহের মাঝে, মনের মাঝে শূন্য খাচায়। একলা কোন এক নিঃসঙ্গ জীবনের পথিক তুমিও আমার মত।
তোমার চশমার কাচটা অনেক পুরু হয়েছে। তুমি নিজেও মোটা হয়েছো বেশ। খুব খাচ্ছো বোধ হয়। ছিলে না তো কখনোই পেটুক রাজা। খাদ্যের প্রতি ছিল যোজন যোজন দূরত্বের বন্ধন, না খেয়ে দিন মান কাটাতে পারতে সঙ্গে থাকলে আমি। তাই তো বলতে।
সেবার যখন রংপুর গেলাম ছোট খালার বাসায় বেড়াতে, মনে আছে তুমিও এলে ছোট ভাইজানের সাথে বেড়াতে। প্রথম দেখলাম তোমায়। পরে ছিলে বেগুনী রংয়ের শাট। কী আজব, কোন ছেলে কি ঐ রকম শাট পরে কখনো? তোমাকে দেখেই আমার খুব হাসি পাচ্ছিল। না তোমাকে দেখে না তোমার শাট দেখে আমার খুব হাসি পাচ্ছিল। তুমি তা বুঝলে না, ভাবলে ১৫/১৬ বছরের মেয়েটি তোমাকে দেখে পিক পিক করে হাসছে। ইশরে আমার তো আর খেয়ে দেয়ে কাম নাই তোমার মতন ১৮/১৯ বছরের এক সদস্য কলেজ পাশ করা, যে কিনা H.S.C-তে তৃতীয় বিভাগে পাশ করেছে এরকম একটা ছেলেকে দেখে হাসবো। তার উপর আবার ভাষণ দিয়ে রাজনীতি করে বেড়ানো ছেলে। তোমাকে দেখে কোন মেয়েই পছন্দ করবে না ভেবে যখন আমি একশত ভাগ নিশ্চিত তখনই আবিষ্কার করেছিলাম, একশত জন নারীর ভেতরে আমি নেই। কখন যে মন পবনের নাওয়ে লেগেছে দক্ষিণ দূরন্ত হাওয়া জানতেও পারিনি। তুমিও এসেছিলে বেড়াতে আমিও গিয়েছিলাম বেড়াতে। রংপুরের মেটো পথে বা রাজ পথে যেখানেই বেড়াতে নেওয়া হয়েছে আমরা গেছি এক সাথে, সবখানেই বহুভাবে বহুবারে সামনা সামনি পড়েছি। তুমি আমাকে দেখে বলেছো, এই যে খুকুমনি তুমি শুধু শুধু হাস কেন? ডেকেছো খুকুমনি, নামটাও জানতে চাওনি। একবারও ভাবনি বা তোমার মনে আসেনি যে এমন বেগুনী রংয়ের একটা শার্ট পরেই দিনরাত তুমি আমাদের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছিলে। বহুপরে যখন বলেছিলাম তোমার ঐ শাট দেখে হাসতাম তুমি সাথে সাথে বলেছিলে একদিন আমরা বিদেশে চলে যাব, ধর লন্ডন। টেমসের পাড়ে বসে থাকবো দুই জনে ঐ রকম বেগুনী শাট পরে। বলেছিলাম, ঐ রকম শার্ট আর দ্বিতীয়টা তুমি খুজে পাবে নাকো হে। তুমি বললে, ঠিক আছে না হয় একটাতেই দুইজন ঢুকে বসে থাকবো। বলেই তুমি সেই ভুবন ভুলানো হাসি হাসলে। যা দেখে আমি ভুলে ছিলাম। কি যে সুন্দর সেই হাসি। ঐ হাসিতে ভুলে যেতাম সব কিছু। ভুলিয়ে ছিলে আমাকে। ভুলেছো তাহলে কেমন করে। ভুলিয়েছোই বা কেমন করে? ভুবন জুড়ে আজ কত কিছু। ভুবন ভরা কত আলো। আলোকিত কতটুকু আমি নিজে কে জানে? আলোতে কি আজ তোমার ভুবনও ভরা!
কিছুই জানি না আজ আছ কেমন? কেথায়? আছ কেমন আজ এই জীবন যাপনের প্রতিনিয়ত অপরিহার্য্য চর্চা গুলোতে। কতটুকু ক্ষীপ্র, কতটুকু তীক্ষ ধীমান তীর্যক বা কতটুকু পারঙ্গমকে জানে।
মাত্র কিছু বছরের সান্নিধ্য। অথচ আজ তা হয়ে গেল সারাজীবনের সঞ্চয়। ক্ষয়ে যায় না। ধুয়ে যায় না। মলাট বাধা শক্ত একটি বই যেন ধাবমান অতীত কে বেধে রেখেছে ধুধু মরু প্রান্তরের কোনএক মরিচীকার মতন করেন। আহ্ সেই সময় কি কেবলই এক বহুদূরের রূপকথা। কিংবা উপহাস?
