বাংলাদেশের প্রাচীন জনগোষ্ঠী আদিবাসী সম্প্রদায়। দেশের প্রতিটি জেলায় আদিবাসীরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। নাটোরে আছে ২৩টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়। তাদের রয়েছে নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি, ধর্ম ও অন্যান্য আচার-অনুষ্ঠান। নাটোরের ৬টি উপজেলায় বসবাসরত মোট আদিবাসী প্রায় ৪৫ হাজার। সম্প্রদায়গুলো হচ্ছে ওঁরাও, পাহান, পাহাড়ী, সিং, মাহাতো, মুন্ডারী, সাঁওতাল, লোহার, তেলী, রায়, চৌহান, মাল পাহাড়ী, বাগদি, রামদাস, রবিদাস,মল্লিক, গারো, হাড়ী, তুড়ি, ভান্ডারী, ঋষি, কোনাই, মালো প্রভৃতি। আদিবাসীরা প্রকৃতি পূজারী। প্রকৃতিকে কেন্দ করে তারা বিভিন্ন উত্সব পালন করে থাকে। এসব উত্সবের সাথে জড়িয়ে থাকে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস, শুভ-অশুভ বোধ। তারা সনাতন ধর্মের অনুসারী। এছাড়াও অল্প কিছুসংখ্যক খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী রয়েছে। আদিবাসীদের নিজস্ব কিছু ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক আচার-অনুষ্ঠান আছে। প্রকৃতির সাথে মিল রেখে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে। বিশেষ কিছু কাজের প্রারম্ভে উত্সব করে থাকে। আবার জন্ম-মৃত্যু, বিবাহ বা পরিবারের শান্তির উদ্দেশ্যেও তারা কিছু ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করে। এসব অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ধান বান গাড়ী, কারাম উত্সব, সহরাই উত্সব, পুংটাডী, ডান্ডা-কাটনা, ফাগুয়া প্রভৃতি।নাটোরের আদিবাসী সম্প্রদায় আছে নানা সমস্যা-সংকটে। লেখাপড়ায় এখনও অনেক পিছিয়ে। জীবিকার্জনের জন্য ভালো কিছু করার যোগ্যতা তাদের নেই। নানা কুসংস্কার ঘিরে রেখেছে তাদের। আদিবাসীদের জমি বিক্রি করতে জেলা প্রশাসকের অনুমতি নেয়ার বিধান থাকলেও অনুমতি ছাড়াই অধিকাংশ জমি বিক্রি হয়ে গেছে। এব্যাপারে অভিযোগ করেও কোন ফল হয় না।