টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার মির্জাবাড়ী ইউনিয়নের আমবাড়িয়া গ্রামে গতকাল সোমবার অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত ১১ জনকে সনাক্ত করা হয়েছে। অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত গরু জবাই করে মাংস বিতরণ ও তা রান্না করে খেয়ে তারা আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানান মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাফিজুর রহমান।
ওই গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান জানান, গত ১৪ আগস্ট গ্রামের কয়েকজন মিলে একটি রোগাক্রান্ত গরু জবাই করে মাংস নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করে নেন। মাংস খাওয়ার পরদিন থেকে অনেকের হাত পায়ে চুলকানি শুরু হয়, সৃষ্টি হয় ক্ষতের। এদের মধ্যে আব্দুস ছাত্তারের ছেলে রহমত আলী (৫৫) হাত পায়ে ঘা নিয়ে ২৪ আগস্ট ধনবাড়ী উপজেলা সদরের একটি ক্লিনিকে চিকিত্সা নিতে গেলে জানা যায় তিনি অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত হয়েছেন। পরে আনোয়ার, আজাদ, রাজ্জাক ও হাসমত আলী নামে চারজন গত রবিবার বিকালে মধুপুর উপজেলা হাসপাতালে চিকিত্সা নিতে যান। খবর পেয়ে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ মধুপুর হাসপাতালের তিনজন ডাক্তারকে নিয়ে গতকাল সকালে আমবাড়িয়া গ্রামে যান। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং রোগীদের সঙ্গে কথা বলে এ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন। আক্রান্ত অন্যরা হলেন তোতা মিয়া, রহমত আলী, সালমা, মাহফুজা, সাজেদা ও মাসুদ।
ডাক্তার আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে একটি মেডিক্যাল টিম গ্রামে কাজ করছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাফিজুর রহমান আরো জানান, যারা ওই মাংস ব্যবস্থাপনায় ছিলেন তাদের মধ্যে ৭৯ জনের তালিকা করে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে্। ধারণা করা হচ্ছে, এরাও অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত হতে পারেন।
এদিকে গতকাল দুপুরে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোজাম্মেল হক সিদ্দিকী ঢাকা বিভাগীয় উপ-পরিচালক ডা. যতীন্দ্র নাথ দাশ, টাঙ্গাইল জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বিনয় কুমার নাগকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। অ্যানথ্রাক্স সচেতনতায় এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে।
মধুপুর উপজেলা পশু সম্পদ কর্মকর্তা ডা. হযরত আলী জানিয়েছেন— এলাকার সহস্রাধিক গবাদি পশুকে ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে।