সীমান্ত ব্যবস্থাপনার বিষয়ে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) প্রশিক্ষণ দেবে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)।
সম্প্রতি ভারতে শেষ হওয়া উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের এক সম্মেলনে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সম্মেলনে বিএসএফের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ৭১টি ঘাঁটির একটি তালিকা বিজিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
গত ২০ থেকে ২৫ আগষ্ট ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে ওই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে শেষে দেশে ফিরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিজিবির মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ।
রাজধানীর পিলখানায় নিজের দপ্তরে মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলন করে বিজিবির মহাপরিচালক বলেন, বিজিবিকে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশিক্ষণ দেয়ার প্রস্তাব করেছিল বিএসএফ। বিজিবি সেটিতে সম্মত হয়েছে।
বিএসএফ চার ধরনের বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবে। এগুলোর মধ্যে আছে— জুনিয়র কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, সিনিয়র কর্মকর্তাদের সীমান্ত ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণ, বোমা শনাক্ত ও নিষ্ক্রিয়করণ প্রশিক্ষণ এবং শিকারি কুকুরের ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণ।
কবে নাগাদ এই প্রশিক্ষণ শুরু হবে এমন প্রশ্নের জবাবে আজিজ আহমেদ বলেন, আগামী নভেম্বর নাগাদ প্রশিক্ষণের জন্য বিজিবির কর্মকর্তাদের ভারতে পাঠানো হতে পারে। কারণ আগামী ডিসেম্বরে যে সীমান্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, তার আগেই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, বিএসএফ ৭১টি বিচ্ছিন্নতাবাদী ঘাঁটির একটি তালিকা বিজিবি'র কাছে দিয়েছে। এর আগেও তারা বিভিন্ন তালিকা দিয়েছিল। কিন্তু অনুসন্ধান করে ওই সব ঘাঁটির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তবে এবার দুই পক্ষ সম্মত হয়েছে, যেসব স্থান দিয়ে চোরাচালান হয়, দুই পক্ষই সেগুলো শনাক্ত করবে। একই সঙ্গে প্রতিবছর তা হালনাগাদ করা হবে। সীমান্তে বাংলাদেশের ফেলানী হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে বিএসএফ বিষয়টি পুনঃতদন্ত করার কথা বিজিবিকে জানিয়েছে। ফেলানীর বাবা ও মামাকে আবার আদালতের যেতে হবে।
বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, সীমান্তে যতগুলো অঘটন ঘটে, তার সব পশু চোরাচালানকে কেন্দ্র করে ঘটে।
বিএসএফ দ্বিপক্ষীয় এই সম্মেলনে বিজিবিকে জানিয়েছে, ভারত এখন সীমান্তে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে না। প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্র ব্যবহার করে। এই অস্ত্র ব্যবহার করতে গিয়ে বিএসএফের সদস্যরা চোরাচালানকারীদের হাতে আহত হচ্ছে। তার একটি তালিকাও বিজিবিকে দেয়া হয়েছে বলে জানান আজিজ আহমেদ।
বিজিবির মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ফেনসিডিল তৈরির কারখানার তালিকা বিএসএফকে দেয়া হয়েছে। জবাবে বিএসএফ বলেছে, ভারতে ফেনসিডিল ওষুধ হিসেবে ব্যবহূত হয়। এটি চোরাচালান বন্ধে বিএসএফ পদক্ষেপ নেবে।
বিজিবি প্রধান বলেন, সীমান্তে বেশির ভাগ হত্যাকাণ্ড হয় রাতের বেলা। তাই রাতের বেলায় সীমান্তে না যেতে সীমান্ত এলাকার মানুষের প্রতি অনুরোধ জানান আজিজ আহমেদ। তিনি বলেন, ভারতে সন্ধ্যার পর সীমান্ত এলাকায় কারফিউ থাকে। আমাদের কারফিউ না থাকলেও রাতে সীমান্ত এলাকায় না যাওয়ায় ভালো।