অধিনায়ক, শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র
আমরা কৃতজ্ঞ, জাতির জনকের প্রতি। তিনি আমাদের স্বাধীন মানচিত্র দিয়ে গেছেন। এই মাটিকে অত্যাচারমুক্ত করে গেছেন। প্রথমবার যখন ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিলাম। খুব খারাপ লেগেছিল। যে মানুষটা একটা দেশ দিল, তাকে এভাবে পরিবারসহ কেন হত্যা করা হলো?
জন্মের পর যখন বুঝতে শুরু করি তখন থেকেই আমাদের ঘরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি দেখেছি। আমার বাবা সুশীল ভট্টাচার্য্য এবং মা অঞ্জু রাণী ভট্টাচার্য্য। আমার বাবা এবং মা দু'জনেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বীজ আমাদের বুকে রোপন করে দিয়েছেন। কখনো আমার বাবা-মায়ের ছবি আমাদের ঘরে দেখিনি।
পাকিস্তানিদের কী অত্যাচার এদেশের মানুষ সহ্য করেছে, বঙ্গবন্ধু এর বিরুদ্ধে কিভাবে লড়েছেন সেই গল্পটা যখন শুনতাম, তখন সেই মানুষটির প্রতি ভালোবাসা জেগে উঠত। একই সাথে দেশের জন্য কিছু করার তাগিদ অনুভব করতাম। বঙ্গবন্ধুর কারণে আজ আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। কারণ তাঁর জন্যই বলতে পারি, আমি বাংলাদেশ ফুটবল দলের খেলোয়াড়। আমি জাতীয় দলের ফুটবলার। আমি বাংলাদেশের পতাকা হাতে নিয়ে বিদেশের মাটিতে খেলতে পেরেছি। আমাদেরকে বিদেশিরা বাংলাদেশের ফুটবলার হিসেবে চিনেছে।
পশ্চিম পাকিস্তানের অত্যাচারী হাত গুড়িয়ে দিয়ে এদেশের মানুষকে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার মর্যাদা দিয়ে গেছেন বঙ্গবন্ধু। সেটা যদি না হতো, তাহলে আজও আমরা জাতীয় ফুটবল দলে খেলতে পারতাম না। এখনও দাসত্ব করতে হতো।
মাঠে নেমে জাতীয় সংগীত গাইলে আমার শরীরের অন্য এক অনুভূতি খেলে যায়। শুধুমাত্র জাতীয় পতাকার দিকে তাকালেই মাঠে নেমে দেশের জন্য সর্বচ্চো দেওয়ার প্রেরণা পাই।
আমি যুদ্ধ দেখিনি। যুদ্ধের কথা শুনেছি। ইতিহাস জেনেছি। পাকিস্তানের অত্যাচারের কথা শুনেছি। আমরা কৃতজ্ঞ, জাতির জনকের প্রতি। তিনি আমাদের স্বাধীন মানচিত্র দিয়ে গেছেন। এই মাটিকে অত্যাচারমুক্ত করে গেছেন। আমি এখনও বুঝতে পারি না, তার প্রতি এই ভয়াবহ অকৃজ্ঞতা কি করে দেখানো হলো। প্রথমবার যখন ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিলাম। খুব খারাপ লেগেছিল। যে মানুষটা একটা দেশ দিল, তাকে এভাবে পরিবারসহ কেন হত্যা করা হলো?
আমার সবচেয়ে ভালো লাগে জেনে যে বঙ্গবন্ধু ফুটবল খেলতেন। আমিও ফুটবল খেলি। উনি বেঁচে থাকলে দেশটা অনেক বেশি এগিয়ে যেত। আবার এটাও মনে হয় এদেশের ফুটবলের জন্য অনেক মঙ্গল বয়ে আনতেন তিনি। আমি গর্ববোধ করি, বঙ্গবন্ধুর পুত্র শেখ কামালের গড়া আবাহনীর জার্সি গায়ে খেলেছি। আবার কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের নামে গড়া ক্লাবেও খেলেছি।
বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে অনেক গল্প শুনেছি। শুনেছি তিনি এতটাই সাধারণ জীবন-যাপন করতেন যে, প্রেসিডেন্ট হয়েও পার্কে হাঁটতে যেতেন। এমন অনেক কথা শুনে আমি তাঁকে খুব মিস করি। বঙ্গবন্ধু থাকলে দেশের এই অবস্থা হতো না। তাঁর আদর্শ স্বপ্ন পূরণ হয়নি। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হওয়ার স্বপ্ন দেখি। ১৫ আগস্ট আসলে আমাদেরকে নতুন করে বেঁচে থাকার তাগিদ দেয়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, চেতনা মনে করিয়ে দেয়—হেরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
অনুলিখন :সোহেল সারোয়ার চঞ্চল