ইরাকে প্রয়োজনে স্থল অভিযান চালাতে পারে যুক্তরাষ্ট্র
পদত্যাগ করবেন না মালিকি
ইত্তেফাক ডেস্ক
ইরাকে আটকেপড়া ইয়াজিদি সমপ্রদায়কে উদ্ধারে প্রয়োজনে স্থল অভিযানও চালাতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল বুধবার হোয়াইট হাউজের এক শীর্ষ কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী চাক হেগেল জানিয়েছেন, উত্তর ইরাকের ইরবিলে আরো ১৩০ সামরিক উপদেষ্টা পাঠানো হচ্ছে। এর আগে ইরাকি সেনাকে সাহায্য করার জন্য ২৫০ জন সামরিক বিশেষজ্ঞকে বাগদাদে পাঠিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। ইরবিলে কুর্দি প্রশাসনকে ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়ার (আইসিস) জঙ্গিদের আটকানোর পাশাপাশি সিনজার পাহাড়ে এখনও আটকে থাকা ইয়াজিদিদের ত্রাণ ও উদ্ধারের কাজে এই সামরিক বিশেষজ্ঞরা সাহায্য করবেন বলে প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন। এদিকে জিহাদি যোদ্ধাদের অগ্রযাত্রা ঠেকাতে এবং হাজার হাজার উদ্বাস্তুকে সহায়তা দেয়ার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। অন্যদিকে নুরি আল-মালিকি ক্ষমতা থেকে সরে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। খবর বিবিসি, নিউইয়র্ক টাইমস, রয়টার্স ও আল-জাজিরার।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (উপ) বেনজামিন জে রোডস জানিয়েছেন, সামরিক উপদেষ্টারা যদি ইরাকের পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্থল অভিযানের ব্যাপারে সুপারিশ করে তাহলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সেটি অনুমোদন করতে পারেন। তিনি বলেন, কিছু দিনের মধ্যে সিনজার পর্বতে সুন্নি জঙ্গি কর্তৃক আটক ইয়াজিদি সমপ্রদায়কে কিভাবে উদ্ধার করা যায় সেই বিষয়ে একটি সুপারিশ প্রেসিডেন্ট ওবামার কাছে আসবে। ওই সুপারিশে স্থল অভিযান চালানোর সুপারিশ থাকতে পারে। তবে তিনি জানান, এই অভিযান মানবিক কারণে, যুদ্ধের জন্য নয়। একান্ত বাধ্য না হলে ওবামা স্থল সেনা পাঠাবেন না বলেন রোডস। ওবামা পূর্বেই জানিয়েছেন, ইরাকে পুনরায় মার্কিন সেনা ফিরে যাবে না। রোডস স্বীকার করেন, ইরাকে যে কোনো কারণে স্থল সেনা পাঠানো বিপজ্জনক হবে। কারণ জঙ্গিদের প্রতিরোধ করার সামর্থ্য আছে। বাগদাদে নতুন প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হায়দার আল-আবিদির বাড়ির কাছের একটি চেকপোস্টে গতকাল এক আত্মঘাতী হামলা হয়। এই ঘটনায় কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে বাগদাদেই অন্য এক আত্মঘাতী হামলায় ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি আটকে পড়া ইয়াজিদিদের উদ্ধারের জন্য জাতিসংঘের কাছে আবেদন জানিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোয়া ওলাদ বলছেন, ইসলামিক স্টেট যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াইতে তার সরকার উত্তরাঞ্চলের কুর্দিদের অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করবে। ওলাদের অফিস থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কুর্দিস্তানের স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জরুরি অনুরোধের পরেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। উত্তর ইরাকে প্রতিটি দিনেই মানবিক বিপর্যয়ের মাত্রা স্পষ্ট হচ্ছে। সেখানে সিনজার পার্বত্য এলাকায় ইসলামিক স্টেটের জঙ্গিদের হাতে আটকা পড়ে আছে ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ।
যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন বিমান থেকে এই শরণার্থীদের জন্য গত কয়েকদিন ধরেই খাদ্য ও পানি নিক্ষেপ করে আসছিলো; কিন্তু এখন জঙ্গিদের অগ্রগতি ঠেকাতে সামরিকভাবেও প্রস্তুতি চলছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিও স্বীকার করেছেন, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে খুব জরুরি-ভিত্তিতে কাজ করছে ওয়াশিংটন। ডেভিড ক্যামেরন ইরাক পরিস্থিতির কারণে ছুটি সংক্ষিপ্ত করেছেন।