'সব যুগে যুগে সব কালে টিকা ভাস্বরে শোভে ভালো।'
বাংলা
মো. আতাউর রহমান (সায়েম)
সাবেক শিক্ষক (বাংলা)
সেন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুল, ঢাকা।
হিমালয়ের শীর্ষে বাংলাদেশের পতাকা
প্রদত্ত কবিতাংশটি পড়ে ১,২, ৩, ৪ ও ৫ নম্বর ক্রমিকের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখ (পাঠ্য-বই বহির্ভুত যোগ্যতাভিত্তিক):
দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে যারা দুর্জয়ে করে জয়
তাহাদের পরিচয় লিখে রাখে মহাকাল,
সব যুগে যুগে সব কালে টিকা ভাস্বরে শোভে ভালো।
সব ক্ষয়ক্ষতি খেয়াল খুশিতে পশ্চাতে যায় ফেলে
বন্ধুর পথ একদা তাদের পদতলে ধরে মেলে
আনন্দ শতদল-
সেই তো জীবন, জয়গৌরবে হেসে ওঠে ঝলমল।
১। সঠিক উত্তরটি উত্তরপত্রে লেখ: ১×৫=৫
(i) উপরের কবিতাংশটিতে কোন্ দিকটি ফুটে ওঠেছে?
(ক) সমগ্র বাংলাদেশের ইতিহাসের
(খ) পৃথিবী জয়ের আকাঙ্ক্ষার
(গ) আনন্দ নিয়ে কাজ করার প্রেরণার
(ঘ) দুঃসাহসী অভিযাত্রিকদের সাহসিকতার
উত্তর:
(ঘ) দুঃসাহসী অভিযাত্রিকদের সাহসিকতার
(ii) 'সব যুগে যুগে সব কালে টিকা ভাস্বরে শোভে ভালো।' এই পঙিক্ততে 'ভাল' অর্থ কী?
(ক) কপোল (খ) কপাল
(গ) মস্তিস্ক (ঘ) ভালো
উত্তর: (খ) কপাল
(iii) 'ভাস্বরে' শব্দের 'স্ব' যুক্তবর্ণটি গঠিত হয়েছে-
(ক) স্+ম (খ) ম্+স (গ) স্+ব (ঘ) ব্+স
উত্তর: (গ) স্+ব
(iv) দুঃসাহসী অভিযাত্রিকদের কথা মহাকালে লেখা থাকে কেন?
(ক) সব ক্ষয়ক্ষতিকে উপেক্ষা করার কারণে
(খ) কিছু আবিষ্কার করার কারণে
(গ) আনন্দে মেতে থাকার কারণে
(ঘ) এমনি দুর্গম পথ পাড়ি দিতে ভালো লাগে বলে
উত্তর: (ক) সব ক্ষয়ক্ষতিকে উপেক্ষা করার কারণে
(v) যারা দুর্গম পথ জয় করে, তাদের পথ কেমন থাকে?
(ক) সহজ (খ) কঠিন (গ) বন্ধুর (ঘ) সমতল
উত্তর: (গ) বন্ধুর
২। নিচে কয়েকটি শব্দ ও শব্দার্থ দেওয়া হলো। নিচের বাক্যগুলোর শূন্যস্থানের উপযুক্ত শব্দটি উত্তরপত্রে লেখ: ১×৫=৫
শব্দ শব্দার্থ
দুর্গম যেখানে সহজে গমন করা যায় না
দুর্জয় যা সহজে জয় করা যায় না
মহাকাল বহমান সময়
ভাস্বর উজ্জ্বল
শতদল পদ্মফুল
(ক) হিমালয়ের শীর্ষে উঠতে মুসা ইব্রাহিমকে —— পথ অতিক্রম করতে হয়েছিল। উত্তর: দুর্গম
(খ) সকল মনীষী মানুষের মনে চিরদিন —— হয়ে থাকবেন। উত্তর: ভাস্বর
(গ) নোবেল পুরস্কার পাওয়াটা অনেকটা——। উত্তর: দুর্জয়
(ঘ) —— পানিতে ফোটে। উত্তর: শতদল
(ঙ) যারা সাহস করে কিছু অর্জন করে, তাদের নামই—— লেখা থাকে। উত্তর: মহাকালে
৩। নিচের যুক্তবর্ণগুলো ভেঙ্গে একটি করে শব্দ তৈরি কর এবং তৈরীকৃত শব্দ দিয়ে একটি করে নতুন বাক্য লেখ: ১×৫=৫
র্জ, ক্ষ, শ্চ, ন্ধ, ন্দ
উত্তর: র্জ= র্ (রেফ)+ জ= গর্জন, সিংহ খুব জোরে জোরে গর্জন করে।
ক্ষ= ক্+ষ= দক্ষ, দক্ষ লোকদের কদর বেশি।
শ্চ= শ্+চ= পশ্চাত্, সব ভুল পশ্চাতে ফেলে ভবিষ্যতের জন্য ভালো কাজ কর।
ন্ধ= ন্+ধ= অন্ধ, অন্ধ লোকদেরকে আমাদের বেশি দান করা উচিত।
ন্দ= ন্+দ= আনন্দ, যে শিক্ষায় আনন্দ নেই, সে শিক্ষা প্রকৃত শিক্ষা নয়।
৪। নিচের প্রশ্নগুলো বুঝিয়ে উত্তর লেখ:৩×৫=১৫
(ক) ছেলেবেলায় মুসা ইব্রাহিমের মধ্যে কীভাবে এভারেস্ট জয়ের স্বপ্ন জেগেছিল?
(খ) এভারেস্ট জয় করার জন্য মুসা কী রকম প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিলেন?