যখনই ফোন করতে চমকে উঠতো প্রতিটি লোমকূপই। চিঠি দিলে কেপে উঠতো প্রতিটি শিরা। ছুয়ে দিলে যেদিন ঝম ঝমিয়ে প্রতিটি অনুতে সে কি বিদ্যুত্ বয়ে যাওয়া। শুধু একটা আঙ্গুল ধরেছিলে, সবচেয়ে ছোট আঙ্গুলটি। তাই ধরেই যেন ভেবেছিলে হয়ে গেছো বিশ্বের রাজা। ভাব করছিলে মহারাজাধিরাজের। গার্বিত ভঙ্গীতে বলেছিলে, একেই কি বলে পরমেম্বর হয়ে উঠার তৃপ্তি। আশ্চর্য্য! শুধু একটা আঙ্গুল ধরেই কত না আহলাদের কথামালা জপেছিলে।
আমি কিছুই বলতে পারিনি।
আরক্তিম আমি জানতামই না কেমন করে লালে লাল লজ্জা সরিয়ে হাত বাড়াতে হয় নীলের দিকে। নীল নামে ডাকতে চেয়েছি তোমায় বহুবার। পারিনি। লজ্জা এসে পথে দাড়িয়েছে। বহু বছর আগের সেই একজনকে আজ বহু বছর পরের এই আমি যতই ডাকি নীল নামে জানি শুনতে পাবেই বা কেমন করে, বহু সময় যে পেরিয়ে গেছে।
জান, আমি শুধু দেখছিলাম তোমার ছবিতে তোমার চুলে কোন পাক ধরেছে কি না। কিন্তু ঐ যে টেমসের চিক চিকে আলোতে তা বোঝা গেল না। ঝলমলে চারদিক হয়তো বা আজ তোমার। এই তো চেয়েছিলে তাই না যুবরাজ। রাজত্ব চেয়েছিলে। শুধু রাজকন্যা চাওনি। না ভুল বললাম, তোমায় রাজত্বে ঘুটে কুড়ানী চাওনি। রাজ কন্যা হলে ঠিকই চাইতে।
আমি বললাম চল বিয়ে করে ফেলি। বাসায় খুব চাপ। তুমি বললে বাবা-মা রাজী হবেন না। সে তো আমার বাসাতেও, শুনেই তুমি বললে, ওরা তোমার পালক পিতা মাতা রাজী না হলেও কী আসে যায়।
আমাকে বহু বছর পর হঠাত্ কেও মনে করিয়ে দিল যে, যে খালা খালু আমাকে দত্তক নিয়েছিলেন বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর তারা আমার বাবা মা নন। আচ্ছা তুমি তা পারলে কেমন করে বলতো?
তুমি বলেছিলে, ওনারা কি দেবেন পালক মেয়ের জন্য যৌতুক ৩০ লক্ষ টাকা, দিলে বাবা-মাকে বলতে পারি।
আমি দাড়িয়ে ছিলাম বহুক্ষন, সেদিনও, তিতাসের পাড়ে। যদি তুমি ভুল বুঝতে পার, যদি ফেরো। যদি আস ফিরে। তুমি এত খারাপ জেনেও আমি তোমার জন্য দাড়িয়ে ছিলাম। ফিরে ফিরে যেতাম একই জায়গায়, যদি আস ফিরে ভুলটুকু বুঝে শুধরাতে।
আসনি।
অবসন্ন আমি। অবসাদ গ্রস্থ আমি।
পলক পিতা মাতা চোখ বুঝতেই আমার গজালো পালক, লন্ডন গেলাম পড়তে, কিন্তু টেমসের পাশে এলেই তুমি আসতে আমার কাছে যেন সেই বেগুনী শাট পরে। কতকি কথা বলেছি আনমনে তোমার সাথে। ছেড়ে গেছ তুমি তারপরও তুমি চলে গেলে সব খানেই আমার সাথে। লন্ডনও ছেড়ে দিলাম। এখন আফ্রিকাতে কাজ করি। দিনরাত কাজ করি। চল্লিশের ভারী চোখ ঝাপসা দেখে। খোজে না আর তোমায় তারপরও হঠাত্ আজ তোমায় দেখে ফেইসবুকে বড় বেশি চমকে উঠলাম।”
রাহী আপন মনে যা কিছু লিখে ছিল নিজেই পড়ে অবাক হয়ে গেল। একি সে। সেই লিখেছে। মনের মাঝে এত কথা ছিল তার। কই নিজেও তো নিজেকে তা জানতে দেয়নি।
লিখবে কি আরেকটি লাইন, ‘খেয়ে দেখেছো কখনো টেমসের পানি! খেয়ো একবার, বুঝবে শুধু তুমি তা কেন এত নোনা।”
নাহ কি দরকার।
রাহী ডিলিট করে দিল সবটুকু লেখা। যে লিংক থেকে ছবিটা আসছিল তার ওয়ালে ফেইসবুকের সেটিংস এ গিয়ে তাও ব্লক করে দিল। একটাই জীবন সে একলাই পার করে দিতে পারবে।
শেষ বয়সের জন্য ওল্ড হোমও দেখে রেখেছে। যখন আর কাজ করতে পারবে না তখন ওল্ড লেডীর জন্য ওল্ড হোম তো আছেই। ঐ ফেইস সে ঘৃণা করে, প্রচণ্ড রকম ঘৃণা করে। একা করে দিয়েছে তার সারাটা জীবনকে যে সে তাকে তার দেখতেও চায় না। থাকুক বন্দী হয়ে কম্পিটারের কোন ওয়েব সাইডে। রাহী দ্রুত কম্পিউটার বন্ধ করে উঠে পড়ে। তার বহু কিছু করার আছে। অনেক বড় এই পৃথিবী। তার কাওকে প্রয়োজন নেই। বরং বিশ্বময় বহু অবহেলিত মানুষের আজ তাকে প্রয়োজন। সে তাকে ঘরের ছাদ দিতে পারেনি কিন্তু তাই সে পেয়েছে বিশাল এক নীলাভ আকাশ।