ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে হকারদের প্রবেশ ও দোকান বসানো নিষেধ থাকলেও বাস্তব চিত্র তার উল্টো। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা আর দখলদারদের কল্যাণে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের পন্টুন দখল করে দোকান খুলে ব্যবসা চলছে হরহামেশাই। শুধু জেটিতে নয় দোকান বসানো হয়েছে গ্যাংওয়েতেও। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন লঞ্চ যাত্রীরা। আর এ জন্য টার্মিনালের সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অবহেলাকেই দায়ী করেছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল কর্তৃপক্ষের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের যুগ্ম পরিচালক সাইফুল হক খান।
তিনি বলেন, সরকারি কর্মচারীরা ঠিকমত দায়িত্ব পালন না করায় উচ্ছেদের পরও হকাররা বারবার পন্টুনের ওপর দোকান বসাচ্ছে। গতকাল রবিবার সরেজমিনে দেখা যায়, পুরো পন্টুন জুড়ে বিভিন্ন প্রকারের ফল, বিস্কুট, পান-বিড়ির দোকান সাজিয়ে বসে আছে হকাররা। ঠেলাঠেলি থেকে রক্ষা পেতে নৌকায় করে উঠছেন অনেক যাত্রী পন্টুনের বাইরে নোঙ্গর করা লঞ্চে। ভোলার যাত্রী মরিয়ম বেগম বলেন, পন্টুনের উপর দাঁড়িয়ে ঠেলা-ধাক্কা খাওয়ার চেয়ে কষ্ট করে হলেও নৌকায় করে লঞ্চে উঠা ভাল।
হকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পন্টুনে বসার জন্য তাদের কাছ থেকে দৈনিক ভাড়া আদায় করা হয়। এজন্য ঝুড়ি প্রতি আদায় করা হয় একশ থেকে দুইশ টাকা পর্যন্ত। আর নদীর ওপর ভাসমান দোকান থেকে আদায় করা হচ্ছে ৩শ' থেকে ৫শ' টাকা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক হকার বলেন, টার্মিনালের ভাড়া, পুলিশ, কুলিদের চাঁদাসহ ফলের দোকান থেকে আদায় করা হয় দুইশত টাকা। পান বিড়ির দোকান থেকে আদায় করা হয় একশত টাকা। ভাসমান ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আদায় করা হয় ৩শ' থেকে ৫শ' টাকা।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ অভ্যন্তর?ীণ নৌ চলাচল কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান ড. শামছুদ্দোহা খন্দকার ইত্তেফাককে বলেন, টার্মিনালে ভ্রাম্যমাণ দোকান ও হকার উচ্ছেদে নিয়মিত অভিযান চালানো হয়। তাছাড়া সদরঘাট টার্মিনালে যাত্রী নিরাপত্তায় পুলিশ, র্যাব, কোস্টগার্ড, আনসার, নৌপুলিশসহ একাধিক নিরাপত্তা সংস্থার সদস্য নিয়োজিত রয়েছে। তবে টার্মিনাল ও লঞ্চে চাঁদাবাজির ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলেও তিনি আশ্বস্ত করেন।