পিরোজপুরের কাউখালীতে বুধবার উপজেলার সন্ধ্যা, কচা, কালিঙ্গায়, চিরাপাড়া, গাবখান— এ পাঁচটি নদীতে পূর্ণিমার প্রভাবে অতিরিক্ত জোয়ারের পানি তিন-চার ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী তীরবর্তী প্রায় ২২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া রবিশস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জানা গেছে, গত ২ দিন ধরে স্বাভাবিকের জোয়ারের চেয়ে ৩/৪ ফুট পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী তীরবর্তী চিরাপাড়া, পাঙ্গাসিয়া, জোলাগাতি, সুবিদপুর, সোনাকুর, আশোয়া, বাশুরী, রঘুনাথপুর, ধাবরী, মেঘপাল, গন্ধর্ব, আমড়াজুরি, গোপালপুর, জয়কুল, ডুমজুড়ি, কাউখালী দক্ষিণবাজার, গুচ্ছগ্রাম, বেকুটিয়াও আমড়াজুরি ফেরিঘাটসহ উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের নিচু এলাকার ঘর-বাড়িতে পানি ওঠায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। দু'দিনের অব্যাহত পানি বৃদ্ধিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এ এলাকার হাজার হাজার মত্স্যচাষী। উপজেলার বহু মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে মাছ ভেসে গেছে বলে জানা গেছে।
মনপুরায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
মনপুরা (ভোলা) সংবাদদাতা জানান, পূর্ণিমার জো'র প্রভাবে ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। প্রবল বাতাসের তোড়ে স্বাভাবিকের চেয়েও কয়েক মিটার উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়। জানা গেছে, এবারের পূর্ণিমার জো'র পাশাপাশি সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ আর প্রবল বাতাসের প্রভাবে উপজেলার চতুর্দিকে বেষ্টিত মেঘনায় বর্তমানে স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক সে.মি উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হচ্ছে। উপজেলার দ. সাকুচিয়া ইউনিয়নের তালতলা এবং সূর্যমুখী এলাকার ভাঙা ভেড়িবাঁধ, হাজীর হাট ইউনিয়নের চরযতিনের পূর্বপাশের ভেড়িবাঁধ, সোনার চরের পশ্চিম পাশের ভেড়িবাঁধ, মনপুরা ইউনিয়নের ঈশ্বরগঞ্জের পূর্বপাশের ভেড়িবাঁধ এবং আন্দির পাড় এলাকার ভাঙা ভেড়িবাঁধ দিয়ে পূর্বের ন্যায় পুনরায় জোয়ারের পানি ঢুকছে আবার ভাটির টানে শুকিয়ে যাচ্ছে। ভেঙে যাওয়া ভেড়িবাঁধের সংস্কার কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় বেশ কয়েকটি গ্রামসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এছাড়াও বিচ্ছিন্ন চর নিজাম এবং কলাতলীর চর প্লাবিত হচ্ছে নিয়মিত। প্রায় ২ মাস ধরে অমাবস্যা এবং পূর্ণিমার জো'র প্রভাবে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ার ধারাবাহিকতায় উপজেলার হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ যেন শেষই হচ্ছে না। এরই মধ্যে শত শত পুকুরের মাছ ভেসে গেছে, নষ্ট হয়ে গেছে ফসলী জমির বীজতলা। এছাড়া পানিবন্দি মানুষের বাড়ি-ঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সরকার যে পরিমাণ সাহায্য দিয়েছে তাতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দুর্ভোগ আর নীরব কান্নার রোল থামাতে পারেনি।
ভাঙ্গা ভেড়িবাঁধগুলো সঠিক সময়ে মেরামত না করায় এ ধরনের দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ভুক্তভোগী মানুষের ক্ষোভের কমতি নেই। আন্দিরপাড় গ্রামের তাজুল মিয়া বলেন, বর্তমানে আমরা ভেড়িবাঁধের বাইরে বাস করছি। জোয়ার আসলেই পানিবন্দি হয়ে পড়ে। । মনপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন হাওলাদার বলেন, ভেড়িবাঁধের বাইরে পানি প্রবেশ করছে। এছাড়া কলাতলীর চর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে মানুষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে বলে তিনি জানান।