(গ) মুসা কতবার অভিযানে বিরতি দিয়েছিলেন এবং কেন?
৫। ধর, তোমার নাম রাজু। তুমি সম্প্রতি গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে রাঙামাটিতে ভ্রমণ করতে গিয়েছিলে। তাই তোমার ভ্রমণের অভিজ্ঞতার কথা সুদূর অস্ট্রেলিয়ায় থাকা প্রবাসী বন্ধু জিমের কাছে একটি পত্র লেখ। ৫
৬। বিরামচিহ্ন বসিয়ে অনুচ্ছেদটি পুনরায় লেখ: ৫
শৈশবে যে স্বপ্ন মুসা এবং অন্যেরা দেখেছিলেন দীর্ঘ দিনের প্রস্তুতি অধ্যবসায় আর আত্মবিশ্বাসের ওপর ভর করে তাঁরা তাতে সফলতা অর্জন করলেন বুঝিয়ে দিলেন বাঙালি এক সাহসী জাতি বীরের জাতি অজানাকে সে জয় করতে পারে
উত্তর: শৈশবে যে স্বপ্ন মুসা এবং অন্যেরা দেখেছিলেন, দীর্ঘ দিনের প্রস্তুতি, অধ্যবসায় আর আত্মবিশ্বাসের ওপর ভর করে তাঁরা তাতে সফলতা অর্জন করলেন। বুঝিয়ে দিলেন, বাঙালি এক সাহসী জাতি, বীরের জাতি, অজানাকে সে জয় করতে পারে।
০০০
আমাদের এই দেশ/ স্বদেশ/ বাংলাদেশ
রচনা
কঙ্কন সরকার, তত্ত্বাবধায়ক
শিশুবান্ধব বিদ্যানিকেতন, সুন্দর গঞ্জ, গাইবান্ধাা
সূচনা : "এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি
ও সে, সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি।"
সত্যিই আমাদের দেশটি সুন্দর। অবারিত মাঠ, আঁকা-বাঁকা নদ-নদী, খাল-বিল, হাওড়-বাওড়, ধূসর-সবুজে পাহাড় আর ষড়ঋতুর রূপ বৈচিত্র্য নিয়েই স্বপ্নময় আমাদের এই দেশ।
স্বাধীনতা : দীর্ঘ দিনের ত্যাগের সম্মিলনে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দীর্ঘ ন'মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করে এ জাতি চুড়ান্ত স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনে।
অবস্থান ও আয়তন : দক্ষিণ এশিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে মায়ানমার ছাড়া বাকীদিকে ভারত অবস্থিত। আয়তন ১ লক্ষ ৪৭ হাজার ৫ শত ৭০ বর্গ কিলোমিটার।
ভাষা ও ধর্ম :মাতৃভাষা এবং প্রধান ভাষা বাংলা ছাড়াও ইংরেজি, উর্দু এবং ক্ষুদ্রজাতি গোষ্ঠীর কিছু কিছু ভাষা প্রচলিত। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান ছাড়াও হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ধর্মের লোক বাস করে এখানে। তারা সবাই সামপ্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ।
রাজধানী ও অন্যান্য শহর : রাজধানী ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানী বলা হয়। এছাড়া ৭টি বিভাগীয় ও ৬৪টি জেলা শহর আছে। এছাড়াও উপজেলা ও পৌরসভা শহর রয়েছে।
গ্রাম : বাংলাদেশ গ্রাম প্রধান দেশ। গ্রামগুলো যেন শান্তির নীড় ছায়া সুনিবিড়।
লোকসংখ্যা ও পেশা : প্রায় ১৬ কোটি লোক বাস করে এ দেশে। প্রধান পেশা কৃষি ছাড়াও ব্যবসায়ী, চাকুরিজীবী, মত্স্যজীবীসহ নানা পেশার মানুষ রয়েছে এদেশে।
সংস্কৃতি : হাজার বছরের লৌকিক সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ আমাদের এই জনপদ। ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালী, জারি, সারি, মুর্শিদি এদেশের সমৃদ্ধ গান। বহু কবি, লেখক, শিল্পী সমৃদ্ধ করেছেন এদেশের সংস্কৃতি ও সাহিত্য সমাজকে।
খেলা : হা-ডু-ডু জাতীয় খেলা। এছাড়াও দেশীয় অনেক খেলা রয়েছে। ফুটবল, ক্রিকেট জনপ্রিয় খেলা।
কৃষি : প্রধান খাদ্য শস্য ধান ছাড়াও গম, আলু, ভুট্টা উত্পাদিত হয়। অর্থকরী ফসলের মধ্যে পাট, চা, আঁঁখ প্রধান।
শিল্প ও উন্নয়ন : পোশাক শিল্প প্রধান। তবে ছোট বড় নানা ধরনের শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নে কৃষিই প্রধান ভূমিকা রাখে। বিদেশে কর্মরতদেরও এদেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রয়েছে।
শিক্ষা ও স্বাক্ষরতা: শিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দু্রতএগিয়ে যাচ্ছে। এ এগিয়ে যাওয়া এমন যে যেন শিক্ষা ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটছে। স্বাক্ষরতার হার উল্লেখ করার মত। নিরক্ষরতা দূরীকরণে কার্যক্রম অব্যাহত।
কর্মসংস্থান ও নারী: সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। নারী শিক্ষার প্রসার ও নারীর ক্ষমতায়ন ব্যাপক হারে বেড়েছে।
উপসংহার : আমার জন্মভূমি প্রিয় এ বাংলাদেশ আমার গর্ব। এদেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করা সকলের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য।