একঝাঁক নতুন খেলোয়াড়, নতুন কোচ আর পাল্টে যাওয়া খেলার ধরন; সব মিলে বলা হচ্ছিল এ মৌসুমে নতুন যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বার্সেলোনার ফুটবল। যে যুগটাকে বলা হচ্ছিল লুইস এনরিকের যুগ। তবে নতুন যুগেও ক্লাবের জার্সি গায়ে তার পুরনো ফর্ম অক্ষুণ্ন্ন রাখলেন দলের প্রাণভোমরা লিওনেল মেসি। এই আর্জেন্টাইনের জোড়া গোলে বার্সেলোনায় এনরিকে অধ্যায়ের শুরু হল সহজ জয় দিয়ে। গত রবিবার রাতে লিগে মৌসুমে নিজেদের প্রথম ম্যাচে কাতালানরা নিজেদের মাঠ নূ ক্যাম্পে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে এলচেকে। অন্য গোলটি এসেছে নবাগত মুনির আল হাদাদির কাছ থেকে।
স্ট্রাইকারদের এই ধ্রূপদী পারফরম্যান্সে হ্যাভিয়ের ম্যাশেরানোর লাল কার্ড বড় কোন সমস্যা হয়ে আসেনি কাতালানদের জন্য। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে লিগ শিরোপা পুনরুদ্ধারের পথে দারুণ আত্মবিশ্বাস পেল গত মৌসুমে একটিও শিরোপা জিততে না পারা দলটি।
লুইস সুয়ারেজ বাদে এই মৌসুমে দলে ভেড়ানো খেলোয়াড়দের প্রায় সবার ছিলেন ম্যাচের শুরুর একাদশে। জেরেমি ম্যাথিউ, গোলরক্ষকের ভূমিকায় ক্লদিও ব্রাভো, রক্ষণে ইভান র্যাকটিক এবং আক্রমণে মুনির। গুরুত্বপূর্ণ সব পজিশনে নতুন খেলোয়াড়দের নামিয়ে এনরিক বুঝিয়ে দেন বার্সেলোনায় নতুন যুগ প্রবর্তনের ধারণাটা কেবল কাগজে-কলমে নয়, সত্যিই ভাবছেন তিনি।
তবে নতুন খেলোয়াড়দের ভীড়েও সমর্থকদের চোখ ঠিকই খুঁজে নিয়েছে মেসিকে। আর দুর্দান্ত দুটি গোল করে সমর্থকদের সেই আস্থার শতভাগ প্রতিদানই দিয়েছেন এই আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। ম্যাচের শুরুর দিকে এলচের রক্ষণের কাছে বার বার পরাস্ত হওয়া বার্সেলোনা ম্যাচের প্রথম গোলটি পায় ৪২ মিনিটে। বিশ্বকাপের ফাইনালে হারার হতাশা কাটিয়ে প্রথম কোন প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলতে গতকাল মাঠে নেমেছিলেন মেসি। তিনিই বার্সাকে এগিয়ে দেন। কিন্তু মিনিটখানেক পরেই মাসচেরানোর মাঠ থেকে বাইরে চলে যাওয়া বার্সেলোনার জন্য দারুণ এক হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যদিও ১৮ বছর বয়সী মুনির ক্লাবের জার্সি গায়ে নিজের প্রথম ম্যাচেই দারুণ এক গোল করে দলের ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। পরবর্তীতে মেসির দ্বিতীয় গোল বার্সার জয় নিশ্চিত করে।
প্রাক মৌসুম প্রস্তুতির ম্যাচের অংশ হিসেবে গত সোমবার সর্বশেষ ম্যাচে মেক্সিকান ক্লাব লিওর বিপক্ষে দুই গোলের পুরস্কার হিসেবেই মুনীরের সিনিয়র দলে অভিষেক হয়। বিশেষ করে নেইমার এবং লুইস সুয়ারেজের অনুপস্থিতি তাকে এত তাড়াতাড়ি দলে নিতে বাধ্য করেছে। আর ১৮ বছর বয়সী এই তরুণের কাছ থেকেই আসে বার্সেলোনার প্রথম আক্রমণটি। আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার বাড়ানো বলে ২২ মিনিটে তার কোণাকুণি শট বারে লেগে ফেরত আসে। এরপর বার্সার অধিনায়ক হিসেবে গতকাল মাঠে নামা ইনিয়েস্তার একটি শটও প্রতিহত হয় বারে। তবে মেসিকে আটকানো যায়নি। ৪২ মিনিটে এলচের রক্ষণ দুর্বলতার সুযোগে সার্জিও বাসকোয়েটের পাস থেকে মেসি দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বাম পায়ের জোড়ালো শটে বার্সেলোনাকে এগিয়ে দেন। এর মিনিটখানেক পরে গ্যারি রডরিগুয়েজকে বাধা দেবার অপরাধে লাল কার্ড পান মাসচেরানো। সংখ্যার দিক থেকে এলচে এগিয়ে থাকলেও তার থেকে কোন সুবিধা আদায় করতে পারেনি। রাকটিকের পাস থেকে মুনীর দুর্দান্ত দক্ষতায় বিরতির এক মিনিট পরেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। ৬৩ মিনিটে আবারো মেসি তিনজন ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে অসহায় গোলরক্ষক ভিসেন্টে গুয়াটাকে পরাস্ত করতে ভুল করেননি।
দিনের অপর ম্যাচে এইবার রিয়াল সোসিয়াদের বিপক্ষে ১-০ গোলে জয়ী হয়ে প্রথম লা লিগায় খেলতে এসে দারুণ সূচনা করেছে। অপর ম্যাচে গেতাফেকে ৩-১ গোলে সেল্টা ভিগো এবং লেভান্তেকে ২-০ গোলে পরাজিত করেছে ভিয়ারেল। সকার ওয়ে